×

মুক্তচিন্তা

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:১১ পিএম

জঙ্গি দমন অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকা অবস্থায় নব্য জেএমবি বা অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর গোপন তৎপরতা কীভাবে ও কিসের জোরে চলতে পারছে, তা গভীরভাবে জানার চেষ্টা করা দরকার। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন কখনোই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তাদের জনবল সংকটও কখনো স্থায়ী হয়নি। আমরা মনে করি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হলে এদের তৎপরতাও কমে যাবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাঠোর অবস্থানের মধ্যেও জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গিরা নানাভাবে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পরপর নরসিংদীতে দুটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম (সিটিটিসি) ইউনিট। একটি মাধবদী উপজেলার শেখেরচর ভগীরথপুর চেয়ারম্যান মার্কেট এলাকায়। অন্যটি মাধবদী ছোট গদাইরচর গাংপাড় এলাকায়। গত মঙ্গলবার বিকেলে ভগীরথপুরের অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। অপারেশন ‘গার্ডিয়ান নট’ নামে এ অভিযানে নারীসহ দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল দুপুরে ছোট গদাইরচর গাংপাড় এলাকার একটি বাড়ি থেকে দুই নারী জঙ্গি আত্মসমর্পণ করার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় জঙ্গিদের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভগীরথপুর এলাকায় অভিযানের পর পুলিশ জানায়, বাড়িটিতে দুজনের লাশ পাওয়া গেছে। এদের একজন পুরুষ ও একজন নারী। তারা চারটি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দুজনেরই বয়স ত্রিশের কোঠায়। তারা নব্য জেএমবির সদস্য। পাঁচ তলা বাড়ির পঞ্চম তলার ওই ফ্ল্যাটটি ৩ অক্টোবর ভাড়া নিয়েছিল তারা। ছোট গদাইরচর গাংপাড় এলাকার জঙ্গিদের সঙ্গে এখানকার জঙ্গিদের যোগসাজশ রয়েছে বলে পুলিশ মনে করছে। পুলিশের গোয়েন্দা তথ্য মতে, দুর্গাপূজা ও সামনের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে জঙ্গিরা বড় ধরনের নাশকতার জন্য সংগঠিত হচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে আস্তানা দুটি চিহ্নিত হওয়ায় ঝুঁকিটা বড় করে দেখা হচ্ছে। এর আগে ৫ অক্টোবর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দুই পুরুষ জঙ্গির ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব। এই আস্তানায় জঙ্গি সদস্যরা চট্টগ্রাম আদালতে হামলাসহ বিভিন্ন স্থানে নাশকতার চক্রান্ত করছিল। তবে আশার কথা, জঙ্গিদের অঘটন পরিকল্পনা আগেই নস্যাৎ করা যাচ্ছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বড় সাফল্য। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। বলা যায় দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগাম তথ্য নিয়ে বেশকিছু জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে। এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। জঙ্গি ধরপাকড়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে হবে নতুন করে জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়ার ধারাও। পাশাপাশি জঙ্গি দমন অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকা অবস্থায় নব্য জেএমবি বা অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর গোপন তৎপরতা কীভাবে ও কিসের জোরে চলতে পারছে, তা গভীরভাবে জানার চেষ্টা করা দরকার। জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন কখনোই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তাদের জনবল সংকটও কখনো স্থায়ী হয়নি। আমরা মনে করি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হলে এদের তৎপরতাও কমে যাবে। জঙ্গিদের যে অর্থ তা খুব একটা দেশের বাইরে থেকে আসে না। অভ্যন্তরীণ লেনদেনের মাধ্যমেই জঙ্গিদের হাতে অর্থ যায়। এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App