×

খেলা

ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:৪০ এএম

ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখলো টাইগাররা
উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৩ রানে হারিয়ে ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখল মাশরাফি-সাকিবরা। স্নায়ু-চাপকে পাশ কাটিয়ে কিভাবে ম্যাচ বের করে আনতে হয় তা দেখিয়ে দিল টাইগাররা। শেষ ওভারে আফগানদের জয়ে প্রয়োজন ছিল ৮ রানের। শেষ ওভারে বল করতে মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি। বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে রশিদ-নবীদের বোকা বানিয়ে ৫ রানে ওভার শেষ করে দলকে কাক্সিক্ষত জয় উপহার দেন কাটারমাস্টার। দিনের অন্য ম্যাচে ভারত পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। বুধবার টাইগাররা পাকিস্তানকে হারাতে পারলে ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনালে ভারতের মোকাবেলা করবে। আফগানদের হারিয়ে ছন্দে ফেরা টাইগারদের সামনে এবার ফাইনালের হাতছানি। গতকাল ক্ষণে ক্ষণে রং বদলের ম্যাচে এগারো মাস পর দলে ফিরে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দল থেকে বাদপড়া এ ব্যাটসম্যানকে দুবাইয়ে উড়িয়ে নিয়ে ভুল করেনি বিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। দলের চরম বিপদে ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ১২৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন। যা বাংলাদেশকে আফগানদের বিপক্ষে লড়াকু পুঁজি এনে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। রিয়াদ-ইমরুল জুটি ১৯ বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আল শাহরিয়ার রোকন এবং খালেদ মাসুদ পাইলটের ষষ্ঠ উইকেটে গড়া ১২৩ রানের রেকর্ডটিও গতকাল ভেঙে দিয়েছেন। ক্যারিয়ার জুড়ে ইমরুল কায়েস ওপেনিং থেকে ৩ নম্বর পজিশনে ব্যাট করলেও গতকাল আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে যা করলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা তাতে মুগ্ধ। নির্ভরতার প্রতীক মাহমুদউল্লাহ ৮১ বলে ৩ চার এবং ২ ছক্কার সাহায্যে ৭৪ রান করে সাজঘরে ফিরে গেলেও ধর্য্য হারাননি ইমরুল কায়েস। অন্য প্রান্ত আগলে রেখে ৮৯ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৪৯ রান । ২৫০ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে সতর্কতার সঙ্গে শুরু করেন আফগান ওপেনার ইহসান উল্লাহ এবং মোহাম্মদ শাহজাদ। দলীয় ২০ রানের মাথায় ইহসান উল্লাহকে সাজঘরে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন মোস্তাফিজুর রহমান। স্কোর বোর্ডে আরো ৬ রান যোগ হতে না হতেই রহমতশাহকে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে ভোগতে থাকা আফগানদের টেনে তোলার দায়িত্ব নেন শাহজাদ এবং হাসমতউল্লাহ। ৬৩ রান যোগ করা এ জুটিতে ফাটল ধরান মাহমুদউল্লাহ। ৮১ বলে ৫৩ রান করা শাহজাদকে আউট করেন রিয়াদ। শাহজাদের বিদায়ের পর আসগর আফগানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন হাসমতউল্লাহ। দলীয় ১৬৭ রানের মাথায় আসগরের উইকেট হারায় আফগানিস্তান। মাশরাফির বলে ৩৯ রান করে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আফগান অধিনায়ক। ৭১ রান করে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হাসমতউল্লাহকে মাশরাফি বোল্ড করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। গতকাল টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। আগের ম্যাচগুলোর মতো এদিনও তামিমের অভাবটা লক্ষ্য করা যায়। মাত্র ১৮ রানেই প্রথম দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন। তৃতীয় উইকেটে ধাক্কাটা সামলে উঠলেও লিটনের আউট হওয়ার পর ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রানের খাতা না খুলতেই সাজঘরে ফিরে যান সাকিব আল হাসান। এর পর ৬ রান যোগ হতে না হতেই মুশফিক নিজেই রান আউটের শিকার হন। আউট হওয়ার আগে ৩৩ রান করেন তিনি। এ ম্যাচে ওয়ানডে ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। সাকিব-মুশফিক রান আউট হওয়ার পর টাইগাররা যখন কোণঠাসা তখনই ষষ্ঠ উইকেট পার্টনারশিপে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় খেলতে থাকেন ইমরুল কায়েস। দুজন মিলে করেন ১২৮ রান। মাহমুদউল্লাহ ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। আর বাঁ-হাতি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস করেন ১৫তম হাফসেঞ্চুরি করেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৪৯ রান। দিনের অন্য ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রান সংগ্রহ করে সরফরাজ বাহিনী। ২৩৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে রোহিত শর্মা এবং শেখর ধাওয়ানের জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদে ১ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রবি শাস্ত্রীর শিষ্যরা। আগামীকাল আফগানিস্তান ভারতের মোকাবেলা করবে। দুই জয়ে ভারতের ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারাতে পারলে ২৮ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে খেলবে সাকিব-মাশরাফিরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App