×

পুরনো খবর

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, পুনরুদ্ধারে তৎপর বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:২২ পিএম

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, পুনরুদ্ধারে তৎপর বিএনপি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর-সদর) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি অধ্যুষিত জেলার এ সংসদীয় আসনে চলছে বর্তমান সংসদ সদস্য ছাড়াও অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। নির্বাচনী এলাকায় চলছে গণসংযোগ, শুভেচ্ছা বিনিময়, গ্রুপিং-লবিংও। অপরদিকে ভোটারদের মধ্যেও চলছে নানা আলোচনা। কে কোন দলের মনোনয়ন পাচ্ছেন, কে হলে ভালো হয় তা নিয়েও চলছে নানা বিশ্লেষণ। জেলার রায়পুর উপজেলা ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসন। এখানে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ১৪ দল মনোনীত জাতীয় পার্টির (এরশাদ) বর্তমান জেলা সভাপতি মো. নোমান। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. এহসানুল কবির জগলুল, কুয়েত প্রবাসী ব্যবসায়ী শহীদ ইসলাম পাপুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক বর্তমানে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন সাবেক এমপি ও জেলা সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সহসম্পাদক ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ (ভিপি) ও কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদ। নির্বাচনের লক্ষ্যে এলাকায় তৎপর রয়েছেন তারা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে বড় দুই জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বর্তমান এমপির দল জাতীয় পার্টি নিতান্তই দুর্বল হওয়ায় আওয়ামী লীগের ওপরই ভর করতে হচ্ছে এমপি মো. নোমানকে । আগামীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের মধ্যে। এ আসনে জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য তেমন কোনো উন্নয়ন করতে না পারায় ১৪ দলীয় জোটকে এ আসন ধরে রাখতে হলে আগামী নির্বাচনে ভালো ইমেজসম্পন্ন প্রার্থী দিতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতারা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে গত নির্বাচনে মো. নোমানকে মেনে নিলেও এবার তারা চান নিজেদের দল থেকেই নেত্রী শেখ হাসিনা কাউকে মনোনয়ন দেবেন এবং নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করে নেত্রীকে এ আসন উপহার দেবেন তারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করেন। সম্প্রতি পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া দলীয় প্রোগামগুলোতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি চোথে পড়ার মতো। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় এলাকা ও বেশি ভোটার নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এমন ব্যক্তি হতে হবে যিনি মাঠে ময়দানে সব সময় থাকেন। নেতাকর্মীরা যাকে সুখে-দুঃখে কাছে পান, যারা মাঠ-ময়দানের সমস্যা বোঝেন। আমাকে দল মনোনয়ন দিলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলেও আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার জন্য কাজ করে যাব। সাবেক সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, আমি ১৯৯৬ সালের উপনির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছি। এ ছাড়া এ আসনটি রায়পুর উপজেলা ছাড়াও লক্ষ্ পুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। আমি এলাকার সার্বিক উন্নয়নে অতীতে কাজ করেছি। বর্তমানে দল তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী এবং এলাকার উন্নয়নে নিজেকে নিবেদিত রাখব। অতিসম্প্রতি এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের আশায় মাঠে নেমেছেন মারাফি কুয়েতিয়া কোম্পানির মালিক ধনাঢ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত কাজী শহিদুল ইসলাম পাপুল। তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমি নিতে আসিনি, কিছু দিতে এসেছি। জনগণের সেবা করতে চাই। এ ব্যাপারে জনগণের সহযোগিতা চাই, যাতে বৃহত্তর পরিসরে সেবা করতে পারি। আমি নিজস্ব তহবিল এবং সরকারি বরাদ্দ মিলিয়ে এলাকার জন্য বড় কিছু করতে চাই। এদিকে এডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, আমি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছি এবং দলীয় ও সাধারণ মানুষকে আইনগত সহায়তা দিয়ে তাদের মন জয় করে নিয়েছি। এ ছাড়া দলের বিভিন্ন কর্মসূচি ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড এ আসনের মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়া হলে আমি নির্বাচিত হয়ে দলকে এ আসনটি উপহার দেব। জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, এ এলাকা বিএনপির ঘাঁটি। ছাত্র রাজনীতি থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে দলের দায়িত্ব পালন করেছি। বিএনপির সব আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছি। আমি মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী। জোট সরকারের সময় প্রতিটি এলাকার বাড়ি, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হয়েছে। যদি ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে যায় তাহলে ভোটাররা অন্য কাউকে ভোট দেয়ার চিন্তা করবে না। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহআইনবিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রদল থেকে রাজনীতি করছি। বর্তমানে বিএনপির আইনবিষয়ক সহসম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আগামী নির্বাচনে নেত্রী তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে মনোনয়ন দিলে জয়লাভ করব। এ ছাড়া দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য কাজ করব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App