×

পুরনো খবর

নৌকার মনোনয়ন চান তিন নেতা বিএনপিতে পরিবর্তনের আভাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৩৭ এএম

নৌকার মনোনয়ন চান তিন নেতা বিএনপিতে পরিবর্তনের আভাস
একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নারায়ণগঞ্জ সীমান্ত ঘেঁষা ঢাকার শেষ সীমানায় যাত্রাবাড়ী, ডেমরা ও কদমতলী থানার আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনে ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনী আমেজ। শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা এবং বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নির্বাচনী মাঠে নামবেন- এলাকার সাধারণ মানুষ এমনটাই মনে করেন। তবে কেউ কেউ আওয়ামী লীগে আর পুরনো নয়, নতুন মুখ দেখতে চান। সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগ নেতাকর্মীর পছন্দ যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্না ও ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাসদ, এলডিপিসহ বিভিন্ন দলের প্রায় ১ ডজন আগ্রহী ব্যক্তি নির্বাচনে লড়বে। নিজেদের মতো করে তারা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণাও। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ডেমরা থানা, যাত্রাবাড়ী থানার ৪৮, ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ড, মাতুয়াইল, সারুলিয়া ও দনিয়া ইউনিয়ন এবং কদমতলী থানার একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে হাবিবুর রহমান মোল্লা এ আসনে বিজয়ী হন। এর আগে ১৯৯৬ সালে নবম ও ২০০৮ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনেও বিজয়ী হয়েছিলেন হাবিবুর রহমান মোল্লা। আর পঞ্চম ও ৬ষ্ঠ এবং অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমেদ। আসন্ন নির্বাচনেও লড়াইয়ে এই দুই নেতাই আছেন আলোচনার শীর্ষে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা বার্ধক্যজনিত কারণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন আর আগের মতো সক্রিয় নেই। তার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল বাবার রাজনীতির উত্তরাধিকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সজল বর্তমানে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা হাবিবুর রহমান মোল্লাকে অবসরে পাঠাতে চাইলে ছেলে সজল দলের মনোনয়ন চাইবেন। এ আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশীদ মুন্নাও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। তার ব্যানার-পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে ঢাকা-৫ আসনের প্রতিটি এলাকা। হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি কখনো আমার দায়িত্বে অবহেলা করিনি। এলাকার যথেষ্ট উন্নয়ন করেছি। আমি এখনো নিজেকে শারীরিকভাবে সক্ষম বলে মনে করি। আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা ও প্রস্তুতি দুটোই আছে আমার। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে দলের সিদ্ধান্তই বড় কথা। যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না বলেন, আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রায় দুই যুগ ধরে থানা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। দলের নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে আছি। ফলে তারা আমাকে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার দল করি। তিনি যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই কাজ করব। তবে দলের প্রতি একটা বিষয়ে দাবি থাকবে, তৃণমূলের মতামত অনুযায়ী যেন মনোনয়ন দেয়া হয়। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল বলেন, যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের চাওয়া হচ্ছে আমার বাবা আবার নির্বাচন করুক। তবে নেত্রী (শেখ হাসিনা) যদি মনে করেন আমার বাবাকে অবসর দেবেন তবে আমি মনোনয়ন চাইব। এদিকে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ আসনে এবার আওয়ামী লীগে প্রার্থিতার পরিবর্তন চান তারা। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা হারুনর রশীদ মুন্নাকেই পছন্দ অনেকের। তবে কেউ কেউ বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার উত্তরাধিকার হিসেবে তার ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজলকে বেছে নেয়ার কথা বলছেন। শেষ পর্যন্ত কে হবে এ আসনের নৌকার মাঝি, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ধানের শীষের প্রতীক নিয়ে লড়তে চান বিএনপির বেশ কয়েক জন নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেনÑ সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি নবিউল্লাহ নবী। সালাহউদ্দিন আহমেদ আগামী নির্বাচনে লড়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার পাশাপাশি মাঠের রাজনীতিতে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে দলে আছেন তিনি। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ঢাকায় মহানগর বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি সক্রিয় ছিলেন খালেদা জিয়ার পক্ষে। অভিযোগ আছে, ২০০৩ সালে দলের কিছু নেতার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে সাময়িকভাবে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছিলেন তিনি। এর পরও ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। এ ছাড়া এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মাঠে লড়াইয়ের জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মীর আব্দুস সবুর আসুদ। মনোনয়ন পেতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন জাসদের শহীদুল ইসলামও। ইতোমধ্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু দলীয় প্রার্থী হিসেবে শহীদুল ইসলামকে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনিও মহাজোট থেকে মনোনয়ন পেতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App