×

মুক্তচিন্তা

অভিনন্দন নারী ফুটবল দল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৫১ পিএম

সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী ফুটবল দলের ধারাবাহিক এই বিজয় ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল অঙ্গনে উজ্জীবনী বার্তা দিচ্ছে। পর্যবেক্ষকদের বিবেচনায় মাঠের ফুটবলের সব বিভাগেই শারীরিক যোগ্যতা, বলের নিয়ন্ত্রণ, গতি, পারস্পরিক বোঝাপড়া সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রত্যেক ম্যাচে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলেছে বাংলাদেশ। এ জন্য সফলতাও এসেছে।

নেপালকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল বাংলাদেশ। দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন মাসুরা পারভীন।

রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে এ ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। দেশের মেয়েদের এ কৃতিত্বে আমরা যারপরনাই আনন্দিত। বয়সভিত্তিক সাফে বাংলাদেশের মেয়েরা এ নিয়ে জিতল দুই শিরোপা। লিখল বাংলাদেশের ফুটবলের আরেকটি ‘স্বস্তি’র গল্প। অভিনন্দন তাদের।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শুরু থেকেই আধিপত্য বজায় রাখে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে ১৭-০ গোল দিয়ে টুর্নামেন্টে উড়ন্ত সূচনা পাওয়া বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে হারায় নেপালকে। সেই ম্যাচে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে পা রাখে। দাপটের সঙ্গে গ্রুপ পর্ব পেরুনোর পর সেমিফাইনালেও বজায় থাকে তাদের দাপট। সেই দাপটের কাছে হার মানে ভুটানও।

স্বাগতিকদের ৪-০ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিল গ্রুপ পর্বের প্রতিদ্বন্দ্বী নেপাল। ফাইনালে নেপালকে আরেকবার হারাল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এর আগে ঢাকায় গত বছরের ডিসেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফের চ্যাম্পিয়ন ছিল বাংলাদেশ। সেই পদচিহ্ন অনুসরণের সুযোগ ছিল এবার অনূর্ধ্ব-১৮ নারী দলের সামনে। সুযোগ ছিল গেল আগস্টে ভুটানের এই চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৫ মেয়েদের ভারতের কাছে হারের দুঃখ ভোলার।

এমনি ২০১৬ সালে এই চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামেই হেরে এক প্রকার নির্বাসনে গিয়েছিল মামুনুল ইসলামরা। মেয়েদের সামনে সুযোগ ছিল সেই দুঃখের স্মৃতিতে নতুন পদচিহ্ন আঁকার। সেই সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছে গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী ফুটবল দলের ধারাবাহিক এই বিজয় ঝিমিয়ে পড়া ফুটবল অঙ্গনে উজ্জীবনী বার্তা দিচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের বিবেচনায় মাঠের ফুটবলের সব বিভাগেই শারীরিক যোগ্যতা, বলের নিয়ন্ত্রণ, গতি, পারস্পরিক বোঝাপড়া সবকিছুতেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রত্যেক ম্যাচে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক খেলেছে বাংলাদেশ। এ জন্য সফলতাও এসেছে। ফিফার পুরুষ র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ ফুটবল দলের অবস্থান যখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, তখন মেয়েদের ধারাবাহিক সফলতায় দেশবাসী স্বভাবতই আনন্দিত ও উল্লসিত। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল আন্তর্জাতিক ফুটবল আসরে একের পর এক ব্যর্থ হচ্ছে। তার বিপরীতে ফুটবলে বয়সভিত্তিক জুনিয়র পুরুষ বা নারী দলের সাফল্য প্রশংসনীয়। এটাই আমাদের আশার জায়গা।

বাংলাদেশে নারী ফুটবলের ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। মাত্র এক দশক আগে আমাদের দেশে শুরু হয় নারী ফুটবলের পথচলা। এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা যে সাফল্য দেখিয়েছে। নবীন এই ফুটবলারদের ব্যাপারে যত্নবান হলে তারা আরো বড় আসরেও সাফল্য নিয়ে আসতে পারবে।

আমরা আশাবাদী, নারী ফুটবলারদের সাফল্য আমাদের নীতিনির্ধারকদের নতুন ভাবনায় উজ্জীবিত করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App