×

জাতীয়

নতুন কাপড় পেয়ে আনন্দিত সবাই, মণ্ডপে অধিষ্ঠিত দুর্গা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৮, ১২:০৩ পিএম

নতুন কাপড় পেয়ে আনন্দিত সবাই, মণ্ডপে অধিষ্ঠিত দুর্গা
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর আর কখনো এতটা খুশি হয়নি কুতুপালংয়ের হিন্দু রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা। গতকাল সোমবার ছিল তাদের ক্যাম্পজীবনের শ্রেষ্ঠ দিন। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে গতকাল ওই ক্যাম্পের বাসিন্দারা পেয়েছেন নতুন জামাকাপড়। শুধু তাই নয়, ক্যাম্পে নির্মিত মণ্ডপে সপরিবারে অধিষ্ঠিত হয়েছেন দেবী দুর্গাও। ফবিতা, শর্মিলা, প্রমিলা, ফুলেশ্বরী, রেনুবালার বয়স ৫ থেকে ১১ বছর। পূজায় নতুন জামা পেয়ে ভীষণ খুশি ওরা। ফুলেশ্বরী, রেনুবালা, শর্মিলার তো নতুন জামা পরার তরও সইছিল না। কোনো রকমে স্নান শেষে ভেজা শরীরেই জামা গায়ে জড়িয়ে নিল ফুলেশ্বরী। জামার মাপ বড় হওয়ায় কারো আবার কিছুটা মনোকষ্ট আছে। তবে নতুন জামার সুগন্ধে সেই কষ্টটাও দূর হয়ে গেছে। অভাবের সংসারে পূজার সময় সন্তানদের নতুন জামা দিতে পারেননি মালতি রুদ্র। কিন্তু গতকাল স্বামী, দুই ছেলেমেয়ে ও নিজে নতুন কাপড় পেয়ে খুশিতে আত্মহারা মালতি। তার মতোই নতুন শাড়ি পেয়েছেন সাকিতা বালা রুদ্র, বকুল বালা রুদ্র, বানু বালা শীল, রুপা রুদ্র। ক্যাম্পের মাঝি (প্রধান) সুমন্ত রুদ্র জানান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ এবং শক্তি কক্সবাজরের আয়োজনে গতকাল ওই ক্যাম্পের বাসিন্দাদের মাঝে নতুন কাপড় বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রত্যেক নারী দুটি করে শাড়ি এবং পুরুষরা একটি করে লুঙ্গি পেয়েছেন। আর ছেলেশিশুদের শার্ট-প্যান্ট এবং মেয়েশিশুদের নতুন ফ্রক-প্যান্ট দেয়া হয়েছে। পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা শ্যামল কুমার পণ্ডিত, নিতাই প্রসাদ ঘোষ, দীলিপ কুমার মজুমদার, কক্সবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রঞ্জিত দাস ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, উখিয়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন শর্মা রনি ও সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র দাশ, রাজা পালং ইউনিয়নের পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ধন ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক সজল কান্তি ধর প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মণ্ডপে চারপাশ কাপড় দিয়ে ঘিরে রেখে চলছে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ। ক্যাম্পের শিশুরা দৌড়ে দৌড়ে সেখানেই গিয়ে জটলা পাকাচ্ছিল। বিদ্যুতের তার, দা, কাঁচি, পেরেক থাকায় সেখানে শিশুদের প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু তাতে কি শিশু মনের কৌত‚হল দমানো যায়? কাপড়ের ফাঁক ও মাটিতে শুয়ে নিচ দিয়ে উঁকি মেরে প্রতিমা সজ্জার কাজ দেখার চেষ্টা করছিল ওরা। কেউ একটু জোরে ডাকলেই হাসতে হাসতে দিচ্ছিল ভৌঁ দৌড়। ক্যাম্পের প্রতিমা নির্মাণ করেছেন মিঠুন দাস। গতকাল বিকেলে মণ্ডপে প্রতিমা তোলার আগে চলছিল সাজসজ্জার কাজ। তিনি জানান, প্রায় ১৬ দিনের পরিশ্রমে তিনি এই প্রতিমা নির্মাণ করেছেন। ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এ বছর এই ক্যাম্পের প্রতিমাসহ মোট ১৩টি প্রতিমা তৈরি করেছেন তিনি। স্বপন শর্মা রনি ও রবীন্দ্র দাশ জানান, ক্যাম্পে ১০১ পরিবারের মধ্যে কাপড় বিতরণ করা হয়েছে। আজ বেলা ৩টায় কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মণ্ডপে পরিদর্শনে আসবেন। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। সেদিন বিজয়া দশমী উপলক্ষে ক্যাম্পের সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App