×

মুক্তচিন্তা

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হোক

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:১০ পিএম

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের বৃত্তি, অবহেলিত ও অনগ্রসর এলাকার জনগণ ও নারী উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে সিএসআর কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা কয়টি ব্যাংক মানছে সেটা দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকি জোরদার করতে হবে।

দেশের ব্যাংকগুলোর সিএসআর খাতের ব্যয় পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনের মতো একটি প্রশংসনীয় কাজে অর্থ ব্যয় স্বচ্ছ ও প্রশ্নাতীত না হওয়াটা অনভিপ্রেত। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ব্যাংকগুলো সিএসআর বাবদ ব্যয় করেছে ৬২৭ কোটি টাকা, যা এর আগের ছয় মাসে ছিল ৪১৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত ছয় মাসে ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় বেড়েছে ২১০ কোটি টাকা। আমরাও মনে করি এ ব্যয় অস্বাভাবিক। প্রতিটি ব্যয় নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক অস্বাভাবিকভাবে সিএসআরের অর্থ ব্যয় করেছে। ব্যাংকটি চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্যয় করেছে ২৭৫ কোটি টাকা। এর আগের ছয় মাসে এ ব্যাংকের সিএসআর ব্যয় ছিল মাত্র ৪৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে ব্যাংকটির সিএসআর ব্যয় বেড়েছে ২২৮ কোটি টাকা। একইভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকেও হঠাৎ সিএসআরের ব্যয় বেড়ে গেছে। গত ছয় মাসে ব্যাংকটি ১ কোটি ১১ লাখ টাকা সিএসআর বাবদ ব্যয় করেছে, যা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো ব্যাংক এভাবে ব্যয় করেনি। প্রতিবেদনে আরো দেখা যায়, অস্বাভাবিকভাবে সিএসআর ব্যয়ের তালিকায় ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, এবি ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংকও রয়েছে। সিএসআর খাতে ব্যাংকগুলোর মোট ব্যয়ের অন্তত ৩০ শতাংশ শিক্ষা ও ২০ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এবার অধিকাংশ ব্যাংক তা মানেনি। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ছয় মাসে নিয়ম মেনে শিক্ষায় ব্যয় করেছে মাত্র ৮ ব্যাংক। আর স্বাস্থ্য খাতে খরচের নিয়মের মধ্যে রয়েছে ৫ ব্যাংক। এর মধ্যে লোকসানে থাকা ৮টি ব্যাংক স্বাভাবিকভাবেই সিএসআর খাতে কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি। এমনটি কাক্সিক্ষত নয়। করপোরেট সুশাসন ব্যতীত সিএসআরের সুফল মিলবে না। নীতিমালা না থাকায় এ অর্থের বড় অংশই ব্যয় হচ্ছে ব্যাংক উদ্যোক্তা ও শীর্ষ নির্বাহীদের ইচ্ছামতো। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের বৃত্তি, অবহেলিত ও অনগ্রসর এলাকার জনগণ ও নারী উন্নয়ন ইত্যাদি খাতে সিএসআর কার্যক্রমে অর্থ ব্যয় করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনা কয়টি ব্যাংক মানছে সেটা দেখার বিষয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের তদারকি জোরদার করতে হবে। আমরা চাই, সব ব্যাংক হিসাব অনুযায়ী ব্যয় করুক। সিএসআর ব্যয়ের যথাযথ নীতিমালা মেনে চলুক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App