×

জাতীয়

অস্তিত্বহীন মিলের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে রমরমা বাণিজ্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:২৫ পিএম

অস্তিত্বহীন মিলের নামে বরাদ্দ দেখিয়ে রমরমা বাণিজ্য
মিল-চাতাল কিছুই নেই কিন্তু রয়েছে বরাদ্দ। ভৌতিক অস্তিত্বহীন এমন মিলের নামে বরাদ্দ দিয়ে বছরের পর বছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন নীলফামারী খাদ্য বিভাগের অনেকেই। এ রকম অস্তিত্বহীন একটি মিলের নামে ভুয়া বরাদ্দ দেয়ার ঘটনা চাউর হয়ে গেছে গোটা জেলায়। জানা যায়, ভাগের বনিবনা নিয়ে বিরোধে মিত্ররাই গোমড় ফাঁস করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগের কুকীর্তি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার, ব্যানার সাঁটিয়ে ওই অপকর্মের আবার বিচারও চেয়েছেন কতিপয় চালকল ব্যবসায়ী। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নীলফামারী জেলা খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী বছরের পর বছর এ কর্মের সঙ্গে জড়িত। অভিযোগ উঠেছে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের অস্তিত্বহীন মেসার্স মাইদা অটোরাইস মিলের নামে ১২৪ দশমিক ৫৩০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয় সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে বিক্রির জন্য। জানা যায়, চলতি অর্থবছরে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে চাল বিক্রির জন্য সদর উপজেলার ১৫৬টি হাসকিং মিল ও ৯টি অটোরাইস মিলকে তালিকাভুক্ত করে ৬ হাজার ৪০০ টন চাল ও ৩০ টন আতব চাল বরাদ্দ দেয় জেলা খাদ্যদপ্তর। এর মধ্যে ৫৭ নম্বর তালিকায় থাকা সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের মেসার্স মাইদা অটোরাইস মিলের নামে ১২৪ দশমিক ৫৩০ টন চাল বরাদ্দ প্রদান করা হয়। স্থানীয় মিল মালিকরা জানান, এই নামে সদর উপজেলার কোথাও কোনো অটোরাইস মিল নেই। তাদের অভিযোগ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নটখানা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী মনির হোসেন অস্তিত্বহীন ভুয়া মাইদা অটোরাইস মিলের নামে এই বরাদ্দ নেন। এ রকম বেশ কয়েকটি অস্তিত্বহীন মিলের নামে বছরের পর বছর বরাদ্দ নিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী ও খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে গেলে খাদ্য বিভাগ মাইদা অটোরাইস মিলের বরাদ্দটি ‘রাফি’ নামে অন্য একটি অটোরাইস মিলে স্থানান্তর করে। কিন্তু ভুয়া মিল-মালিক মনির হোসেন রাফি অটোরাইস মিলের নামেও এর আগে দুদফায় চাল বরাদ্দ নিয়ে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টিও ফাঁস হয়ে যায়। কয়েক জন মিল-মালিক ও খাদ্য বিভাগের কয়েক জন কর্মকর্তা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা আর চাপা থাকেনি। এ ঘটনায় মিল মালিক ও ধান-চাল ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তৌহিদুর রহমান, সাংবাদিকদের জানান, ভুয়া অটোরাইস মিলের নামে বরাদ্দ প্রদানের ঘটনাটি জানার পর তা বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। ওই বরাদ্দ অন্য কোনো মিলে স্থানান্তর করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দীন জানান, ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App