×

অর্থনীতি

নির্বাচন ঘিরে অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ০১:৪৩ পিএম

নির্বাচন ঘিরে অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ
ঢামাঢোল বেজে উঠেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের। এই নির্বাচন ঘিরে চাপ তৈরি হচ্ছে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। ডলারের মান কমে যাওয়ায় কমছে সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা। এ ছাড়া বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তাই নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা লক্ষ্য করা গেছে। এ ছাড়া রপ্তানি আদেশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে চান তারা। জানা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে গেছে। তবে বাজারে টাকার প্রবাহ বেড়েছে। সরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বেড়ে গেছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির হার কমে গেছে। আমদানি ব্যয় গত অর্থবছর পর্যন্ত বেড়ে এখন কমতে শুরু করেছে। বৈদেশিক বিনিয়োগেও চলছে মন্দাভাব। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে সরকারের চলতি হিসাবে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। টাকা ছাড়ের বিপরীতে সরকার অর্থ ছাড় করাতে পারছে না। অর্থ সংকটে ঋণের বোঝা বাড়ছে। আবার বাজারে টাকার প্রবাহ বাড়লেও কমে যাচ্ছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। ওদিকে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের তুলনায় কমে গেছে আয়ের পরিমাণ। সব মিলিয়ে নির্বাচনী অর্থনীতির নতুন এ সমীকরণে নানামুখী সংকট ঘনীভ‚ত হচ্ছে। নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাড়তি খরচ মেটাতে বাজারে ব্যাংকবহিভর্‚ত টাকার প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই কালো টাকা। এই টাকার প্রভাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতি কিছু বিশেষ সহ্য ক্ষমতা অর্জন করেছে। যে কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আন্তর্জাতিক প্রতিক‚ল পরিবেশ মোকাবেলা করে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে। একইভাবে নির্বাচনী চাপ মোকাবেলা করে ভোটের পর অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে তারা আশাবাদ তাদের। নির্বাচন এলে অর্থনীতিতে একটু চাপ বাড়ে। এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। যে কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে একটু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবে নির্বাচনের পরও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার নিরসন না হলে অর্থনীতিতে সংকট আরো ঘনীভূত হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের দুমাসে গড় হিসাবে রপ্তানি বাড়লে আগস্টে কমে গেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে রপ্তানি আয় বেড়েছিল ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ২ দশমিক ৫১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির হার ৬ গুণেরও বেশি কমেছে। এদিকে গত বছরের আগস্টের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে এ আয় কমে গেছে। গত অর্থবছরের আগস্টে রপ্তানি আয় বেড়েছিল ১০ দশমকি ৭১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের আগস্টে আয় কমেছে ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এদিকে আমদানি ব্যয় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেড়েছিল ৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বেড়েছিল ৯ শতাংশ। গত অর্থবছরে বেড়েছে ২৫ দশমকি ২৩ শতাংশ। গত জুলাইয়ে বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, আমদানির আড়ালে টাকা পাচার হচ্ছে। কেননা যেভাবে আমদানি হচ্ছে, সেভাবে শিল্প উৎপাদন বাড়ছে না। ১২ মাসের গড় হিসাবে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। গত বছরের আগস্টে এ হার ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। আগস্টে এ হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে অর্থাৎ গত বছরের আগস্টের তুলনায় চলতি বছরের আগস্টে এ হার কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত বছরের এ সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App