×

মুক্তচিন্তা

দেশ বাঁচাও গণতন্ত্র বাঁচাও স্লোগানের আসল লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে হটাও

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:৪২ পিএম

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতি দুটো পরস্পরবিরোধী মহাশক্তির কৌশলে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। একটি ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ১৪ দলীয় জোট, এরশাদ এই জোটের সঙ্গে তখন থেকে ক্ষমতাকেন্দ্রিক স্বার্থে থাকলেও এবার তার থাকা না থাকা নির্ভর করবে একই হিসাব। অন্যটি শেখ হাসিনাবিরোধী সব দল ও নেতাদের নিয়ে গড়ে ওঠা নতুন-পুরাতন শক্তিসমূহের দৃশ্যমান-অদৃশ্যমান মহাঐক্যজোট। প্রথম ধারায় নতুন করে তেমন কোনো দলের সংযুক্তি না ঘটলেও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক, উদারবাদী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অপরিহার্যতা যারা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন তাদের নানা জনের নানা সমালোচনা-হতাশা থাকার পরও দ্বিতীয় নির্ভর করার শক্তির অনুপস্থিতিতে শেখ হাসিনাই তাদের একমাত্র ভরসার জায়গা। অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতির মেরুকরণকৃত জোটশক্তির বিরুদ্ধে জামায়াত-বিএনপির ২০ দলীয় জোট এক দশক ধরে দৃশ্যমান আছে। তবে এই শক্তির উত্থান ১৯৭৫-এর পরপরই। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০ দলীয় জোটের প্রধান দুই দল বিএনপি চেয়ারপারসন জেলে থাকায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দণ্ডপ্রাপ্ত এবং দেশের বাইরে থাকায় এক ধরনের সংকটে রয়েছে, জোটের দ্বিতীয় শক্তি জামায়াত যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে নিবন্ধন হারিয়েছে। এই অবস্থায় ২০ দলীয় জোটকে রক্ষার মানসে হয়তো দ্বিধাগ্রস্তভাবে এগুচ্ছেন গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন, বিএনপির সাবেক নেতা এবং বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. বি. চৌধুরী, জাসদ নেতা আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ। ড. কামাল হোসেন এবং ডা. বি. চৌধুরী এখনো পর্যন্ত জামায়াত থাকলে তারা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য প্রক্রিয়া করবেন না বলছেন সত্য, তবে এই না না বলা হয়তো এক মাস-দুমাস পর নাও উচ্চারিত হতে পারে। বাংলাদেশ উগ্র হঠকারী রাজনীতির দুই পেছনে পড়া নেতা রব-মান্না অবস্থা দৃশ্যে মনে হচ্ছে ড. কামাল-বি. চৌধরীকে ম্যানেজ করার দায়িত্বে সফল হবেন। হতে পারে এটিই ঐক্য প্রক্রিয়ার তাত্ত্বিক রাজনীতির কৌশল। কিছুদিন না না বলবেন, তারপর নির্বাচনী ঢোল যখন বেশি জোরে বাজবে তখন শেখ হাসিনাবিরোধী সব রাজনৈতিক দলও নেতাদের মহাশক্তিধর মেরুকরণকৃত শক্তির অবস্থান দৃশ্যমান হবে, এদের না না রাজনীতিতে কিছু ব্যক্তিগত সমীকরণ থাকলেও এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের জন্য এটি একেবারেই স্বাভাবিক ২০ দলের জন্যও স্বাভাবিক আদর্শ।

