×

বিনোদন

সুন্দরের প্রতিমা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৩:২৭ পিএম

সুন্দরের প্রতিমা
এক সুন্দরী নারীর গল্প। তবে সৌন্দর্য আর গুণ ছাড়াও তার রয়েছে আরো একটি গুণ, যা ছাপিয়ে গিয়েছে তার সৌন্দর্যকে। আর তা হলো তার অভিনয় প্রতিভা। দুনিয়া কাঁপানো মুভি টাইটানিক যারা দেখেছেন তারা জানেন তার অভিনয় প্রতিভার কথা, তারা জানেন তার সৌন্দর্যের কথা। তিনি কেট উইন্সলেট। পুরো নাম কেট এলিজাবেথ উইন্সলেট
জন্ম ও শৈশব ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন কেট। তার মাতা স্যালি অ্যান এবং পিতা রজার জন উইনসলেট। বাবা-মা দুজনই থিয়েটার শিল্পী হওয়াতে শৈশবেই অভিনয়ে অভিষেক ঘটে উইন্সলেটের। মাত্র সাত বছর বয়সে ব্রিটিশ টেলিভিশনে অভিনেত্রী হিসেবে হাজির হন কেট। সেই যে শুরু আর থেমে থাকেননি তিনি। কেটের বয়স যখন এগারো তখন তিনি রেডরুফস থিয়েটার স্কুলে পড়ালেখা শুরু করেন। পরের বছর তিনি প্রথম অভিনয় করেন টিভি বিজ্ঞাপনে। পাশাপাশি এ বছরই তিনি প্রথম টিভি সিরিজে অভিনয় করেন। সিরিজটির নাম শ্রিঙ্কস। অভিনয়ের জন্য স্কুল ত্যাগ অভিনয়ে কেট এতটাই নিবেদিত ছিলেন যে, অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করার উদ্দেশ্যে তিনি অভিনয়ের স্কুল ত্যাগ করেন। উদ্দেশ্য স্কুল থেকে নয় সরাসরি অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনেত্রী হয়ে উঠবেন। এই সিদ্ধান্ত থেকেই এ সময় তিনি পুরোদস্তুর অভিনেত্রী বনে যান। কাজ করতে থাকেন মঞ্চে। এই সময় মঞ্চে তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলো হচ্ছে থিয়েটার প্রোডাকশন কর্তৃক আয়োজিত আদ্রিয়ান মল, পিটার প্যান এবং গেট ব্যাক। চলচ্চিত্রে অভিষেক ১৯৯৪ সালে পিটার জ্যাকসন পরিচালিত হ্যাভেনলি ক্রিয়েটারস মুভিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে কেট উইন্সলেটের আর তার অভিষেকের ফলে সিনেমাপ্রেমীরাও পান হলিউডের আরেকজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী, যিনি ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন হলিউডের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। মুভিটিতে কেট জুলিয়েট নামক একজন স্কুল ছাত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন। কেট তার পরবর্তী মুভি সেন্স এন্ড সেন্সিবিলিটিতে অভিনয়ের সময় নিজের অভিনয় দক্ষতা বাড়ানোর প্রতি আরো মনোযোগী হন। এরপর ১৯৯৬ সালে তাকে দেখা যায় জুড এবং হ্যামলেট নামক চলচ্চিত্র দুটিতে। এই চলচ্চিত্র দুটি বক্স অফিসে সফলতা না পেলেও চলচ্চিত্র দুটিতে তার অনবদ্য অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। টাইটানিকের জন্য শ্রম টাইটানিক মুভিটিতে আমরা জাহাজের প্রথম শ্রেণির যাত্রী সুন্দরী ও মিষ্টি মেয়ে যে রোজকে দেখতে পাই সেই রোজ চরিত্রটি পাওয়ার জন্যও কেটকে পোড়াতে হয়েছে যথেষ্ট কাটখড়। জেমস ক্যামেরুনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তাকে লেগে থাকতে হয়েছে একাগ্র চিত্তে। রোজ চরিত্রটি পাওয়ার জন্য ক্যামেরুনকে লন্ডন থেকে নিয়মিত চিঠি লিখতেন কেট। শুধু চিঠি লিখেই ক্ষান্ত হননি কেট। রোজ চরিত্রটির জন্য তিনি যে সম্পূর্ণ উপযুক্ত এটা বোঝাতে তিনি সুদূর লন্ডন থেকে নিউ এঞ্জেলেসে চলে আসেন ক্যামেরুনের সঙ্গে দেখা করতে। রোজ চরিত্রটিতে অভিনয়ের সময় চরিত্রের স্বার্থে কেটকে পরিশ্রমও করতে হয়েছে বেশ। এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের জন্য কেটও পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে। অস্কার থেকে ছিটকে পড়া ১৯৯৯ সালে তার অভিনীত চলচ্চিত্র হিডেয়াস কিনকি এবং হোলি স্মোক-এ তিনি বৈচিত্র্যপূর্ণ চরিত্রে হাজির হন। একাবিংশ শতাব্দীর প্রথম বছর কেট অভিনয় করেন ফ্রেন্স ঔপন্যাসিক মারকুইস ডি সাডের ওপর নির্মিত কুইলস নামক চলচ্চিত্রে। এর পরের বছর কেট অভিনয় করেন তার ক্যারিয়ারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য মুভি আইরিসে। আইরিস মুভিটি তাকে দ্বিতীয়বারে এনে দেয় সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরিতে অস্কারের নোমিনেশন। কিন্তু এবারো তিনি ছিটকে পড়েন অস্কারজয়ীদের তালিকা থেকে। ২০০৪ সালে কেট আবার অস্কার মনোনয়নের দেখা পান। এ বছর কেট অভিনীত ইটারনাল সানশাইন অফ দ্য স্পটলেস মাইন্ড চলচ্চিত্রটি তাকে এনে দেয় অস্কারের নোমিনেশন। এর দুই বছর পর ২০০৬ সালে আবারো সেই অস্কার ঘুরে যায় তার নাকের ডগা দিয়ে। লিটল চিলড্রেন সিনেমার দুর্দান্ত অভিনয় তাকে এনে দিয়েছিল সেবার অস্কারের মনোনয়নটি। অধরা অস্কারের দেখা কেটের অস্কার বিজয়ী হওয়ার দিনটি এনে দেয়ার নেপথ্যে অবদান একমাত্র দ্য রিডার চলচ্চিত্রটির। ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি একটি অল্পবয়সী ছেলের সঙ্গে একজন বয়স্ক মহিলার অসম প্রেমের গল্পের ওপর নির্মিত। এই সময়গুলোতে কেটের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ইনিগমা, দ্য লাইফ অফ ডেভিড গেল, ফাইন্ডিং নেভারল্যান্ড, রেভোলুশোনারি রোড, মিলড্রেড পিয়ের্স। মিলড্রেড পিয়ের্স তাকে এনে দিয়েছে গোল্ডেন গ্লোব এবং ইমি অ্যাওয়ার্ড। বিরতিহীন সাফল্য কেট ২০১৩ সালে অভিনয় করেন মুভি ৪৩ নামক একটি কমেডি সিনেমায়। এ বছরই লাবোর ডে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যামে অর্জিত সেরা অভিনেত্রী হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড। ২০১৫ সালে অ্যাপেলের কর্ণধার স্টিভ জবসের বায়োপিকে অভিনয়ের ফলে তিনি সপ্তমবারের মতো অস্কারের নমিনেশন লিস্টে নাম লেখান। শুধু তাই নয়, এই চলচ্চিত্রটি তাকে দ্বিতীয়বারের মতো গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডও এনে দেয়। ব্যক্তিজীবন ব্যক্তিজীবনে কয়েকবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কেট উইন্সলেট। তিনি প্রথম বিয়ে করেন জিম থেপল্টনকে। জিম ও কেট ১৯৯৮ সালে বিয়ে করলেও খুব বেশিদিন টেকেনি তাদের সংসার। ২০০১ সালে তারা আলাদা হয়ে যান। কেট ও জিমের মিয়া নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এরপর কেট বিয়ে করেন অস্কার বিজয়ী পরিচালক স্যাম মেন্ডেসকে। এ ঘরে কেটের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কেট সর্বশেষ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন নেড রকনোরলকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App