×

মুক্তচিন্তা

পর্যটনশিল্প বিকাশে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:৪৫ পিএম

‘পর্যটন শিল্পের বিকাশে প্রযুক্তি’ স্লোগানকে ধারণ করে গতকাল পালিত হয়েছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। এই দিবসকে কেন্দ্র করে সংবাদ প্রতিবেদনে আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশে পর্যটনের বাস্তব অবস্থা এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ। ২০১৬ সালকে পর্যটনবর্ষ ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে দুটি বছর। এই সময়ে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা বলা হলেও বাস্তবে কিছু দেখা যায়নি। কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে তাও ভেস্তে যেতে বসেছে। সবকিছু মিলিয়ে একটা টানাপড়েনের সময় পার করছে বাংলাদেশের পর্যটন। প্রতি বছর ঘটা করে পালন করা হয় বিশ্ব পর্যটন দিবস। অথচ দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তেমন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না সারা বছর। শুধু দিবস এলেই ঘটা করে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দায় শেষ করেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে দেশের পর্যটনশিল্প সামনের দিকে এগোতে পারছে না। সরকার এর আগেও ২০১১ সালে পর্যটনবর্ষ ঘোষণা করেছিল। সেবার বিটিভিকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল প্রায় ৬৬ কোটি টাকা। সরকার ২০১০ সালে একটি পর্যটন নীতিমালা করে। সেখানে বহুমাত্রিক পর্যটনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অনুন্নত অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নতুন পর্যটন স্পট খোঁজায় অনীহা, জঙ্গিবাদ ও রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির কারণে এ দেশে আসতে চাইছেন না বিদেশিরা। দেশে যারা ট্যুরিজম অপারেটর প্রতিষ্ঠান চালান তাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে- এ মুহূর্তে বাংলাদেশে পর্যটন এলাকা বলতে কক্সবাজার, সিলেট, কুয়াকাটা কিংবা পার্বত্যাঞ্চলকে বোঝানো হয়। সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়নও এসব অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। বিদেশিরা এখন আর এ ক’টি জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। তাদের জন্য সুন্দরবন, পার্বত্যাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চলসহ সম্ভাব্য সব পর্যটন এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। বিশেষ করে সুন্দরবনকেন্দ্রিক সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে হবে। উত্তরাঞ্চলের ঐতিহ্যগত বা প্রত্নতত্ত্ব সমৃদ্ধ এলাকায় তারকা মানের হোটেল নির্মাণ করতে হবে। দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ এলাকাগুলোয়ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। কক্সবাজারের মতো স্থানে বিদেশিদের জন্য আলাদা জোন করার সুপরিশ রয়েছে ট্যুরিজম অপারেটরদের। ওইসব জোনে বিদেশিরা সব ধরনের বিনোদন সুবিধা পাবেন। এসব উদ্যোগই আকৃষ্ট করবে বিদেশিদের। পাশাপাশি দেশি পর্যটকও বাড়বে। স্বীকার করতেই হয়, এখন স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেই এখন অবসরে ঘুরে বেড়াতে যাচ্ছেন। মানুষের এই চাহিদা থেকে নতুন নতুন স্পটও আবিষ্কৃত হচ্ছে। এগুলো বিদেশিদের কাছেও আকর্ষণের কেন্দ্র হতে পারে। দেশে পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। একে কাজে লাগতে আরো তৎপর হতে হবে সরকারকে। পর্যটনসমৃদ্ধ এলাকায় অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সব পর্যটন স্পটে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। দেশের পর্যটন আকর্ষণ নিয়ে বহির্বিশ্বে প্রচারণা জোরদার করতে হবে, বাংলাদেশের ইতিবাচক ইমেজ তুলে ধরতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App