বিএনপি টোটাল আওয়ামী বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির একটি প্লাটফর্ম হিসেবে চার দশক ধরে ভোট, রাজনীতি ও রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল এবং আছে। এর ফলে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারা থেকে প্রায় পুরোপুরিই দূরে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে, জামায়াতের নির্ভর করার এরচাইতে আস্থাবান মিত্র আর কে হতে পারে? সে কারণেই দুই রাজনৈতিক দলে কেমিস্ট্রি এমন অবিভাজ্য। উভয় দলই তাদের প্রধান শত্রু বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, ৪ জাতীয় নীতি। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু পরিবারের নিকটাত্মীয়স্বজনের এত রক্তের ওপর বীজ বুনে বিএনপির জন্ম, জামায়াতের পুনরুজ্জীবন ঘটা বা ঘটানোর সূক্ষ্ণ রাজনীতি যাদের বিবেকে নাড়া দেয় না, যুক্তিতে ধরা পড়ে না, তাদের কলকব্জা কতখানি মেকি, ভোঁতা, প্রতারণায় ভরপুর সেটি ভাবতেই অবাক হতে হয়। আমাদের দেশে বিএনপিকে যারা গণতন্ত্রের রাজনীতির জন্য নির্ভরযোগ্য মনে করে তাদের কাছে গণতন্ত্রের নতুন নতুন শিক্ষা নিতে হবে, গণতন্ত্র নামক রাজনৈতিক মতাদর্শের সব বই-পুস্তক বাতিল বলে গণ্য করতে হবে। এমন মতামত দানের জন্য অনেক সুশীল-সুশীলা আমাকে ‘অন্ধ আওয়ামী ভক্তের’ তকমা লাগিয়ে গালমন্দ করবেন। আমার সৌভাগ্য, আমি তেমন প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তি নই- যাকে খুব বেশি মানুষ চেনেন। আজকাল পত্রপত্রিকার লেখালেখি খুব বেশি মানুষ পড়েও না, তাই দৃষ্টির বাইরেই আমার থাকার সম্ভাবনা। তবে আমার অভিজ্ঞতা, লেখাপড়া এবং রাজনীতি দর্শন, ইতিহাস বিষয়ক পড়াশোনা থেকে যে শিক্ষা লাভ করেছি তা থেকে যে প্রতীতী হয়েছে তা দিয়েই বলছি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বিকল্প আর একটি উদারবাদী, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বিশ্বাসী জনবান্ধব দল না থাকায় আমাদের গণতন্ত্র একরৈখিক দুর্বল অবস্থানে চলছে, বিএনপির হাতে তা সাম্প্রদায়িকতায় জর্জরিত হয়, বিকৃত মুক্তিযুদ্ধের জাতীয়তাবাদের গণতন্ত্রের এবং প্রচার-প্রচারণার দেশে পরিণত হয়। ১৯৮১ সালের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের পুনরুজ্জীবন ঘটলেও দেশের রাজনীতিতে একদিকে সাম্প্রদায়িকতার ভাবাদর্শের চাষবাস, সুবিধাবাদ, বিভ্রান্ত প্রজন্ম, সামরিক শাসনে তছনছকৃত রাজনীতির মাঠঘাট, অন্যদিকে রাষ্ট্রশক্তির চরম প্রতিকূলতা কাটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারার পুনরুজ্জীবন ঘটানোর এক দীর্ঘ অধ্যায় পার করে শেখ হাসিনা যে আওয়ামী লীগ পেরেছেন তা একেবারেই মিশ্রশক্তির আদলে গড়া- যা অসাম্প্রদায়িকতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, প্রগতিশীল বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও কল্যাণবাদী সমাজ অর্থনীতির আদর্শের বাংলাদেশ গড়ার শক্তিতে পরিণত হতে কয়েক যুগের নিরন্তর আদর্শ চর্চার প্রক্রিয়ায় কেবল গড়ে উঠতে পারে। শেখ হাসিনার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় প্রথম আসার পর মুক্তিযুদ্ধের কথা, বঙ্গবন্ধুর কথা প্রথম উচ্চারণের পরিবেশ পায়, ২০০১-২০০৬ সময়ে তা আবার গুঁড়িয়ে দেয়া হয়, ২০০৯ পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারার পুনরুজ্জীবন ঘটানোর লড়াই নতুনভাবে শুরু করা, আর্থ-সামাজিকভাবে উন্নয়ন ঘটানোর মিশন-ভিশন নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু থেকে এক ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটানোর পর যখন শেখ হাসিনাকে শুধু রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকেই হটানো নয়, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার জীবন নাশেরও চেষ্টা করে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট এরাই সেই প্রমাণ রেখেছিল, ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত নানা দেশি-বিদেশি শক্তির সহায়তায় তাকে উৎখাত ও হত্যার চেষ্টা বারবার করে আসছে। যখন এমন সব শক্তির ভাষা শুনি, দেশ বাঁচানো, গণতন্ত্র বাঁচানোর কান্না শুনি তখন বাংলাদেশের জন্য কষ্ট হয়, ১৯৭১-এর শহীদদের জন্য কষ্ট হয়। কারণ ২০০১-২০০৬ সময়ের সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদের হাতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতন্ত্রই শুধু নয়, অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে হত্যা করার দগদগে অভিজ্ঞতা থাকার পরও যখন কোনো কোনো নেতা এখন সেই সব দলকে নিয়ে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ জন্য ঐক্য প্রক্রিয়া গঠন করার কথা বলেন, জামায়াতকে বাদ দিলে মূল শক্তি বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচনী জোট করতে আপত্তি নেই ইত্যাদি বলেন তখন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেও নিরাপদ নয়- সে কথা বলতে আমাকে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হতে হবে না। আমাদের রাজনীতিতে অনেকেই নিজেদের বড় নেতা মনে করেন। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে কে কতখানি অবদান রেখেছেন সেটির বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন করলে খুব বেশি ভালো কথা লেখার মতো উপাদান খুঁজে পাই না। শেখ হাসিনার সব কাজ, সবকিছুই বিনা দ্বিধায় হয়তো মেনে নেয়ার মতো নয়। তিনিও ভুল ত্রুটির ঊর্ধ্বে নন, তার দলের নেতাকর্মীদের অনেকের কর্মকাণ্ডে তিনি সমালোচিত হন। কিন্তু এককভাবে ১৯৭৫ পরবর্তী বিপরীত স্রোতের বাস্তবতায় ১৯৮১ পরবর্তী সময়ে পুনরুজ্জীবিত করা, লড়াই-সংগ্রামে সংঘটিত করা এবং রাষ্ট্র ক্ষমতায় তিনবারই যেসব মৌলিক পরিবর্তন এনেছেন, দেশটাকে মুক্তিযুদ্ধের ধারায় উদারবাদী ভাবাদর্শের কল্যাণবাদী চরিত্রের আর্থসামাজিক ভাবাদর্শে আনার নীতি-পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছেন তা কি ১৯৭৫-এর পর কেউ করার কথা একবারও ভাবতে পেরেছেন? বাংলাদেশ যদি শেখ হাসিনাকেও জীবিত না পেত তাহলে অনেক আগেই দ্বিতীয় পাকিস্তানের চরিত্র নিয়ে আবির্ভূত হতে দেখত। সেই কাজটি জিয়া শুরু করেছিলেন, এর জন্য তিনি বিএনপি নামক একটি টোটাল আওয়ামীবিরোধী প্লাটফর্ম গঠন করেছিলেন, অসাম্প্রদায়িক ধারার সব শক্তিকে ছিন্নভিন্ন করে দেয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন, তার দুঃখজনক মৃত্যুর পর এরশাদ হাল ধরলেন, সেই ভাবাদর্শকে বাংলাদেশের রাজনীতির মাটিতে পুষ্টতাদান করেছেন, ১৯৯১-এ খালেদা জিয়ার নির্বাচনে জিতে আসার পর সাম্প্রদায়িক ধারার নির্ভরযোগ্য দলের মর্যাদা লাভ করে। তা দেখে আমাদের সুশীল-সুশীলারা বগল বাজাতে শুরু করেন।

