×

মুক্তচিন্তা

ইসির জনবল সংকট!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:২৫ পিএম

মামলার জটিলতা, নির্ধারিত সময়ে পদোন্নতি না হওয়াসহ নানা কারণে মাঠ প্রশাসনে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। যার অবসান হওয়া জরুরি। আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে ইসির ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার। এরই ধারাবাহিকতায় জনবল সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় আনতে হবে।

খবরে প্রকাশ, বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনে বিরাজ করছে নাজুক অবস্থা। প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। ইসি সচিবালয়সহ সারা দেশে প্রয়োজনীয় ৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে রয়েছেন মাত্র তিন হাজার। আর পাঁচ শতাধিক উপজেলা নির্বাচন অফিসের দেড় শতাধিক পদ শূন্য রয়েছে। কোথাও কোথাও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এর ফলে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত কার্যক্রমসহ ইসির দৈনন্দিন কাজেও ধীরগতি দেখা দিয়েছে। গণতান্ত্রিক দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ে এই বেহাল দশা মোটেও কাম্য নয়।

নির্বাচন কমিশনের সূত্রমতে, সবচেয়ে বেশি জনবল সংকট চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে। যেমন চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় প্রথম শ্রেণির অনুমোদিত মোট পদের সংখ্যা ৬৫টি। তন্মধ্যে শূন্য ২৮টি। তৃতীয় শ্রেণির অনুমোদিত পদ ৭৬টি, যার মধ্যে শূন্য ৩৭টি। আর চতুর্থ শ্রেণির ৭৬টি অনুমোদিত পদের মধ্যে শূন্য ২০টি।

অর্থাৎ শুধু প্রথম শ্রেণিই নয়, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির অনেক পদও খালি। এই জনবল কাঠামো নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান কি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে? এ পরিস্থিতিতে নতুন ভোটারদের জন্য এনআইডি কার্ড ইস্যু, কার্ডে নাম, পিতা, মাতা, স্বামীর নাম ভুল সংশোধন, জন্ম তারিখ সংশোধন, স্থানান্তরসহ নানা রকম সংশোধন কাজ দুরূহ হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় একটি অবাধ, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের কোনো বিকল্প নেই।

এ জন্য সবাই নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার কথা বলেন। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি বিপরীত চিত্র। ইসির কার্যক্রম সুচারুভাবে পরিচালনায় মাঠ প্রশাসনকে অবশ্যই কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। তাহলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে যেমন দক্ষতা ও সক্ষমতা প্রকাশ পাবে, তেমনি স্বচ্ছতা তৈরি হবে। সরকারের প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীলতাও কমবে।

মামলার জটিলতা, নির্ধারিত সময়ে পদোন্নতি না হওয়াসহ নানা কারণে মাঠ প্রশাসনে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। যার অবসান হওয়া জরুরি। আগামী ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সারা দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে ইসির ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার। এরই ধারাবাহিকতায় জনবল সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় আনতে হবে। লোকবল নিয়োগের পাশাপাশি ইসিতে এক যুগেরও বেশি পদোন্নতি না পাওয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তাদের বিষয়টিও সামনে আসা উচিত।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনোযোগী হোন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App