×

অর্থনীতি

উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সিলগালা করে স্বর্ণ রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:৩৬ পিএম

উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সিলগালা  করে স্বর্ণ রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক
ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্য ব্যাংকে রাখা ধাতব বস্তু বিশেষ করে স্বর্ণের মানগত দায়ভার নেবে না বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য স্বর্ণ রাখার নতুন নীতিমালার সুপারিশ করেছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি। সুপারিশ অনুযায়ী, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর, পুলিশ বা সরকারের অন্যকোনো এজেন্সি স্বর্ণ বা কোনো মূল্যবান ধাতু আটক করার পর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বক্সে সিলগালা করে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং স্বর্ণের মালিকপক্ষ বা হেফাজতকারী উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সিলগালা বা কস্টেপ মেরে স্বর্ণ রাখারও নিয়ম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। গত জুলাই মাসে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে ভুতুড়ে কাণ্ড’ শীর্ষক এক সংবাদে গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৩ আগস্ট কাস্টম হাউসের গুদাম কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ গোলাকার কালো প্রলেপযুক্ত একটি সোনার চাকতি এবং একটি কালো প্রলেপযুক্ত সোনার রিং বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ওই চাকতি এবং আংটি যথাযথ ব্যক্তি দিয়ে পরীক্ষা করে ৮০ শতাংশ (১৯ দশমিক ২ ক্যারেট) বিশুদ্ধ সোনা হিসেবে গ্রহণ করে প্রত্যয়নপত্র দেয়। কিন্তু দুই বছর পর পরিদর্শন দল ওই চাকতি ও আংটি পরীক্ষা করে তাতে ৪৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ (১১ দশমিক ২ ক্যারেট) সোনা পায়। আংটিতে পায় ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ সোনা (৩ দশমিক ৬৩ ক্যারেট)। প্রতিবেদন বলছে, ভল্টে থাকা সোনার চাকতি এবং আংটি পরীক্ষার পর দেখা গেল এগুলো সোনার নয়, অন্য ধাতুর মিশ্রণে তৈরি। এতে সরকারের ১ কোটি ১১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৬ টাকা ৫০ পয়সা ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার পর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই কমিটি তদন্ত চ‚ড়ান্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে স্বর্ণ রাখার নতুন নিয়ম প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর, পুলিশ বা সরকারের অন্যকোনো এজেন্সি স্বর্ণ বা কোনো মূল্যবান ধাতু আটক করার পর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট বক্সে করে সিলগালা করে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা রাখবে। এবং স্বর্ণ বা মূলবান ধাতু সম্পর্কিত বিরোধ বা মামলা সীমাংসা হওয়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একই ভল্টে থাকবে। মীমাংসা হওয়ার পর আবার উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে ওই স্বর্ণ নিলাম, ফেরত বা বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রয় করে রিজার্ভ হিসাবে সংরক্ষণ করবে। সূত্র জানায়, নীতিমালা অনুযায়ী স্বর্ণ জমাদানকারী প্রতিষ্ঠান স্বর্ণের নিরাপত্তায় সিলগালা করতে পারবে। কস্টেপ দিয়ে আটকে দেয়া বা দস্তখত দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো রাখতে পারবে। এ ব্যাপারে ব্যাংক কোনো দায় দায়িত্ব নেবে না। এর ভিতরে কি আছে তাও ব্যাংক দেখতেও চাইবে না। বাংলাদেশে ব্যাংক তাদের কাছ থেকে সিলগালাকৃত একটি প্যাকেট বুঝে পেয়েছে বলে জানিয়ে দেবে। প্রচলিত নিয়মে সরকারের কোনো এজেন্সি স্বর্ণ বা মূল্যবান ধাতু আটক করার পর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে সংরক্ষণ করে। ভল্টে জমা রাখার সময় পণ্যের তালিকা তৈরি করে, এমনকি স্বর্ণ মান পরীক্ষা না করে মানের উল্লেখ করে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিয়ে যায় ওই এজেন্সিগুলো। পরে ওই এজেন্সি ভিন্ন রকম দাবি করলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিপদে পড়ে। সম্প্রতি শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত স্বর্ণের মানে অবনতির অভিযোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে এ সুপারিশ করেছে কমিটি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App