×

পুরনো খবর

মণিকে ফেরাতে চায় বিএনপি : নৌকার মাঝি রিমন না সুভাষ?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৫৩ পিএম

মণিকে ফেরাতে চায় বিএনপি : নৌকার মাঝি রিমন না সুভাষ?
পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী নিয়ে গঠিত বরগুনা-২ সংসদীয় আসন। দেশ স্বাধীনের পর ৪বার আওয়ামী লীগ আসনটি নিজের ঘরে নিয়েছিল। বর্তমানে শওকত হাচানুর রহমান রিমন এখানকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তরুণ ভোটাররা রিমনের নৌকার জোয়ার দেখতে চাইছেন আবারো। কিন্তু বাদ সেধেছেন বয়স্করা। যারা একাত্তর দেখেছেন কিংবা পাকিস্তানি হানাদারদের এ দেশীয় দোসরদের উন্মত্ততা দেখেছেন তাদের বড় একটি অংশ রিমনকে নিয়ে আর এগুতে চান না সামনের দিকে। সমস্যা ওই একটাই। রিমনের বাবার একাত্তরের ভ‚মিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এই একটি ছাড়া তার বিরুদ্ধে আর কোনো ইস্যু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ভোটাররা বলছেন, রিমনের অপরাধ কী? তার আমলে মানুষ তো হয়রানির শিকার হননি! যদি বাতাস ঘুরে যায় তবে কার হাতে চলে যাচ্ছে নৌকার বৈঠা? এসব প্রশ্ন এখন বামনা-পাথরঘাটা আর বেতাগীবাসীর মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। সে প্রশ্নের গোড়ার দিকেই চলে আসছে সুভাষ চন্দ্র হাওলাদারের নাম। কে এই সুভাষ? বরগুনা-২ আসন ছাপিয়ে যার পরিচয়ের ব্যাপ্তি বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দক্ষিণ জনপদে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক তিনি। বোধকরি তার পরিচয় এর বেশি আর নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে দেয়ার আবশ্যকতা নেই। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় গণমানুষের সুখে-দুঃখে পাশে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ থেকে নৌকার টিকেট সুভাষ পাবেন না এমনটি যেন ভাবতেই পারছেন না তার সতীর্থরা। এখানে আরো যারা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাবির হোসেন। তিনিও শেখ হাসিনার নৌকায় জোয়ার দিতে চাইছেন সংসদ অভিমুখে। ইতোমধ্যে স্রেফ একা নির্বাচনী এলাকায় জনসংযোগ করে ভোটারদের মাঝে নতুন আলোচনার খোড়াক হয়েছেন। কেউ কেউ বাহবাও দিচ্ছেন। তাতে জাবিরের যায় আসে না কিছুই। তিনি মনে প্রাণে শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে কাজ করবেন বলেই জানালেন। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে আরো যারা মাঠে আছেন তাদের মধ্যে অধ্যাপক সামছুল আলম অন্যতম। বেশ কটি সভা-সমাবেশ করে ইতোমধ্যে তিনিও রয়েছেন আলোচনায়। পাথরঘাটার পদ্মা গ্রামের এই শিক্ষাবিদেরও রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে রাজধানীর নিউ মার্কেটে গুটিকয়েক ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন তিনি। বিনয়ী আর ভদ্রতায় তার জুড়ি মেলা ভার। মানুষের মনে স্থান পেতে কাজ করছেন তিনি। এ ছাড়াও বছরের গোড়ার দিকে মরহুম সাবেক সাংসদ গোলাম সবুর টুলুর মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে মাঠে থাকলেও এখন আর মাঠে দেখছেন না ভোটাররা। আলোচনায় ছিলেন পাথরঘাটার হাজিবাড়ির মেয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের বর্তমান সাংসদ নাসিমা ফেরদৌসিকে নিয়েও। ভোটারদের মাঝে নাসিমাও ছিলেন আলোচনায়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত এই নেত্রীরও দলের জন্য ত্যাগ অনেক। এদিকে বৃষ্টি শেষের রঙধনুর মতো মাঝেমধ্যে দু-চারটি ব্যানার-পোস্টার নিয়ে মাঠে দেখা মেলে কোনো কোনো বসন্তের কোকিলদের। কিছুদিন মাঠ দখলে রাখবার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে লোটা-কম্বল গুটিয়ে যার যার পথে চলে যান তারা। এমন অনেক তথাকথিত বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী এবারো মাঠে রয়েছেন। একটি সূত্র বলছে, ওরা শেষ পর্যন্ত ডামি প্রার্থী হয়ে সমমনা দলের পক্ষে এজেন্ট দিয়ে কাজ করবে। এত গেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ের খানিকটা ফিরিস্তি, এবারে বিএনপির ধানের শীষের টিকেট পাওয়ার দৌড়ে আগানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বিশিষ্ট আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি আইনজীবী এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। এই হেভিওয়েড প্রার্থীকে স্থানীয় বিএনপির বৃহৎ একটি অংশই মেনে নিতে চাইছে না। তারা সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ নূরুল ইসলাম মণিকে ফের দলে ফিরিয়ে নিয়ে এই আসনে প্রার্থী করতে চাইছে। বিএনপির একটি সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় খন্দকারের সম্মান অনেক। কিন্তু ভোটের মাঠে তিনি মোটেই পারফেক্ট নন। এখানে নূরুল ইসলাম মণিই বিএনপির বড় অংশের প্রাণ। তারা আরো জানিয়েছেন, মণি ফের বিএনপিতে এলে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে তিনি নির্বাচিত হবেন। প্রশ্ন হচ্ছে মণিকে বিএনপিতে নেবে কিনা এবং প্রার্থী করবে কিনা দলের হাইকমান্ড। সে বিষয়ে কোনো সূত্র থেকেই দায়িত্বশীল বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল নিরসন না হলে অঙ্ক ঘুরেও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ আর বিএনপির লড়াই ভেঙে চুড়ে চরমোনাই পীরের সমর্থিত প্রার্থী এক সময়ের জনপ্রিয় নেতা সাবেক সাংসদ গোলাম সরওয়ার হিরু আবারো জয় পেয়ে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App