×

মুক্তচিন্তা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে নিয়ে

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:৫৪ পিএম

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সব দলের জন্য সমান সুযোগের মধ্যে, সব দলের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হোক... ইত্যাদি হুক্কাহুয়া রব চলছে, চলুক- কোনো অসুবিধা নেই। নির্বাচন সুষ্ঠু হোক- এটা আন্তরিকভাবে কামনা করি। তবে আমি মনে করি, আমাদের রাজনীতির সুস্থ, স্বাভাবিক, উন্নতিশীল ধারায় উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ নতুন চিন্তা-ভাবনা ও কার্যক্রম দরকার।

এর আগে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের দশটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাদশ নির্বাচনকে আগেরগুলোর চেয়ে গুণগত দিক দিয়ে ভিন্ন রকম হবে, তা মনে করার কোনো কারণ দেখি না। কখনো কখনো বিদেশি ও দেশি নানা মহল থেকে কোনো কোনো নির্বাচন সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, ‘এবারের নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়েছে।’ ‘নির্বাচন খুব সুষ্ঠু হয়েছে’ বলে যারা সার্টিফিকেট দিয়েছেন, তারা কি সত্য কথা বলেছেন?

২০০১ সালের নির্বাচনে কয়েকটি বৈদেশিক শক্তি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে, ভীষণভাবে তৎপর ছিল? বৈদেশিক শক্তির এই তৎপরতা না থাকলে কি আওয়ামী লীগ, বিএনপি প্রভৃতি দল সুষ্ঠু নির্বাচন অনেক বড় কথা, কোনোরকম নির্বাচন করতে পারত? এতে কি কোনো সন্দেহ আছে যে, নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ও সরকারি প্রশাসন জাতীয় পার্টির প্রতি বৈধ আচরণ করেনি? নির্বাচনের পরে আওয়ামী লীগ সূক্ষ্ণ কারচুপির অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি। এ অবস্থায় নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলে প্রচার চালানো তো সমীচীন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জরুরি অবস্থায় সরকার ও তখনকার নির্বাচন কমিশন যে আচরণ করেছে, তা আওয়ামী লীগের অনুক‚লে পক্ষপাতমূলক ছিল। অন্য নির্বাচনগুলোর অনুক‚লে মত প্রকাশ তারাই করতে পারেন যারা পক্ষপাতদুষ্ট ও মতলববাজ। গত কয়েকটি নির্বাচনে প্রতিবার অন্তত দেড়শ লোকের প্রাণ গিয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে অন্তত দেড় হাজার লোকের প্রাণ গিয়েছে। ১৯৭১-এর কলাবরেটরদের বিচার এত অধিক প্রাণহানির বিশেষ কারণে হয়েছে। এই ঐতিহাসিক পটভ‚মি ও চলমান বাস্তবতার মধ্যে এটাই বলতে হয় যে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ, পক্ষপাতমুক্ত, সব দলের জন্য সমান সুযোগ সম্পন্ন হবে না, হতে পারে না। যাদের টাকা বেশি আছে, যাদের সঙ্গে অস্ত্রশস্ত্র ও পেশিশক্তি বেশি আছে, যাদের পক্ষে শক্তিশালী বৈদেশিক মহলের সক্রিয়তা বেশি আছে, সর্বোপরি যাদের প্রতি ওসি-ডিসিদের ও নির্বাচন কমিশনের লোকদের আনুকূল্য বেশি থাকবে, নির্বাচনে অবশ্যই তারাই ফল ভালো করবে। বাংলাদেশের গত সাতচল্লিশ বছরের ইতিহাস এই সিদ্ধান্তই ঘোষণা করছে। এর অন্যথা হওয়ার কোনো কারণ তো ঘটেনি। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচন নিয়ে একদিকে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী মহল এবং অপরদিকে ভারতীয় মহল ভীষণভাবে তৎপর থাকে। দুই মহলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। এবারের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত এই দুই মহল কী করে তা দেখার মতো ব্যাপার। বাংলাদেশের রাজনীতির গতি ও প্রকৃতি নির্ধারণের জন্য এক সময় স্থানীয় বৈদেশিক কূটনীতিকরা টুইসডে গ্রুপ গঠন করেছিল। টুইসডে গ্রুপ এখন কি লোপ পেয়েছে? সাম্রাজ্যবাদী কূটনৈতিক মহল কি এখন নিষ্ক্রিয়?

