×

জাতীয়

দুদিনেও উদ্ধার হয়নি আবাসন কেন্দ্রের ৫ পলাতক কিশোরী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:১০ পিএম

দুদিনেও উদ্ধার হয়নি আবাসন কেন্দ্রের ৫ পলাতক কিশোরী
গাজীপুর মহানগরের মোগরখাল এলাকার মহিলা, শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে গত শুক্রবার রাতে পালিয়ে যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ৫ কিশোরীকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ শনি ও রবিবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও তাদের উদ্ধার করতে পারেনি। পালিয়ে যাওয়া ১৭ জনের মধ্যে শুক্রবার রাতেই পুলিশ শহরের ওয়ারলেস এলাকা থেকে ৩ জন ও আবাসন কেন্দ্রের বাইরের রাস্তা থেকে একজনকে আটক করে। শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর রেলস্টেশন থেকে স্থানীয় পুলিশ আরো ৮ জনকে আটক করে। পালিয়ে যাওয়ার পর দুদিন পার হলেও উদ্ধার হয়নি বাকি পলাতক ৫ কিশোরী। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, পলাতকদের মধ্যে দুজনের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে। তবে তাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। আবাসন সমস্যা, বিনোদনের অভাব ও বাজেট ঘাটতির কারণে নিরাপদ আবাসনের কিশোরীরা পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি। জানা গেছে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত গাজীপুরের মোগরখালের এই নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে থাকেন ৩৪ জন নিবাসী। গত শুক্রবার রাতে নিবাসের রুমের জানালার গ্রিল কেটে ১৭ কিশোরী পালিয়ে যায়। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে ৮ জন এবং বাকিদের গাজীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর দুদিন পার হলেও অপর ৫ জন কিশোরীকে উদ্ধার করা যায়নি। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানাজ আক্তার জানান, পলাতক ৫ জনের মধ্যে ২ জন ১৮ বছর বয়সী বাকপ্রতিবন্ধী। বাকি ৩ জন হচ্ছে রিমা (১২) পিতা মৃত হাসু, রিয়ামণি (১২) পিতা শাহাদাত মানিক ও হাসনা হেনা সুমি (১৪) পিতা শাহজাহান শেখ। তাদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জয়দেবপুর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, আটক ১২ কিশোরীকে আবাসন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আটক কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের পর বছর তারা চার দেয়ালে বন্দি। এখানে ফ্যান নেই, আবাসন নিয়ে রয়েছে নানা সমস্যা। তাই পরস্পর পরামর্শ করে তারা পালিয়ে যায়। এখানে কেউ তিন বছর, কেউ চার বছর ধরে আছে বলে জানায় তারা। নিজেদের নিরপরাধ দাবি করে তারা বলে, মামলা না থাকলেও বাইরের জগৎ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন। তাই স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়েছে তারা। এদিকে এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক ফরিদা খানম। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ নিবাসীদের ব্যাপারে সচেতন। তবে ১৭ জন কীভাবে পালাল তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। নিরাপত্তায় এখানে কোনো ঘাটতি ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ছিল। এরই মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদারে আলম মো. মাকসুদ চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া মহিলা অধিদপ্তর থেকেও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে আবাসন সমস্যা, চিত্তবিনোদনের অভাব, বাজেট ঘাটতিসহ বেশ কয়েকটি সমস্যা চিহ্নিত করেছে তদন্ত দল। এগুলো সমাধানে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত দলের প্রধান দিদারে আলম মো. মাকসুদ চৌধুরী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App