×

জাতীয়

মাদারগঞ্জ থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:৪২ পিএম

মাদারগঞ্জ থেকে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প
জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের নাম আগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকেও শোনা যেত। কারণ পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের নিপুণ হাতে তৈরি মাটির জিনিসপত্র এলাকার চাহিদা মিটিয়ে যেত জেলার বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু এখন পালপাড়ার সেই নাম ডাক আর নেই। বিভিন্ন পূজা পার্বণে এখন আর সেখানে গানবাজনা হয় না। এখন তাদের পেটের ভাত জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়। কারণ এখন মাটির জিনিসের তেমন কদর নেই। এ জন্য এই গ্রামের মৃৎশিল্পীরা চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়। পালপাড়া গ্রামের অনেকেই এখন হোটেলে কাজ করছে। কেউ ভ্যানগাড়ি চালায়। কেউ আবার অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে। পালপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, তাদের থাকার ঘরের অবস্থা খুবই নাজুক। গায়ে নেই ভালো পোশাক। তারপরও তারা তাদের ছেলেমেয়েদের প্রতিদিন স্কুলে পাঠায়। তাদের আশা ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে চাকরি করবে। তখন তাদের আর কোনো দুঃখ কষ্ট থাকবে না। রতুল কুমার পাল বলেন, আগের মতো মাটিও পাওয়া যায় না। এখন মাটি টাকা দিয়ে কিনে আনতে হয়। কেনা মাটি দিয়ে তৈরি জিনিসের দামও পড়ে বেশি। তাছাড়া বাজারে প্লাস্টিকের জিনিসে ভরপুর। প্লাস্টিকের জিনিস দামেও কম। এ জন্য মানুষ আর মাটির তৈরি জিনিস কিনতে চায় না। এ জন্য মাটির জিনিস বিক্রির টাকায় এখন আর সংসার চলে না। মাঝেমধ্যে ভাবি এই পেশা বাদ দিয়ে অন্য কিছু করব। কিন্তু আবার মনে হয় বাপ-দাদার পেশা বাদ দিয়ে কী করব। অনেক কষ্ট সহ্য করে তাই বাপ-দাদার এই পেশা ধরে রেখেছি। দেবীরানী পাল বলেন, আগের মতো মাটির তৈরি জিনিস বিক্রি হয় না। আমরা না খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু ছেলেমেয়েদের তো আর না খাইয়ে রাখা যায় না। তাদের খাবার জোগাড় করতে মহাজনের কাছ থেকে চড়াসুদে টাকা ধার নিয়ে সংসার চালাতে হয়। সামনে পূজা। আমাদের এখন ব্যস্ত সময় কাটছে। আমরা এখন মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র মজুত করে রাখছি। আশাকরি পূজার বাজারে ভালো বিক্রি হবে। সরকার যদি আমাদের একটু সহযোগিতা করে তাহলে আমরা ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App