×

খেলা

হাথুরুর চেয়ে রোডস ভালো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৪:০১ পিএম

হাথুরুর চেয়ে রোডস ভালো
টাইগারদের বর্তমান কোচ সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান স্টিভ রোডস দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই জয়ের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে তাকে সাবেক কোচ হাথুরুর চেয়ে পয়মন্ত বা সৌভাগ্যবান বলা যেতেই পারে। রোডস কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ক’দিনের মধ্যে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এরপর, চলমান এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত সূচনা করেছে টাইগাররা। অন্যদিকে হাথুরুসিংহে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে টিম বাংলাদেশ টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি, তিন ফরম্যাটে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরেছিল। বাংলাদেশের আগের তিন কোচের মধ্যে ডেভ হোয়াটমোর আর জেমি সিডন্সের পরিচিতি ও নাম-ডাক ছিল আগে থেকেই। সে তুলনায় কোচ হিসেবে হাথুরুর তেমন পরিচিতি ছিল না। টাইগারদের কোচিং করিয়েই আজ বিশ্বজোড়া পরিচিতি ও খ্যাতি মিলেছে এ লঙ্কান কোচের। স্টিভ রোডসও অনেকটা সেরকমই। কোচ হিসেবে তার পরিচিতিও বেশ কম। ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটেই যা কোচিং করিয়েছেন। ছিলেন ওস্টারশায়ারের কোচ। তবে এ ইংলিশ কোচের শুরুটা অন্যরকম। ঠিক হোয়াটমোর, সিডন্স কিংবা হাথুরুর মতো নয়। শুধু টাইগাররা জয়ের ধারায় বলে রোডসকে অন্যরকম ভাবার কারণ নেই। একটু পেছন ফিরে তাকালেই পরিষ্কার হবে আগের তিন কোচ শুধুই সাফল্যের পেছনে ছুটেছেন। কেউ একটি বা দুটি সিরিজ খারাপ খেললে তাকে বাদ দিয়ে যে ফর্মে আছে, তাকেই নিয়েছেন। তাতে করে কিছু প্রতিভা অকালে ঝরে না গেলেও তাদের জাতীয় দলে ফেরার পথ রুদ্ধ হয়েছে। যেমন শাহরিয়ার নাফীস, নাঈম ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাকরা আর ফিরতে পারেননি। কিন্তু শুরু দেখে মনে হচ্ছে, রোডস ঠিক ওই পথে হাঁটতে চান না। তার চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন। প্রথাগত পথে না হেঁটে চলতি এশিয়া কাপের আগে মাত্র কয়েকদিন সময় হাতে পেয়েই তিনি আরো কিছু ক্রিকেটারকে দেখতে চেয়েছেন। যদিও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২০-২২ জন ক্রিকেটারকে তার কাছ থেকে দেখা হয়েছিল। তারপরও তিনি এশিয়া কাপের আগে ৩১ জনের ক্যাম্প করেছেন। সেখানে আরও কিছু ক্রিকেটারকে দেখেছেন, যারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ছিল না। এই যে, বাকিদের খুঁটিয়ে দেখার চিন্তা, বিকল্প অনুসন্ধানের ইচ্ছে- সেটাই রোডসের স্বকীয়তা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। তিনি পূর্বসূরির মতো হাতে পাওয়া তৈরি পারফরমারদের দিয়ে মাঠে নামতে নারাজ। আরও কোনো ভালো বিকল্প বা ভালো পারফরমার আছে কিনা তা খুঁটিয়ে দেখতে আগ্রহী। রোডসের এই ভিন্ন পথে হাঁটার প্রবণতা, যারা বর্তমানে জাতীয় দলে খেলছে, তাদের সঙ্গে বাকি আরও কেউ আছে কিনা? তাদের মান যাচাই, কাছ থেকে পরখ করার এই ইচ্ছেটাই দেশের ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের জন্য কল্যাণকর এবং মঙ্গলজনক। এতে করে এক সময় ছিলেন অথচ বর্তমানে মূল দলের বাইরে এবং সম্ভাবনায় তরুণদের জাতীয় দলে খেলার ক্ষেত্র বিস্তৃত হবে। একই সঙ্গে জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে ভালো করার তাগিদ বাড়বে। সচেতনতা বাড়বে। আগের মতো কেউ আর নিজের অবস্থান নিশ্চিত ভাবতে পারবেন না। চন্ডিকা হাথুরুর দায়িত্ব ছাড়ার পর ৬ মাসেরও বেশি সময় কোচশূন্য ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। এরই মধ্যে ঘরের মাঠে প্রধান কোচ ছাড়াই তিন জাতি ক্রিকেট, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজে খেলেছে টাইগাররা। ওই সময় দায়িত্ব পালন করেছিলেন রিচার্ড হ্যালসল এবং খালেদ মাহমুদ সুজন। এরপর শ্রীলঙ্কার নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলতে গিয়েছিল কোর্টনি ওয়ালশের অধীনে। সেই টুর্নামেন্টের পরও কেটে গেছে অনেক। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আর কোচ হিসেবে পায়নি কাউকেই। সর্বশেষ কোচ নিয়োগ দেয়ার জন্য ভারতের বিশ^কাপজয়ী এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক কোচ গ্যারি কারস্টেনের স্মরণাপন্ন হয়। কারস্টেনের পরামর্শেই ইংল্যান্ডের সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান স্টিভ রোডসকে কোচ হিসেবে ২০১৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত নিয়োগ দেয় বিসিবি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App