×

বিনোদন

এ তো মরার গান করছি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:১২ পিএম

এ তো মরার গান করছি
‘না হয় যাচ্ছি ফিরে সব পাখি ফেরে নিড়ে ফিরবো বলেই একদিন নির্জনতার কাছে যাচ্ছি দিয়ে শোধ তোমাদের সবটুকু ঋণ’
আইয়ুব বাচ্চুর সুরে এটাই ছিল লতিফুল ইসলাম শিবলীর লেখা শেষ গান। গানটি প্রকাশিতও হয়নি এখনো। আর এই গান করতে গিয়েই দুজনে বলছিলেন, ‘এ তো মরার গান করছি’। হাসতে হাসতে বলা সেই কথা যে এমন নিষ্ঠুর হয়ে বাস্তবে রূপ নেবে সেটা বোধহয় দুজনের কেউ ভাবেননি। যদি ভাবতেন তাহলে হয়তো এমন কথার এই গান হতো না। আর সেটাই বারবার বলছিলেন গানটির গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলী। লতিফুল ইসলাম শিবলী আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া অনেক গান লিখেছেন, যেগুলো এখনো ফিরছে মানুষের মুখে মুখে। স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বলেন, সন্ধ্যার পর একদিন তার মগবাজারের বাসার ছাদে বসেছিলাম। উনি গিটারে এমনিতেই টুংটাং করছিলেন। সেই শব্দ শুনে তাকে বললাম, বস- আবার বাজানতো। আবার বাজান, আবার আবার-তারপরই তৈরি হয় ‘সুখের এ পৃথিবী, সুখের এ অভিনয়-যতোই আড়ালে রাখো, আসলে কেউ সুখী নয়’। তারপরতো এই গান ইতিহাস বলেন লতিফুল ইসলাম শিবলী। শিবলী বলেন, এভাবেই তৈরি হয়েছে আমাদের অসংখ্য গান। মগবাজারের বাসায় সন্ধ্যার সময় গিটার আর হ্যাজাক লাইট নিয়ে ছাদে উঠতেন, যেন হ্যাজাকের আলোতে আমি লিখতে পারি। এমন অনেক বিকাল-অনেক সন্ধ্যা আমাদের কেটেছে। শিবলী বলেন, আমরা প্রেম শেয়ার করতাম, কষ্ট-দুঃখ সব শেয়ার করতাম। অনেক রাত কেটেছে একসঙ্গে। ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’ এমনি এমনি তৈরি হয়নি, ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি-তাই তোমার কাছে ছুটে আসি’-এগুলো এমনি এমনি তৈরি হয়নি। বিষয়টা এমন না যে, আমি গান লিখে দিলাম, উনি গেয়ে ফেললেন। এগুলো ছিল আমাদের প্রতিদিনের আড্ডা, সবকিছু শেয়ার করার ফলশ্রুতি। বাচ্চু ভাইর সাথে প্রথম পরিচয় ছিল অন্য আরেকটি ব্যান্ডের কাজে। কষ্ট পেতে ভালোবাসি, কষ্ট কাকে বলে, কী যে কষ্ট আমার কষ্ট নিয়েই সব গান ছিল। তারপর নীল বেদনা, হাসতে দেখো-গাইতে দেখো, কেউ সুখী নয়, মানুষ বড় একা, রাজকুমারী, আহা জীবনসহ আরো অনেক গান আছে বাচ্চু ভাইর গাওয়া আর আমার লেখা। তিনি নিজের জন্য গেয়েছেন, মানুষের জন্যও করে দিয়েছেন। তার কাছে অনেক গান দেয়া থাকত, তিনি অনেকের জন্য সুর করে সেগুলো দিতেন। প্রায় একটা দশক আমরা একসঙ্গে থেকেছি, একসঙ্গে খেয়েছি, আড্ডা দিয়েছি। সেসময়ই দেশের আইকনিক অ্যালবামগুলো তৈরি হয়েছে। শেষের সময়ে একটা মান অভিমান চলছিল। দেখা হলে সব ঠিক হয়ে যেত, কিন্তু সে সুযোগ আর পেলাম না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App