গণতন্ত্রে রাজনীতি তাদের কাছে এমনই এক সরল অঙ্কের সমীকরণ- যা তিন দশকেও যোগ অঙ্ক কষতে পারার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেনি। গণতন্ত্রের রাজনীতি, সবচাইতে বড় বিপদ হচ্ছে এতে ছদ্মাবরণে বেড়ে উঠে অনেক বেশি হঠকারী শক্তি, সাম্প্রদায়িক, উগ্র জাতীয়তাবাদী, উগ্র জঙ্গিবাদী এবং নানা ধরনের সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। এখন ব্রিটেনকে অনেকেই মনে করেন যে, দেশটি নিকট-ভবিষ্যতে বিস্ফোরিত হতে পারে। তাতে সারা বিশ্বের জন্যই গণতন্ত্রকে আরো হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের নামে যত গণতান্ত্রিক ব্যক্তি রয়েছেন তারচাইতে ঢের বেশি জঙ্গিবাদী, সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসবই গণতন্ত্রের জন্য বিষফোঁড়া রূপে বেড়ে উঠছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে ব্রিটেনের সমাজ, আমেরিকা, কানাডাসহ আরো বেশ কিছু দেশও এখন এ নিয়ে শঙ্কিত। তাদের অবস্থা যদি এমন হয়, আমাদের অবস্থা কী হতে পারে- তা ভাবতেই শিউরে উঠতে হয়। আমাদের মতো পশ্চাৎপদ ভাবাদর্শের সমাজে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার গতি সামনের চাইতে পেছনেই বেশি হাঁটে। ১৯৭৫-এর আগে আমরা হাঁটি হাঁটি পা পা করে কেবলি দাঁড়াতে শিখছিলাম, জিয়াউর রহমান সাম্প্রদায়িকতার মোড়কে গণতন্ত্রকে নতুনভাবে হাঁটাই শেখায়নি, রাষ্ট্র ও সমাজকে পাকাপোক্তভাবে বেড়ে ওঠার পথ দেখিয়ে গেছে। সেটি করতে গিয়ে ২০০১-২০০৬ সালে জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরিরা কতটা বেপরোয়া হয়ে পড়েছিল, আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না- এমন কথাও উচ্চারণ করেছিল- সেই ব্যবস্থাই ২১-এর আগস্ট সংঘটিত করার মাধ্যমে করছিল- ইয়াজউদ্দীনকে দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার ছক বাস্তবায়ন করছিল, কিন্তু ১/১১ তাতে বাদ সাধে। এরপর ২০১২-১৪, ১৫-তে শেষ চেষ্টা করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার পেছনে রাজনীতির কূটকৌশল লুকায়িত ছিল, দেশে একটি বড় ধরনের হানাহানির প্লট তৈরি করা হচ্ছিল। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পুনরায় ২০১৫ সালে চেষ্টা হয়েছিল। শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থানের কারণে এসব ষড়যন্ত্রই নস্যাৎ হয়ে যায়। আমি বলব দেশ একটি বড় ধরনের হানাহানি থেকে যেমন বেঁচে গেছে, একই সঙ্গে উন্নয়ন ধারাবাহিকতাও বজায় থেকেছে।