আওয়ামী লীগ একটানা প্রায় দশ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। ২০০৯ সাল থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে অত্যন্ত প্রবল দেখা যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই মহলের মধ্য আওয়ামী লীগ এমন কী করেছে যার ভিত্তিতে বলা যায় ক্ষমতাসীন এই দলটি দেশে সুষ্ঠু, অবাধ, পক্ষপাতমুক্ত, সব দলের জন্য সমান সুযোগ সৃৃষ্টি, নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে? নির্মম দমননীতি অবলম্বন করে দলটি ক্ষমতায় থেকেছে। কঠোর দমননীতির মধ্যে জনজীবন কি নিরাপদে ছিল? দেশে সাধারণ মানুষ- সমাজের নিচের স্তরের নব্বই শতাংশ মানুষ- এখন কেমন আছে? দেশে এত হিংসা-প্রতিহিংসা কেন? আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা ভোট চাইতে গিয়ে এমন কথাও বলছেন যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারালে এক লাখ লোকের প্রাণ হারাতে হবে? ওই এক লাখ লোকের প্রাণ রক্ষার জন্য জনসাধারণের আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা বাক্সে ভোট দিতে হবে। জনগণ লাখো লোকের প্রাণ রক্ষার কথা না ভেবে কি পারবে? আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি। বাকিরা?

বিএনপি গত বারো বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে আছে। এর মধ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে দলটির নেতৃত্ব বারবার ভুল করেছে। এ দলের ও এর শাখা-প্রশাখার ওপর সরকারের নির্যাতন অত্যন্ত নির্মম। এর মধ্যে দলটি কোনোক্রমে টিকে আছে। কিন্তু দলটির জনপ্রিয় হওয়ার মতো কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য এবং কার্যক্রম নেই। স্পষ্টভাবেই দলটি এই বারো বছরের মধ্যে রাজনৈতিক দিক দিয়ে কোনো উন্নতির পরিচয় দিতে পারেনি। দল হিসেবে এটি এমন কোনো শক্তির অধিকারী হয়নি যাতে এটি সুষ্ঠু, অবাধ, পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে। বিএনপি কি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষশক্তি? মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়া কি পাকিস্তানের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছিলেন? জিয়া কি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী? ভোটে গেলে লোকে এসব কথা বিবেচনা করবে না? জাতীয় পার্টির নেতারা সরকারে আছে খোয়াড়ের ছাগলের মতো। গৃহপালিত বিরোধী দলেরও অধম- খোয়াড়ে রক্ষিত বিরোধী দল। বাম দলগুলো আছে। এসব দল একত্রে সুষ্ঠু, অবাধ, পক্ষপাতমুক্ত নির্বাচন করবে? নির্বাচন হওয়ার ক্ষেত্রে আরো কিছু জটিলতা আছে। জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন আছে। কেউ কেউ লিখেছেন, লিখছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো কি এর মধ্যে নিজেদের রাজনৈতিক চরিত্র উন্নত করেছে? রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্বলতার কারণে স্বার্থান্বেষী বৃহৎ শক্তিবর্গ তাদের স্বার্থ হাসিল করে নেবে।

