×

পুরনো খবর

আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ,দখলে মরিয়া বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:০৪ পিএম

আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ,দখলে মরিয়া বিএনপি
বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-১ আসন। স্বাধীনতার পর থেকে বেশির ভাগ সময় এ আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটি। এ আসনে বিগত দুটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন করে বিজয়ী হন। সপ্তম থেকে দশম সংসদ নির্বাচনে টানা চার মেয়াদে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন। বর্তমানে এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলমুক্ত করতে মরিয়া বিএনপি। দলটি মনে করে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আসনটি তাদের দখলে আসবে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের এম এ খায়ের, ১৯৭৯ সালে বিএনপির সৈয়দ মোজাহিদুর রহমান, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের এম এ খায়ের, ১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। পরে তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে তার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দীন উপনির্বাচনে এমপি হয়ে বাগেরহাটের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০১ সালে শেখ হেলাল উদ্দীন দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন। চিতলমারীকে আওয়ামী লীগের ভোট ব্যাংক বলা হয়। এ আসনে বরাবরই জয় নির্ভর করে চিতলমারীর সংখ্যালঘু ভোটের ওপর। এখানকার সিংহভাগ ভোটই যায় আওয়ামী লীগের ঘরে। তাই বিএনপি এবার চিতলমারী উপজেলার সংখ্যালঘু ভোটারদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেবে বলে জানান নেতাকর্মীরা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে শেখ হেলাল বিজয়ী হন।সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও তিনি এমপি নির্বাচিত হন। আগামী নির্বাচনেও এ আসনে শেখ হেলাল একক প্রার্থী। তার আমলে নির্বাচনী এলাকার তিনটি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হওয়ায় তিনি আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন নেতাকর্মী ও ভোটারদের কাছে। বাগেরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও মোল্লাহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুল আলম সানা বলেন, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপির নেতৃত্বে মোল্লাহাটসহ আমাদের তিনটি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বেশ কটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। শুধু বাগেরহাট-১ আসনই নয়, জেলাজুড়েই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শেখ হেলাল উদ্দিনের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। এ আসনে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে কৌত‚হল রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এ আসনে নির্বাচন করে থাকেন। ২০০৮ সালে আমি বিএনপি প্রার্থী হিসেবে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে ভোট পেয়েছি ৭০ হাজারের কাছাকাছি। এবার মনোনয়ন পেলে এবং নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হলে জয়লাভের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এ আসনে বিএনপির অপর মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন- চিতলমারীর বাসিন্দা কেন্দ্রীয় জাসাস নেতা ও জেলা বিএনপির সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ স্বপন, মোল্লাহাটের সন্তান বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি প্রকৌশলী এডভোকেট মাসুদ রানা। এর মধ্যে প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে গণসংযোগসহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের পাশে থেকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে বেশ গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন। রবিউল আলম বলেন, দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দলের কর্মী হিসেবে কাজ করছি। এখানে আমার জন্মস্থান হলেও আমি রাজনীতি করি ঢাকা মহনগরে। বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির পর এখন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ধানমন্ডি থানা বিএনপির সভাপতি। এ আসনের বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের যে কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা একমাত্র রবিউল আলমের রয়েছে। মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ৮টি মামলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার গণমানুষের জন্য কাজ করেছি। চিতলমারীসহ তিন উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে আমার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের পূজাসহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছি। আওয়ামী লীগ এ আসনে হিন্দুদের ভোটে জিতে থাকে। আমি মনোনয়ন পেলে তারাও আমাকে ভোট দেবে। আমি নিশ্চয়ই জয়ী হব। জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানের নামও প্রার্থীর তালিকায় রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App