×

জাতীয়

ভাঙনকবলিত নড়িয়ার মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই চান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:২০ পিএম

ভাঙনকবলিত নড়িয়ার মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই চান
চাল, ডাল, তেল নয়। আশ্রয় ও পুনর্বাসনের দাবি ভাঙনকবলিত নড়িয়াবাসীর। অব্যাহত পদ্মার ভাঙনে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এলাকার বাঁশতলায় এক সপ্তাহ বিরতির পর নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত বুধবার ২০০ বসতঘর সরিয়ে নিয়েছেন ভাঙনকবলিতরা। ৪০টি পাকা ঘর, কয়েক হাজার গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। পুনর্বাসনের নেই কোনো ব্যবস্থা। খোলা আকাশের নিচে খাওয়া-দাওয়া ও থাকা চলছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম। জানা যায়, গত এক সপ্তাহে মূলফতগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বহু লোকের সাজানো-গোছানো ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। গত সোমবার রাতে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। হাসপাতাল ক্যাম্পাসের একটি আবাসিক ভবনে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগ চালু রাখা হলেও প্রবেশ সড়কটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন না। হাসপাতালের আরো ১১টি ভবন ঝুঁকিতে রয়েছে। ফাটল দেখা দিয়েছে আরো একটি ভবন। হাসপাতালের সামনে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলার কাজ অব্যাহত রেখেছে। ভাঙনকবলিত ক্ষতিগ্রস্তরা বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। বাজারের পাকা দোকানগুলো ভেঙে নিজেদের উদ্যোগে সবাই ইট ও রড সরিয়ে নিচ্ছেন। আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে বেড়াচ্ছেন হাজারো মানুষ। অনেকেই না খেয়ে পায়ের নিচে মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ভাঙনকবলিতরা অভিযোগ করে বলেন, শুনেছি মন্ত্রী-এমপিরা এসেছেন। আমাদের কোনো খোঁজখবর নিলেন না। আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে গেলেন না। তারা ভোটের সময় আসে, তারপর আর দেখা যায় না। আমরা খাবার চাই না, মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই। কেদারপুর গ্রামের সব হারানো সুফিয়া বেগম জানান, ২০ শতক জায়গার ওপর বড় বাড়ি ছিল। মূলফতগঞ্জ বাজারে দোকান ছিল স্বামী সোহেল মিয়ার। সবই কেড়ে নিয়েছে পদ্মা। দুমাসের ব্যবধানে আমরা আজ ঠিকানাহীন। নড়িয়া বাঁশতলা এলাকার মায়া বেগম বলেন, সর্বনাশা পদ্মা আমাদের সবাইকে এখন এক কাতারে দাঁড় করিয়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, রাস্তা সবই চলে গেছে পদ্মায়। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের থাকারও জায়গা নেই। শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর পানি না কমা পর্যন্ত তীররক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব না। এ মুহূর্তে ভাঙনরোধ সম্ভব না হলেও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে তীব্রতা কমানোর চেষ্টা চলছে। পানি কমলেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। জেলা প্রশাসন কাজী আবু তাহের বলেন, ভাঙনকবলিতদের আশ্রয়ের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। ভাঙনকবলিত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল ও শুকনা খাবার দেয়া হয়েছে। আর পুনর্বাসন সহায়তা হিসেবে টিন ও নগদ টাকা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App