×

অর্থনীতি

রপ্তানিতে বেপজার অবদান রেকর্ড ২০ শতাংশ ছুঁয়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:২৭ পিএম

রপ্তানিতে বেপজার অবদান রেকর্ড ২০ শতাংশ ছুঁয়েছে
দেশের জাতীয় রপ্তানিতে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) অবদান ছুঁয়েছে ১৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বেপজার অধীন ৮টি ইপিজেডে চালু ৪৭৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে রপ্তানি হয়েছে ৭২০৮ দশমিক ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য। এই সময়ে মোট জাতীয় রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৬৬৬৮ দশমিক ১৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর আগে ইপিজেড থেকে সর্বোচ্চ রপ্তানি হয়েছিল ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৬৬৭৬ দশমিক ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং জাতীয় রপ্তানিতে সর্বোচ্চ অবদান ছিল ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ। বেপজা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূূত্রে আরো জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে ইপিজেডের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো রপ্তানি করেছে ৭২০৮.২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য। এ ছাড়া জুন ২০১৮ পর্যন্ত বেপজার মোট পুঞ্জীভ‚ত রপ্তানির পরিমাণ ৬৬৫৭৫ দশমিক ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বেপজা ২০১৭-১৮ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিনিয়োগ ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করেছে। ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইপিজেডের চালু ও বাস্তবায়নাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহে বিনিয়োগ হয়েছে ৩৩৯ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর ভোরের কাগজকে জানান, জাতীয় রপ্তানিতে বেপজার অবদান এখন প্রায় ২০ শতাংশ। কারণ অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ইপিজেডগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। বিনিয়োগ বাড়লে রপ্তানি আয় বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। এর ফলে একদিকে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি, অন্যদিকে বিনিয়োগের উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের নাম ছড়িয়ে পড়ছে। তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরেও অন্যান্য শিল্পে শ্রমিকদের দক্ষতা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মুখে মুখে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ইপিজেডে বিনিয়োগের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা। আমরা তা করতে সক্ষম হয়েছি। চলতি অর্থবছর বেপজার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০০ মিলিয়ন ডলার। আশা করছি, এবারো রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বিদেশিরা স্টাডি করেই এখানে বিনিয়োগ করে। তারা দেখেছে আমাদের শ্রমিকরা সুশৃঙ্খল। ইপিজেডগুলোতে কোনো ট্রেড ইউনিয়ন নেই। এর অর্থ শ্রমিকদের মধ্যে কোনো ধরনের অসন্তোষ নেই। শ্রমিকরা সঠিক সময়ে বেতনভাতা পাচ্ছে। গত ৭ বছরে ইপিজেডের শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে ৭০-৯০ ভাগ। আমাদের সফলতা আছে বলেই আমরা একাধিক ইপিজেড নির্মাণ করেছি। তা না হলে ১/২টির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকত। সফলতার কারণে সরকার আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল করার জায়গা দিয়েছে। নাজমা বিনতে আলমগীর আরো বলেন, বেপজার মূল স্লোগান ‘শ্রমিক-মালিক ব্যবস্থাপনার ঐক্যতান’। ইপিজেডগুলোয় আমাদের ব্যবস্থাপনা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে। আমরা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির সুব্যবস্থা করেছি। আমাদের ৫টি ইপিজেডে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল রয়েছে। স্কুল, কলেজে শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা ৫০ শতাংশ ছাড়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। হাসপাতালে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা। আরো রয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার। আমাদের ইপিজেডে কোনো লোডশেডিং নেই। আছে নিজস্ব ফায়ার সিস্টেম। গত ৩০ বছরে অগ্নিদুর্ঘটনায় কোনো শ্রমিক মারা যায়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বাইরের ইপিজেডগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সৃষ্টিতে বেপজা উদ্যোগ নিয়েছে। মোংলা, ঈশ্বরদী ও রংপুর ইপিজেডে অর্ধেক টাকায় জমি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এ দিকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নির্মাণ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ‘বেপজা ইকোনমিক জোন’। যার আয়তন ১ হাজার ১৫০ একর। যেখানে ৮টি ইপিজেডের মোট জমির পরিমাণ ২৩০০ একর। এ ব্যাপারে বেপজা মহাব্যবস্থাপক বলেন, এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় ইপিজেড। মূলত ইলেক্ট্রনিক্স, অটো-মোবাইলসের মতো ভারী শিল্পকে এখানে প্রাধান্য দেয়া হবে। এখানে আমরা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছি ৪৫০ মিলিয়ন ডলার, যেখানে কর্মসংস্থান কবে প্রায় ৫ লাখ মানুষের। আগামী দুই বছরের মধ্যে এটি বিনিয়োগ উপযোগী হিসেবে গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, এটি চালু হলে আরো বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসবে, দেশে শিল্পায়ন সৃষ্টি হবে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাড়বে, সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App