এখন বিএনপি-জামায়াত নতুন কৌশলে অগ্রসর হচ্ছে। বৃহত্তর ঐক্যের নামে শেখ হাসিনা বিরোধী সব ছোট ছোট দল এবং তাদেরই ‘বড় বড়’ নেতাদের সম্মুখে নিয়ে আসতে যাচ্ছে। সেখানে স্লোগান হিসেবে জনপ্রিয় বিষয়গুলোকেই বেছে নেয়া হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে দেশ বাঁচাও, অন্যটি হচ্ছে গণতন্ত্র বাঁচাও। এর জন্য তারা শেখ হাসিনাকে হটানোর স্লোগান তুলে ধরতে যাচ্ছে। তাদের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার জায়গা থাকার কথা নয়। তারা মনে করেন দেশ কেবল তারাই বাঁচাতে পারবেন, গণতন্ত্রই তারা রক্ষা করবেন। সাম্প্রদায়িকতা, হঠকারিতা, উগ্র জঙ্গিপনা, উগ্র মতাদর্শের অনুসারী দেশের জন্য জীবনে কিছুই ত্যাগ করেনি, একটি ঢিলও ছোড়েনি, সেই দেশপ্রেম তাদের কেবলি কথার কথা, কাজের গোয়েলে শূন্য ছাড়া কিছুই না। তাদের শাসনামলে গণতন্ত্র এগোয়নি, পিছিয়েছে। দেশ কেবলি একটি শব্দ নয়, একটি প্রেমও, রাজনীতিতে তা দেশপ্রেম বলে খ্যাত। সেটি দেখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ বেশকিছু আত্মত্যাগী নেতা। কিন্তু এখন যারা দেশ ও গণতন্ত্রের রক্ষার নামে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে একত্রিত হচ্ছেন তাদের ত্যাগের চাইতে অর্জন ও ভোগ বেশি তা তলিয়ে দেখার কোনো বিকল্প নেই।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App