বৌদ্ধিক সম্প্রদায়ের চরিত্র কেমন? তারা কি উন্নত বৌদ্ধিক চরিত্রের পরিচয় দিচ্ছেন? বাঘা বাঘা সব বুদ্ধিজীবী! তাদের প্রতি দেশের শিক্ষিত লোকদের শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় পাওয়া যায় না। ফ্রয়েডের একটি উক্তি মনে পড়ছে। The Future of an Illusion গ্রন্থে ধর্মের প্রতি মানুষের মনোভাব লক্ষ করে শেষ পর্যন্ত ফ্রয়েড লিখেছেন : We may insist as often as we like that mans intellect is powerless in comparison with his intellectual life, and we may be right in this. Nevertheless, there is something peculiar about this weakness. The voice of the intellect is a soft one, but it does not rest til it has gained a hearing. Finally, after a countless succession of rebuffs, it succeeds. This is one of the few ponts on which one may be optimistic about the future of mankind, but it is in itself a point of no small importance. And from it one can derive yet other hopes. The primacy of the intellect lies, it is true, in distant, distant future, but probably not in an infinitely distant one. বাংলাদেশের প্রতাপশালী ক্ষমতাবান বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে যদি আমরা ফ্রয়েড কথিত voice of intellect খোঁজ করি, তাহলে কি এমন কিছুর সন্ধান পাওয়া যায় যা নিয়ে বর্তমান না হলেও ভবিষ্যতে, দূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্র, জাতি ও জনজীবনের জন্য কল্যাণকর কিছু আশা করা যায়? ফ্রয়েডকে কেউ কেউ নৈরাশ্যবাদী বলেছেন। আইনস্টাইন যুদ্ধের অবসান ও স্থায়ী শান্তির উপায় সন্ধান করতে গিয়ে ফ্রয়েডের মতো জানতে চেয়েছিলেন, মানবচরিত্র সম্পর্কে ফ্রয়েডের যে ধারণা ছিল তাতে আইনস্টাইনকে নগদ কোনো আশার বাণী শোনাতে পারেননি। মানুষের মূল্যবোধ ও নৈতিক চেতনার দুর্বলতা, বুদ্ধির ওপর আবেগের প্রবণতা, হীন স্বার্থবুদ্ধি, হুজুগ প্রবণতা, অন্ধবিশ্বাস অবলম্বন করে চলার আগ্রহ, বিচার প্রবণতার অভাব ইত্যাদি লক্ষ্য করে ধর্মান্ধতা ও রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার সম্পর্কেও তিনি নগদ কোনো আশার কথা বলতে পারেননি। তবে ধর্মীয় বদ্ধতা সম্পর্কে যে অন্তিম মন্তব্য তিনি করেছেন, যা উপরে উদ্ধৃত করলাম, তাকে কি নৈরাশ্যবাদী বলা যায়। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে বিবেকের যে ঘাটতি দেখা যায়, যে স্বার্থান্ধতা দেখা যায় তারও পরিবর্তন হবে, বিবেক শক্তিশালী হবে। ফ্রয়েড যে distant, distant future-এর কথা বলেছেন, বলেছেন not an infinitely distant one-এর কথা বলেছেন, তাতে আমাদের আস্থা রাখতে হবে। প্রশ্ন হলো চলমান রাজনীতি নিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি কতদিন থাকবে। দেশ আর রাষ্ট্র এক নয়। দেশ প্রকৃতির সৃষ্টি, রাষ্ট্র মানুষের। যে রাজনীতি নিয়ে আমরা আছি তাতে উন্নতির জোয়ার বইলেও রাষ্ট্রের টিকে থাকার সম্ভাবনা নেই। দেশ থাকবে, মাটি ও মানুষ থাকবে, গাছপালা, পশু-পাখি, আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-সূর্য থাকবে- থাকবে না রাষ্ট্র। রাষ্ট্র ছাড়া বিদেশিা সামনে গিয়ে আমরা কি ভালো থাকব। যদি বলি দল-নির্বিশেষে বাংলাদেশের শাসক শ্রেণি- rulling class স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তি তাহলে কি ভুল বলব? আমি ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কার স্বাধীনতার বিরুদ্ধশক্তির কথা বলছি না- বলছি ২০১৮ সালের স্বাধীনতার বিরুদ্ধশক্তির কথা।

বাংলাদেশের আজকের জনচেতনা, জনমন কি সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুক‚ল। জনপ্রিয় আবেগ, জনপ্রিয় হুজুগ, জনপ্রিয় অভ্যাস, জনপ্রিয় অন্ধবিশ্বাস, জনপ্রিয় কুসংস্কার, দুর্নীতিকে মেনে নেয়ার প্রবণতা, বড় কিছু অর্জনের জন্য ছোট কিছু ত্যাগ করার মানসিকতার অভাব, লোভ ও ভয়ে পরিচালিত হওয়া, এসব লক্ষ করলে বলা কি যায় যে, এই জনগণ অবাধ, সুষ্ঠু, পক্ষপাতমুক্ত, সব দলের জন্য সমান সুযোগসম্পন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানের যোগ্যতা রাখে?

