×

মুক্তচিন্তা

দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:১১ পিএম

মতিঝিল আইডিয়ালে ভর্তি কেলেঙ্কারি প্রতিবেদনটিতে আমাদের শিক্ষকদের দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে। দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি দিতে হবে। আমরা আশা করব যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটি ও শিক্ষকরা ভর্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে উদ্যোগী হবেন।

প্রতি বছরই ভর্তিবাণিজ্যের বিষয়টি ওপেন-সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ভর্তি হতে না পারলে ডোনেশনসহ নানা অনিয়মে ভর্তির খবর বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। খোদ রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে চলতি বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এক অভিভাবক। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা অঞ্চলের শিক্ষা অফিসের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল ইংলিশ ভার্সনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করছে বলে গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে প্রতিবারই এসব নিয়ে লেখালেখি করার পরও অদ্যাবধি পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। কেন হয়নি তা খতিয়ে দেখা জরুরি।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম এই দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তিনি, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম খান এবং কয়েক সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় টাকার বিনিময়ে অকৃতকার্যদের কৃতকার্য দেখিয়ে ভর্তি করে নিয়েছেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের মতিঝিল, বনশ্রী ও মুগদা শাখার চলতি বছরের ওই দুই শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের ঘষামাজা করা উত্তরপত্র পাওয়া গেছে। যেখানে ভুল উত্তর শুদ্ধ করে পরীক্ষার্থীকে পাস দেখিয়ে ভর্তি করা হয়েছে এবং এর বিনিময়ে মাথাপিছু তিন লাখ টাকা করে নেয়া হয়। এ রকম ৬৯টি উত্তরপত্র জব্দ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলা ভার্সনের ভর্তির দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে ১২২টি উত্তরপত্র পর্যালোচনা করে কমিটি প্রতিবেদনে মতামত দিয়ে জানায়, সার্বিক পর্যালোচনায় অভিযোগকারীর বক্তব্য, তার দাখিলকৃত জবাব ও রেকর্ডপত্র পরীক্ষা করে পরীক্ষার খাতায় ঘষামাজা সংক্রান্ত অভিযোগকারী শ্যামলী সিমুর আনীত অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগমকে আগামী সাত দিনের মধ্যে মতামত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংকটকে কেন্দ্র করে দেখা যায়, শিক্ষার্থী ভর্তির সময় এলেই শুরু হয় নানা অনিয়ম। এসব দেখার কেউ না থাকাতেই প্রকৃত অবস্থার কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। ভর্তিবাণিজ্যের বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। দেশের এবং খোদ রাজধানীর অনেক নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময়ে নেয়া অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে। এরপর অনেক ধরনের খবর বেরিয়েছে। প্রকৃত অর্থে অভিভাবকরা তাদের দেয়া বাড়তি অর্থ ফেরত পেয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। মতিঝিল আইডিয়ালে ভর্তি কেলেঙ্কারি প্রতিবেদনটিতে আমাদের শিক্ষকদের দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে। দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি দিতে হবে। আমরা আশা করব যে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটি ও শিক্ষকরা ভর্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে উদ্যোগী হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App