×

মুক্তচিন্তা

আমাদেরও শিক্ষা নিতে হবে

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:৩২ পিএম

দেশটি ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠুক, আটকে পড়া মানুষ উদ্ধার হোক- সেটিই আমাদের কাম্য। ভ‚মিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের কথা উঠে এসেছে বারবার। বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশ এখন কোনোমতেই ঝুঁকিমুক্ত নয়। এ জন্য ভূমিকম্প মোকাবেলায় প্রস্তুতি থাকতে হবে। আমরা কতটা প্রস্তুত সে ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া এখন এক মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। সুলাওয়েসি দ্বীপে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সৃষ্ট সুনামিতে এখনো পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৪ জনের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারেনি। ভূমিকম্প ও সুনামিতে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের প্রাণহানিতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, শুক্রবার রাতে ভূমিকম্পের পর সুলাওয়েসি দ্বীপের পালু শহরে সুনামি আঘাত হানে। সাগর থেকে ছুটে আসা ৬ মিটার উঁচু (২০ ফুট) ঢেউ উপকূলীয় শহরটিতে আছড়ে পড়ে। সুউচ্চ ঢেউ লণ্ডভণ্ড করে দেয় উপকূলীয় এলাকা। এতে পালুর বেশিরভাগ বাড়িঘর, হাসপাতাল, শপিংমল ও হোটেল ধসে গেছে। ভূমিধসে পালুর প্রধান মহাসড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পালু শহরের ৩ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। রেডক্রস বলছে, জীবিত ও আহতদের উদ্ধারে তাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তারা বলছে সুনামিতে প্রায় ১৬ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। লাশ ভাসছে সমুদ্রের পানিতে। সাগরের উপকূলে পড়ে রয়েছে সারি সারি মরদেহ। আর ধ্বংসস্তূপের ভেতরে প্রাণের আর্তি। জীবনের এ আর্তনাদে সাড়া দিতে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা সীমিত, ভারী যন্ত্রপাতিও সীমিত। ভূমিকম্পে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই উদ্ধার কাজে সময় লাগছে। ইন্দোনেশিয়ায় প্রকৃতিতে সৃষ্ট ভয়াবহ দুর্যোগ লেগেই আছে। মানুষের আওতার বাইরে ঘটমান এমন বিপর্যয় নিয়ে অনেক চিন্তা ও সতর্কতার কথা থাকলেও সেখানকার কর্তৃপক্ষ খুব কমই এসব নিয়ে ভাবে মনে হচ্ছে। পালুতে একটি সুনামি আঘাত হানতে যাচ্ছে- এ ধরনের সতর্কতা জারি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভূতত্ত্ব সংস্থা বিএমকেজি ভূমিকম্পের পর সুনামি সতর্কতা জারি করে, কিন্তু ৩৪ মিনিট পর তারা তা প্রত্যাহার করে নেয়। অন্যদিকে তাদের করা সতর্কতা অনুযায়ী সময়ের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানে এই সুনামি। এ ধরনের দুর্যোগ ও প্রাণহানি থেকে অনেক সতর্কতা গ্রহণ ও শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার ওই দ্বীপ এলাকা ও এর আশপাশে প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিকট-অতীতে উপর্যুপরি মানুষের প্রাণ গেছে। গত জুলাই ও আগস্টে পালু শহর থেকে শত কিলোমিটার দূরের লমবক দ্বীপে দফায় দফায় ভূমিকম্পে ৫০০ লোকের প্রাণহানি হয়েছে। ২০০৪ সালে ৯.৩ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামিতে প্রায় দুই লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এরপরও তারা কেন উদাসীন? দেশটি ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠুক, আটকে পড়া মানুষ উদ্ধার হোক- সেটিই আমাদের কাম্য। ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের কথা উঠে এসেছে বারবার। বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশ এখন কোনোমতেই ঝুঁকিমুক্ত নয়। এ জন্য ভূমিকম্প মোকাবেলায় প্রস্তুতি থাকতে হবে। আমরা কতটা প্রস্তুত সে ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে হবে। নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App