×

জাতীয়

মামলার তোয়াক্কা করে না চালকরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:১০ পিএম

মামলার তোয়াক্কা করে না চালকরা

রাজধানীতে বাসচালকরা ট্রাফিক পুলিশের দেয়া মামলার তোয়াক্কা করে না। বাস-ট্রাক-মিনিবাসের চালকরা একাধিক মামলার কাগজ পকেটে নিয়ে নিশ্চিন্তে রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছে। মামলার পর অনেক চালক ইচ্ছে করেই জরিমানা দেয় না এবং ট্রাফিক পুলিশের অফিস থেকে গাড়ির কাগজপত্র ও নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্স তোলে না। অনেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে যাওয়ার কথা বলে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পর জিডির কপি দেখিয়েই পাড় পেয়ে যাচ্ছে। ফলে কাগজপত্র ছাড়াই রাজধানীর রাস্তায় বহু যানবাহন চলাচল করছে। চালকদের এ ধরনের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না।

অন্যদিকে বাস টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার সময় চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করার ঘোষণা দেয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। এ ধরনের ঘোষণার বিষয়টি গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের অনেক বাসচালক জানেই না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে প্রতিদিন ট্রাফিক আইন অমান্য করা, চালক ও যানবাহনের বৈধ কাগজপত্র না থাকা, অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে ১ হাজারেরও বেশি মামলা হয়। ট্রাফিক সার্জেন্টরা মামলা দেয়ার সময় গাড়ির সব কাগজপত্র জব্ধ করে। সার্জেন্টের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে চালক বা মালিককে ট্রাফিক অফিসে জরিমানা পরিশোধ করে জব্ধকৃত কাগজপত্র তুলে নিতে হয়। প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও হাল্কা যানবাহনের চালকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জরিমানা দিয়ে কাগজ তুলে নিলেও বাস, মিনিবাস ও ট্রাক চালকরা বিষয়টি তোয়াক্কা করে না। মাসের পর মাস চলে গেলেও তারা মামলা নিষ্পত্তিতে অংশ নেয় না। রাস্তায় ট্রাফিক সার্জেন্টরা কখনো গাড়ি আটকালে মামলার কাগজ দেখিয়ে পাড় পেয়ে যায়। এভাবে একের পর এক মামলা হওয়ার পরেও চালকরা বেপরোয়া মনোভাব নিয়েই রাজধানীর সড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এদের কারণেই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরছে না। গুলিস্তান-এয়ারপোর্ট রুটের মিনিবাস চালক রফিক চারটি মামলার কাগজ দেখিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। একটিও ভাঙানো হয়নি। পুলিশ ধরলে মামলার কাগজ বের করে দেখাই। সময় চাই। সময় দেয়। কিছু সার্জেন্ট গাড়ি জব্ধ করার কথা বলে। তখন দুই চারশ টাকা ধরিয়ে দেই।

ঢাকা-গাজীপুর রুটের বাসচালক মিজান জানান, ট্রাফিক সার্জেন্ট ৩টি মামলা করেছে। এখনো কাগজপত্র তোলা হয়নি। ৭ মাস ধরে কাগজপত্র ছাড়াই তিনি বাস চালাচ্ছেন। মালিককে মামলার ব্যাপারে জানানো হয়েছে। তিনি জরিমানা দিয়ে কাগজ তুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

ডিএমপির পূর্ব বিভাগের একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিদিনই সড়কে অভিযান চালায়। এ ধরনের যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এমনকি ডাম্পিংয়ের জন্যও পাঠানো হয়। বাস-ট্রাক-মিনিবাস আটক করলে অনেক সময় মালিকরা মামলা ভাঙানোর আশ্বাস দেয়। গাড়ি না চললে ব্যাংকলোনের কিস্তি দিতে পারবে না বলে জানায়। তখন আমরা ছেড়ে দেই। তবে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক আন্দোলনের পর সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে পুলিশ আরো কঠোর হয়েছে। একাধিক মামলা নিয়ে চলাচল করছে এমন যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় যাত্রীবাহী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রার আগে চালকদের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার ঘোষণা দেয়া হলেও এখন তা আর মানা হচ্ছে না। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এই ঘোষণা দিলেও নব্বই ভাগ বাসচালকই এই বিষয়টি জানেন না। রাজধানীর গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন শত শত বাস যাত্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে। এসব বাসের বেশিরভাগ চালকেরই যেমন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, তেমনি বাসেরও ফিটনেস নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App