×

বিনোদন

পূজায় জয়ার দুই ছবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:৩০ পিএম

পূজায় জয়ার দুই ছবি
পূজায় জয়ার দুই ছবি
পূজায় জয়ার দুই ছবি
প্রথমবার সিনেমা প্রযোজনা করেছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। আর এই সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে অনম বিশ্বাসের। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত মিসির আলী সিরিজের উপন্যাস ‘দেবী’র ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে এ ছবিটি। অন্যদিকে পূজা উপলক্ষে ১২ অক্টোবর কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত এবং জয়া অভিনীত ‘এক যে ছিল রাজা’ ছবিটি। ভাওয়াল রাজাকে নিয়ে নির্মিত এই ছবিতে যিশু সেনগুপ্তের বোনের চরিত্রে দেখা যাবে জয়াকে। অন্যদিকে ‘দেবী’ ছবিটিতে মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। আর রানু চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। এবারের দুর্গাপূজার বিজয়া দশমীতে (১৯ অক্টোবর) মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘দেবী’। কয়েক বছর ধরে মিসির আলীকে নিয়ে সিনেমা বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এবার সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটালেন। ‘দেবী’ প্রসঙ্গে জয়া বলেন, অভিনেত্রী জয়াকে প্রযোজক জয়া থেকে দূরে রেখেছি। প্রযোজক হিসেবে আর্টিস্টকে প্রভাবিত করিনি। পুরো ছবিটি একটি দলগত কাজ এবং ‘দেবী’ টিম ভালোভাবে কাজটি করেছে। এজন্য ‘দেবী’ টিমের সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৯ অক্টোবর ছবিটি মুক্তি পাবে। প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ স্যারের উপন্যাস নিয়ে সিনেমা করার স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। এবার সেটা বাস্তব রূপ হচ্ছে। আমার মনে হয়, আমরা অবশ্যই ভালো কিছু করতে পেরেছি। ছবিটি দেখে দর্শকরা হতাশ হবেন না বলেই আমাদের বিশ্বাস। ‘দেবী’র জন্য মেজবাউর রহমান সুমনকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দেন জয়া। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ছবির পরিচালক নির্ধারণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নিতে তিনি সহায়তা করেন। ‘দেবী’ সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন অনম বিশ্বাস। কিন্তু কেন অনম বিশ্বাসই এই ছবির পরিচালক হলেন? এই প্রসঙ্গে জয়া বলেন, আমরা যারা মিডিয়াতে কাজ করি তারা অনম সম্পর্কে ভালোভাবেই জানি। আমার মনে হয়েছে তিনি হুমায়ূন আহমেদ কিংবা মিসির আলীকে সিনেমার পর্দায় সুন্দরভাবে তুলে ধরতে পারেন। ‘দেবী’ চলচ্চিত্রে প্রযোজনার পাশাপাশি রানু চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, রানু চরিত্রটিতে অভিনয়ের সময় পরিচালক সবসময়ই একটা মিউজিক বাজাতেন, যেন সেটার আবহে অভিনয় করতে পারি। অবশেষে, ছবিটি দেখার পর মনে হয়েছে, এটা কি সত্যিই আমি করেছি। জনপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু এবং অভিনেত্রী দিলারা হানিফ পূর্ণিমা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ‘দেবী’ এবং ‘দেবী’ টিমের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জী জয়া আহসান এবং ‘দেবী’ সিনেমার জন্য শুভকামনা জানিয়ে বলেছেন, এই ছবিটি আমার বিশেষ বন্ধুর। আশা করছি দর্শক ছবিটি দেখতে হলে যাবেন। ‘দেবী’র মিসির আলী চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। এর আগে ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’, ‘মনের মানুষ’ ছবিতে অভিনয় করে নিজের জাত চিনিয়েছেন চঞ্চল। ‘দেবী’র মিসির আলী এখন তার নয়া চ্যালেঞ্জ। দেখা যাক কতটা দর্শকপ্রিয়তা পায় ‘মিসির আলী চঞ্চল’? ছবিটির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন ইরেশ জাকের, শবনম ফারিয়া, এনিমেশ আইচ। বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে জয়া আহসানের প্রথম প্রযোজনা ‘দেবী’। এই ছবিটির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হচ্ছে অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার। অন্যদিকে অনম বিশ্বাসের পরিচালনায় এটিই প্রথম সিনেমা। সব মিলিয়ে দর্শক সিনেমাটি উপভোগ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা ‘দেবী’ টিমের। অন্যদিকে জয়া আহসান ও যিশু সেনগুপ্ত অভিনীত ‘এক যে ছিল রাজা’ মুক্তি পেয়েছে ১২ অক্টোবর। ছবিটি অবিভক্ত ভারত তথা এখনকার বাংলাদেশের গাজীপুর এলাকার ভাওয়াল রাজার জীবন নিয়ে সত্য ঘটনার ওপর নির্মাণ করেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। এখানে জয়া আহসান অভিনয় করেছেন ভাওয়াল রাজার বোনের চরিত্রে। আর বাদী-বিবাদীর দুজন আইনজীবীর ভ‚মিকায় অভিনয় করেছেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী অপর্ণা সেন ও সঙ্গীতশিল্পী অঞ্জন দত্ত। মুক্তির আগে ছবির টিজার ও ট্রেলার প্রকাশ করেছে ছবির প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ। গত ১০ সেপ্টেম্বর কলকাতার রিপন স্ট্রিটের ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজার বাড়িতেই সাড়ম্বর এই আয়োজন ছিল। আর ওই আয়োজন যেন তারার মেলায় পরিণত হয়। কেননা, সেখানে ছবিটির কলাকুশলী থেকে ক্রু সদস্য সবাই উপস্থিত ছিলেন। ছবির টিজার-ট্রেলার উন্মোচনের এই আয়োজনের জন্য ঢাকা থেকে কলকাতায় যান জয়া আহসান। এই ছবির সঙ্গে তার অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। কেননা, ছবিটিতে তিনি শুধু একজন অভিনেত্রীই ছিলেন না বরং গাজীপুর, পূবাইল কিংবা ভাওয়াল গড়ের বহু এলাকায় ঘুরে সেই এলাকার নানা তথ্য তুলে এনেছিলেন জয়া। জয়া আহসান বললেন, আমার কাছে এটি শুধু একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ছবি নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নামও। এমনকি, এই ছবিতে আমি আমার স্থানীয় ভাষায় কথা বলতে পেরেছি। ছবির নির্মাতা সৃজিত মুখোপাধ্যায় বললেন, ছবির পরিকল্পনার পর প্রথম আমি জয়াকেই জানিয়েছিলাম। ওর কাছে আমি এত সাহায্য পেয়েছি তা বলে বোঝানো যাবে না। জয়া এই ছবিতে শুধু একজন অভিনেত্রীই নন, তিনি আমার ক্রু-মেম্বারও। ভাওয়ালের রাজার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত। তিনি জানালেন, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে তার মেকআপ নিতে হয়েছে। কোনো কষ্ট হয়নি। এই রকম একটা চরিত্রে অভিনয় করতে পারাটাও ভাগ্যের। আর সহশিল্পী জয়া আহসানের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, ও কী মানের অভিনেত্রী সেটা ইতোমধ্যে বাংলা সিনেমার দর্শকরা বুঝে গিয়েছেন। এবার পূজায় জয়ার আনন্দটা একটু বেশিই। পূজার পাশাপাশি ছবি মুক্তি বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে। জয়া আহসান বলেন, এবারের পূজা ভীষণ ব্যস্ততার। দুর্গাপূজায় বিজয়া দশমীর দিনই মুক্তি পেতে যাচ্ছে আমার প্রযোজিত প্রথম সিনেমা ‘দেবী’। ছবিটির প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় কেটে যাবে। অন্যদিকে কলকাতাতেও মুক্তি পেল আরো একটি ছবি। সবমিলিয়ে বেশ আনন্দেরই। পূজা নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জয়া বলেন, আমাদের পারিবারিক বন্ধুর বাড়ির পূজায় খুব মজা করতাম। দু-তিন দিন ধরে হৈ-হুল্লোড়। আর কখন লুচি-লাবড়া খাব, সেই অপেক্ষা করে থাকতাম। ভারতেশ্বরী হোমসের পূজার স্মৃতি মনে করে জয়া বলেন, তখন ক্লাস টু বা থ্রিতে পড়ি। ক্লাস এইট-নাইনের দিদিদের ‘চ্যালা’ হতাম আমরা। চ্যালা হয়েই সে কী আনন্দ। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত আমি খুব ছোটখাটো চেহারার ছিলাম। টেবিলের উপরে আমাকে বসিয়ে রাখা হতো। ডাকা হতো ‘ফ্লাওয়ার ভাস’ বলে। সবাই সালোয়ার-কামিজ পরলেও আমার হাফ প্যান্ট পরায় বাধা ছিল না। আর ছোট বলে সব জায়গায় যাওয়ার অনুমতিও ছিল। যাদের চ্যালা হতাম, তাদের হুকুমে রাতের বেলা প্রতিমার সামনের ফল-নাড়ু চুরি করে আনতাম। দিদিরা এত দুষ্টু ছিল, বলত একটা আঙুল ভেঙে রেখে আসবি, যেন মনে হয়, ঠাকুর এসে খেয়ে গিয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App