×

অর্থনীতি

ট্যাক্সেস বারে ভুয়া সদস্যের ছড়াছড়ি, তদন্ত কমিটি গঠন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০২:৪৮ পিএম

ট্যাক্সেস বারে ভুয়া সদস্যের ছড়াছড়ি, তদন্ত কমিটি গঠন
ট্যাক্সেস বারে ভুয়া সদস্যের ছড়াছড়ি বাড়ছে। এতে একদিকে যেমন রাজস্ব আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে অন্যদিকে প্রতারিত হচ্ছেন করদাতারা। ভুয়া সদস্যের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছেন সাধারণ কর আইনজীবীরা। ইতোমধ্যে ৫ ভুয়া কর আইনজীবীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে ভুয়া সদস্যের অন্তর্ভুক্তি ঠেকানো ও ভুয়া সদস্য শনাক্ত করতে সাব কমিটি করেছে ঢাকা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশন। ট্যাক্সেস বার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, বেশ কয়েক বছর ধরে যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেই কর আইনজীবী পরিচয়ে ট্যাক্সেস বারের সনদ নিয়ে করদাতার মনোনীত ব্যক্তি হিসেবে কাজ করছেন অনেকে। সম্প্রতি সময়ে এসব ভুয়া সনদধারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেন দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করে আসা একদল তরুণ আইনজীবী। তারা এসব ভুয়া কর আইনজীবীদের মুখোশ উন্মোচন করেন। এতেই নড়ে চড়ে বসে বর্তমান কমিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জন ভুয়া আইনজীবীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিটি। গত ১০ বছরে আরো যারা এভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ট্যাক্সেস বারের সদস্য হয়েছেন তাদের শনাক্ত করতে সাবেক সভাপতি নেছার উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই সময়ে যারা যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করে সদস্য হয়েছেন তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাধারণ আইনজীবীরাও ভুয়া সদস্যদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে ঢাকা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান দুলাল ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ছাড়া গত ১০ বছরে যারা এমন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বারের সদস্য হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করতে সাবেক সভাপতির নেতৃত্বে একটি সাব কমিটি গঠন করেছি। অভিযোগ রয়েছে, ট্যাক্সেস বারের দাপুটে নেতাদের ছত্রছায়ায় শুধুমাত্র এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেই বারের সদস্য হয়েছেন। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে গত ১০ বছরের সদস্যের তালিকা ঘাটলে হাজারের কাছাকাছি ভুয়া সদস্য পাওয়া যেতে পারে। এসব ভুয়া সদস্যরা দিব্বি কর আইনজীবী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। এরা কর মামলা লড়ার চাইতে নির্দিষ্ট কর অঞ্চলের সঙ্গে সমঝোতায় পটু। এক ধরনের দালালির মাধ্যমে চলছে এসব ভুয়া কর আইনজীবীদের দৌরাত্ম্য। এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আর করদাতারা এসব ভুয়া সদস্যের কাছে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। রাজস্ব খাতের এই জটিল প্রক্রিয়ায় এসব ভুয়া আইনজীবীদের নিয়ে যোগ্য কর আইনজীবীরা শঙ্কায় রয়েছেন। এদের কারণে নানা জায়গায় প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ১৭৪ ধারায় যারা করদাতার মনোনীত প্রতিনিধি হতে হলে, তাকে আইনজীবী হতে হবে বা কোনো চাটার্ড একাউন্টেন্ট অথবা কস্ট ম্যানেজমেন্ট অথবা বোর্ড থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হতে হবে নতুবা রেজিস্টার্ট ট্যাক্সেস বারের সদস্য হতে হবে। ট্যাক্সেস বারের সদস্য হতে একজন সিনিয়র কর আইনজীবীর সঙ্গে প্র্যাকটিস করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এই লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আইটিপি পরীক্ষার নিয়ে থাকে। এই পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হন তারা ট্যাক্সেস বারের সদস্য হন। এসব বিষয়ে এনবিআরের আইটিপি নিয়োগ কমিটির চেয়ারম্যান ও এনবিআরের কর প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক সদস্য ভোরের কাগজকে বলেন, এনবিআর শুধু স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আইটিপি নিয়োগ দিয়ে থাকে। আর ট্যাক্সেস বারের সদস্য কারা হবে তা নির্ধারণ করবে বার কমিটি। এ বিষয়টি এনবিআরের এখতিয়ার বহিভর্‚ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App