×

জাতীয়

রাজধানীর সড়কে ‘নিষিদ্ধ’ লেগুনার প্রত্যাবর্তন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২৮ পিএম

রাজধানীর সড়কে ‘নিষিদ্ধ’ লেগুনার প্রত্যাবর্তন
ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেস বিহীন’ আখ্যা দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীতে লেগুনা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করলেও আবার তা পুরনো অবস্থায় ফিরেছে। নিষেধাজ্ঞার পরও গত কয়েকদিনে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ রুটেই লেগুনায় যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। রাজধানীর ঝিগাতলা, গুলিস্থান, গ্রিনরোড, ঝিগাতলা, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকার প্রধান সড়কে যাত্রী নিয়ে আগের মতোই লেগুনা চলছে। দিনের বেলায় কম সংখ্যক চলাচল করলেও সন্ধ্যার পর তা বেড়ে যায়। পুলিশ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও এখন তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন যাত্রী দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শুধুমাত্র ‘ফিডার রোড’ বা ‘সংযোগ সড়কগুলোতে’ চলাচলের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে কেন হঠাৎ করে লেগুনা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলো এবং কেনোই বা আবার চলাচলের অনুমতি দেয়া হলো তা নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন রুটের লেগুনা মালিকরা জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর তারা লেগুনা আবারো চালানো শুরু করেছেন। এখন যেসব লেগুনা রাস্তায় চলছে তার সবগুলোরই রুট পারমিট ও ফিটনেস সার্টিফিকেট রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বিআরটিএ থেকে সব লেগুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কোনো লেগুনাই রাস্তায় চলছে না। ডিএমপি কমিশনার লেগুনা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়ার কয়েকদিন পর ১ হাজারেরও বেশি লেগুনা মালিক ও শ্রমিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় যান। তারা দীর্ঘ সময় এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন। এরপর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে সমঝোতার পর মালিকরা আবারো রাস্তায় লেগুনা নামিয়েছেন বলে জানান। ফার্মগেট-নিউমার্কেট রুটের আনন্দ পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি নূরুল হক বলেন, আমরা অবৈধভাবে লেগুনা চালাচ্ছি না। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠককালে বাস্তব অবস্থা বুঝিয়েছি। যে ঝুঁকির কথা বলা হচ্ছে সেই ব্যাপারটিও বলেছি। তারা আশ^স্ত হয়েছেন। আমাদের লেগুনা চালাতে বলেছেন। এরপরই আমরা রাস্তায় নেমেছি। ঝিগাতলা ফার্মগেট রুটে চলাচলরত ইন্দিরা পরিবহন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, এখন এই লেগুনা ফার্মগেট যায় না। ঝিগাতলা থেকে ফিডার রোডে লালমাটিয়ার আড়ংয়ের পেছনের রাস্তা পর্যন্ত চলাচল করে। এই রোডে চলতে তো আর পুলিশের বাঁধা নেই। লেগুনা চলাচলে নিষেধাজ্ঞার পর আবার কেন অনুমতি দেয়া হলো তা নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, লেগুনা মালিক-শ্রমিকরা আমাদের কাছে এসেছিল। তখন আমরা তাদের প্রধান সড়ক পরিহার করে শুধুমাত্র ফিডার রোডে লেগুনা চালাতে বলেছি। প্রধান সড়কে চালালে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি। এখন আমরা এদের চলাচল নিয়মিত তদারকির মধ্যে রেখেছি। জানা গেছে, রাজধানীর ফার্মগেট থেকে ঝিগাতলা, মিরপুর, ৬০ ফিট, মোহাম্মদপুর, কচুক্ষেত, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মহাখালী হয়ে বাড্ডা লিংকরোড, গুলিস্থান থেকে গোরান, খিলগাঁও, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মিরপুর ১৪ নম্বর, গুলিস্থান থেকে চকবাজার, হাজারীবাগ রুটে লেগুনা চলাচল বন্ধ ছিল। কিন্তু এখন ফিডার রোডে চলাচল শুরু করেছে। কিন্তু সব সময় ফিডার রোডের ভেতরে চলাচল সীমাবদ্ধ থাকে না। ইন্দিরা পরিবহনের লেগুনাগুলোকে সন্ধ্যার পর ফার্মগেট পর্যন্ত চলাচল করতে দেখা গেছে। রাত ১২টা পর্যন্ত এভাবে চলাচল করে। নিউমার্কেট-ফার্মগেট রুটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অবাধেই লেগুনাগুলো চলছে। খিলগাঁও থেকেও লেগুনা চলতে দেখা গেছে। মিরপুর ১ নম্বর থেকে ঝিগাতলা পর্যন্ত এখনো লেগুনা চলছে। লেগুনা মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানান, রাজধানীর ১৫৯টি রুটে লেগুনা চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। এগুলো পুরোপুরি বন্ধ করা হলে ২০ হাজারের বেশি মালিক-শ্রমিক বিপাকে পড়বে। আন্দোলনের ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা চলছে। অন্যদিকে যাত্রীরাও পরিবহন সংকটে পড়বে। ফিডার রোডে চলতে দেয়া হলেও মালিক-শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App