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেরকম সরকার, যেরকম রাজনৈতিক দল, যেরকম রাজনীতি, যেরকম জনগণ দরকার তার কোনোটাই বাংলাদেশে নেই। এ অবস্থায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কীভাবে? নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সব দলের জন্য সমান সুযোগের মধ্যে, সব দলের অংশগ্রহণে সম্পন্ন হোক... ইত্যাদি হুক্কাহুয়া রব চলছে, চলুক- কোনো অসুবিধা নেই। নির্বাচন সুষ্ঠু হোক- এটা আন্তরিকভাবে কামনা করি। তবে আমি মনে করি, আমাদের রাজনীতির সুস্থ, স্বাভাবিক, উন্নতিশীল ধারায় উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ নতুন চিন্তা-ভাবনা ও কার্যক্রম দরকার। সে ধারায় আমি চিন্তা করি। আমার বিভিন্ন বইতে সে চিন্তার প্রকাশ আছে। ‘আটাশ দফা : আমাদের মুক্তি ও উন্নতির কর্মসূচি’ পুস্তিকায় আমার সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য সে ধারায় চিন্তা ও কর্ম অপরিহার্য। আমি এটাও বিশ্বাস করি, একদিন না একদিন বাংলাদেশে সে ধারার রাজনৈতিক চিন্তা ও কর্ম সামনে আসবে এবং জনসমর্থন লাভ করবে। তাতে দেশের রাজনীতি সুস্থ ও স্বাভাবিক হয়ে কাটবে এবং জনজীবন উন্নতির পথ পাবে। বাংলাদেশ হয়ে উঠবে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। রাজনৈতিক দল গঠনে কেন্দ্রীয় গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব দল আছে সেগুলো ভেতর থেকে পুনর্গঠিত হতে পারে। প্রয়োজনে নতুন দল গঠিতও হতে পারে।

রাষ্ট্র ব্যাপারটিকে নতুনভাবে বুঝতে হবে এবং বাংলাদেশকে জনগণের শক্তিমান রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক চিন্তা ও কাজকে পুনর্গঠিত করতে হবে। জাতীয়তাবাদ, আন্তর্জাতিকতাবাদ, বিশ্বায়ন ও ভবিষ্যৎ সম্পকের্র ধারণাকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। বাংলাদেশকে বাংলাদেশের জনগণের রাষ্ট্ররূপে গড়ে তোলার সম্ভাবনা আছে, সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে রাজনীতিকে পুনর্গঠিত করতে হবে।

চলমান উদার গণতন্ত্র গণবিরোধী। দরকার সর্বজনীন গণতন্ত্র বা শতভাগ মানুষের গণতন্ত্র বা জনগণের গণতন্ত্র। তার স্বরূপ ও রূপ আটাশ দফায় সংক্ষেপে বর্ণিত হয়েছে। প্রাসঙ্গিকভাবে আমার ‘জাতীয়তাবাদ আন্তর্জাতিকতাবাদ বিশ্বায়ন ও ভবিষ্যৎ’ এবং ‘নৈতক চেতনা ধর্ম ও আদর্শ’ বই দুটোর কথা উল্লেখ করতে চাই। এগুলোতে প্রয়োজনীয় অনেক বিষয় আলোচিত হয়েছে।

চলমান বিশ্বায়ন সাম্রাজ্যবাদেরই উচ্চতর স্তর। জাতিসংঘ পর্যবশিত হয়ে আছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর সঙ্গে। জাতিসংঘকে বিশ্ব সরকারে পরিণত করতে হবে। জাতিসংঘের কাছে একটি সেনাবাহিনী রেখে সব রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করতে হবে। বিশ্ব সরকার গঠিত হলেও গণতন্ত্র, জাতীয় সরকার, জাতীয় সংস্কৃতি, জাতীয় ভাষা বিকাশমান থাকবে। বিশ্ব সরকার হবে সব জাতীয় সরকারের ঊর্ধ্বতন এক সরকার। বিশ্ব সরকারের দায়িত্ব হবে স্বল্প। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতি এবং শান্তি রাখার দায়িত্ব পালন করবে বিশ্ব সরকার। এসব লক্ষ্য আমলে নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুনর্গঠিত করতে হবে।

আবুল কাসেম ফজলুল হক : প্রগতিশীল চিন্তাবিদ; সাবেক অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App