×

পুরনো খবর

মাঠে আওয়ামী লীগ লবিংয়ে বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:৩১ পিএম

মাঠে আওয়ামী লীগ লবিংয়ে বিএনপি
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে কে পাচ্ছেন মনোনয়ন তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন। কে নির্বাচিত হলে এলাকার বেশি উন্নয়ন হবে এমন আলোচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে সর্বত্র। তবে নির্বাচনী মাঠে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম এবং আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, ছেংগারচর ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ও বাংলাদেশ সিএনজি এসোসিয়েশনের মহাসচিব সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপুকে। তারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। খোঁজ-খবর নিচ্ছেন দলীয় নেতাকর্মীদের। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টিকে দেখা গেলেও বিএনপির লোকজন ব্যস্ত রয়েছেন মনোনয়ন লবিংয়ে। মতলব উত্তরের ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং মতলব দক্ষিণের ৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে চাঁদপুর-২ আসন গঠিত। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের শক্তিশালী প্রার্থী। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, তৃণমূলের ভোটে ও জনপ্রিয়তায় তিনি অনেক এগিয়ে আছেন। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, ছেংগারচর ডিগ্রি কলেজের সভাপতি ও বাংলাদেশ সিএনজি এসোসিয়েশনের মহাসচিব সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু, সাবেক সংসদ সদস্য এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এম রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট নূরুল আমিন রুহুলসহ আরো কয়েকজন। তবে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে তার জ্যেষ্ঠপুত্র সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু প্রার্থী হবেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণের রাজনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিকসহ অন্যান্য কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে নির্বাচনী মাঠে তারও রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। তৃণমূলের নেতাদের সুখে-দুঃখে দীপু চৌধুরী কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে চাঁদপুর-২ ও চাঁদপুর-৩ আসন পুনর্বিন্যাস করে মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলাকে চাঁদপুর-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম এমপি হয়ে প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং পরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী হন। ওই সময় তিনি বৃহত্তর মতলব উপজেলাকে ২টি উপজেলায় বিভক্ত করে ২টি পৌরসভাও ঘোষণা করেন। এর একটি হচ্ছে মতলব পৌরসভা অপরটি ছেংগারচর পৌরসভা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে চাঁদপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এম রফিকুল ইসলাম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর-বিক্রম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. জহির সরকার এবং যুগ্ম আহবায়ক চন্দন সাহা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা দীপু চৌধুরীকে চাই। তিনি দলের জন্য কাজ করছেন। এ আসনটি নেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে হলে দীপু চৌধুরীর কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল হুদার মৃত্যুর পর বিএনপি অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ে। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা ইতোমধ্যে কেন্দ্রে লবিং করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরুল হুদার জ্যেষ্ঠপুত্র তানভীর হুদা, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ড. জালাল উদ্দিন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ শুক্কুর পাটোওয়ারী, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ব্যারিস্টার ওবায়েদুর রহমান টিপু। এ আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন পার্টির চাঁদপুর জেলা শাখার সাবেক আহবায়ক মো. মিজানুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এমরান হোসেন মিয়া। বিগত নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, মতলব উত্তরে আওয়ামী লীগের ভোট বেশি। দক্ষিণে বেশি বিএনপির ভোট। ইতোমধ্যে মতলব দক্ষিণে আওয়ামী লীগের ভোট আগের তুলনায় বেড়েছে। তা ছাড়া মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণের ২টি উপজেলায় উপজেলা চেয়ারম্যান, ২টি পৌরসভার মেয়র ও ২০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ কারণে ভোটের জরিপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এগিয়ে রয়েছে। দলীয় ভোট সংগ্রহের কাজে ব্যাপক ভ‚মিকা রাখেন জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরা। কেননা, তারা সবাই আওয়ামী লীগ মনোনীত ও সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এবার পুরুষ ভোটারের পাশাপাশি মহিলা ভোটারকে কাছে টানার ব্যাপারে খুব বেশি মনোযোগী। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮১ হাজার ৪৭০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ২০০ এবং মহিলা ভোটার সংখা ১ লাখ ৯০ হাজার ২৭০ জন। নির্বাচনী এলাকার মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণে ঘুরে কথা বলে জানা গেছে, ভোটাররা চান উন্নয়ন। অধিকাংশ ভোটার বলেন, ‘যে সরকার উন্নয়ন করে, তাদেরই ভোট দিমু। আমরা উন্নয়নে বিশ্বাসী। গত কয়েক বছরে আমাগো এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, ক্রীড়া, কৃষি, শিক্ষা, মসজিদ-মন্দিরসহ সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন হইছে। আমরা যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দিমু।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App