×

বিনোদন

থিয়েটার ছাড়া আমাদের দিন কখনোই কাটেনি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৫:০৮ পিএম

থিয়েটার ছাড়া আমাদের দিন কখনোই কাটেনি
রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে আজ শনিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে ম্যাড থেটারের নাটক ‘নদ্দিউ নতিম’। কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘কে কথা কয়’ উপন্যাস অবলম্বনে নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও মেঘদূত। তারা তিনজনই এক পরিবারের সদস্য। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে এটি একটি অন্যরকম ঘটনা। কবি, নাট্যকার, নির্দেশক ও সংগঠন আসাদুল ইসলাম স¤প্রতি ভোরের কাগজের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহনাজ জাহান
বর্তমান ব্যস্ততার খবর জানতে চাই? চার দিনের আসাম সফর শেষে গত ১০ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরলাম। ৮ সেপ্টেম্বর প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পী ভ‚পেন হাজারিকার ৯২তম জন্মদিনে শিল্পীর শহর আসামের গৌহাটিতে ব্যতিক্রম সামাজিক সংস্থা আয়োজন করেছিল ‘সম্পর্ক’ নামের একটি অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আর আজ ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের ৪৪তম প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনীতে দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। ম্যাড থেটার প্রসঙ্গে জানতে চাই? এটি নতুন নাট্যদল। আগামী ৩০ অক্টোবর ম্যাড থেটারের তিন বছর পূর্ণ হবে। প্রথম বর্ষপূর্তিতে আমরা ‘বন্ধুর পথে বন্ধু’ শিরোনামে একটি মিলনমেলার আয়োজন করি। দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন করি ভারতের গৌহাটিতে। এবছর একটি বিশেষ প্রদর্শনীর মাধ্যমে তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপন করার চিন্তা করছি। ‘নদ্দিউ নতিম’ ম্যাড থেটারের প্রথম প্রযোজনা। এই প্রযোজনাটির বয়সও তিন বছর হলো। মঞ্চে নির্দেশনার ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদ কেন বেছে নিলেন? ‘নদ্দিউ নতিম’ ম্যাড থেটারে নির্দেশিত আমার প্রথম নাটক হলেও সুবচন নাট্যদলে আমি আরো ২টি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছি। গত ২৫ বছর যাবৎ আমি সুবচনের সঙ্গে যুক্ত। অভিনয়, নাট্য রচনা ও নির্দেশনা সম্পর্কিত যাবতীয় শিক্ষা আমি সুবচন থেকে পেয়েছি। আর হুমায়ূন আহমেদ আমার প্রিয় লেখক, আমার স্ত্রীর প্রিয় লেখক, আমার কন্যার প্রিয় লেখক। মোট কথা আমাদের পুরো পরিবারটিই হুমায়ূন প্রেমিক। আমাদের পরিবারের সদস্যরা মিলে প্রতিষ্ঠা করি ম্যাড থেটার। স্বাভাবিকভাবেই আমরা প্রথম প্রযোজনা হিসেবে হুমায়ূন আহমেদকেই বেছে নিই। ‘নদ্দিউ নতিম’ মঞ্চে আসার পর সাড়া কেমন পেয়েছেন? অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আমরা এই নাটকে অভিনয়কে প্রধান উপজীব্য করে একটি পারিবারিক গল্পকে সরলভাবে উপস্থাপন করেছি। এখানে কোনো ভেলকি বাজি, ভাঁড়ামো দেখানো হয়নি, সাবলীলভাবে ঘটনার উপস্থাপন এবং তার নান্দনিক বিকাশ দেখিয়েছি। আর তাতেই দর্শকরা বুঝেছে অভিনয়ের শক্তি, গল্পের গাঁথুনি কী রকম হতে পারে নাটকে। নাটকটি নিয়ে দেশের বাইরেও প্রদর্শনী করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা শুনতে চাই? আমরা লন্ডন, গৌহাটি ও আগরতলায় ৭টি প্রদর্শনী করেছি। প্রতিটি প্রদর্শনীতে দর্শকদের কাছ থেকে আমরা ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। লন্ডনের ভিনদেশি বিদেশি দর্শকরাও নাটকটি দেখেছেন। গৌহাটিতে দর্শকরা নাটকের প্রতিটি ডায়লগ, প্রতিটি মুভমেন্ট পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করেছে। আগরতলার দর্শকরা নাটকটি দেখেছে এক নিঃশ্বাসে, হতবাক হয়েছে নাটকের অচেনা ও আচমকা পরিণতি দেখে। নাটকের তিনি অভিনয়শিল্পী একই পরিবারের সদস্য। এ নিয়ে যদি কিছু বলেন? আমার পরিবারের সদস্যরা মিলে এই নাটকটিতে অভিনয় করেছি। ফলে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের একত্র করার জন্য আলাদা কোনো পরিশ্রম করতে হয়নি। আর শুধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নাটক, আমার মনে হয় না এর আগে কেউ করেছে। সেদিক দিয়ে আমরা ভাগ্যবান, পরিবারের সদস্যদের সবারই থিয়েটারের প্রতি রয়েছে নিজস্ব ভালোবাসা, মমত্ববোধ। আমাদের সংসারে একবেলা রান্না না হলেও দিন পার করেছি, কিন্তু একবেলা থিয়েটার ছাড়া আমাদের দিন কখনোই কাটেনি। আপনি তো লেখালেখির সঙ্গেও যুক্ত। এ প্রসঙ্গে জানতে চাই? গত আট বছর যাবৎ একুশের বইমেলায় কবিতার বই প্রকাশ হয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী বইমেলার জন্য কবিতার বই বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ ছাড়া নতুন একটি নাটক লেখার মধ্যে আছি। এ বছরের মধ্যে যাতে নাটকটি মঞ্চে আসে সে চেষ্টা করব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App