×

জাতীয়

রাজস্ব আয় কমছে, বেড়েছে জনদুর্ভোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:৩৮ পিএম

রাজস্ব আয় কমছে, বেড়েছে জনদুর্ভোগ
অপার সম্ভাবনা থাকা সত্তে¡ও সমস্যা যেন কাটছে না দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি স্থলবন্দরের। ফলে আশানুরূপ রাজস্ব আসছে না এই বন্দর থেকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এক মাত্র সড়ক অব্যবস্থাপনার কারণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আমদানি খাতে প্রতি অর্থবছরে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় তা বরাবরই জোড়াতালি দিয়ে পূরণ করতে হয় হিলি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে। সীমান্তের চেকপোস্ট জিরো পয়েন্ট থেকে পানামা পোর্ট পর্যন্ত চার লেন সড়ক তৈরি করার আশ্বাস মিলেছে বহুবার কিন্তু কোনোই সুফল আসেনি আজো। ফলে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকরা। আর বন্দরের সড়ক সংকটের কারণে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ায় বছরে ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। তবে মেগা প্রকল্প নিয়ে কাজ করলে হিলি স্থলবন্দর থেকে সরকারকে অতিরিক্ত ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেয়া সম্ভব বলে জানান স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। ১৯৮৬ সাল থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলেও দেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিশাল সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে তৎকালীন সরকার এই বন্দরকে ২০০৭ সালের ২৬ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে বেসরকারি অপারেটর পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডকে ২৫ বছরের জন্য লিজ দেয়। শুধু মাত্র সড়কগুলো প্রশস্থ না হওয়ায় বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানির পাশাপাশি কমেছে রপ্তানি। হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি খাতে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা, রপ্তানি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় ১৩ কোটি ২৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। পাসপোর্টে যাত্রী বহিঃগমনের খাতে আয় হয়েছে সাড়ে ৪ কোটি ৩১ হাজার ৫০০ টাকা। হিলি-হাকিমপুর পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, হিলি স্থলবন্দরকে কেন্দ্র করে এখানে সব কিছুই গড়ে উঠেছে। তবে সড়কগুলো খাল-খন্দেকে ভরপুর, সংস্কারের অভাবে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। তবে জনস্বার্থে কিছু কাজ করছেন স্থানীয় হিলি স্থলবন্দর উন্নয়ন সমন্বয় পরিষদ। আমদানিকারক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মনোয়ার চৌধুরী, মোবারক হোসেন ও রেজাউল করিম গামা বলেন, হিলি চেকপোস্ট জিরো পয়েন্ট থেকে হিলি পানামা পোর্ট এবং হিলি থেকে দিনাজপুর, জয়পুরহাট ও ঘোড়াঘাট হয়ে ঢাকায় যাওয়ার সড়কগুলো চার লেন হলে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং এই বন্দর থেকে সরকার আরো ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আয় করতে সক্ষম হবে। দেশের চাহিদা অনুযায়ী আমদানি হচ্ছে শুধু পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ, খৈল, ভূষি, পাথর, চাল, মোটরযান যন্ত্রাংশসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। আমদানির সিংহভাগ পণ্যই রয়েছে শুল্কমুক্ত। কিন্তু আমদানি হচ্ছে না অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য। তেমনি সারা ভারতে চাহিদা রয়েছে এদেশের রাইসব্রাণ ওয়েল, চিটাগুড়, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কাপড়ের ঝুট, সুতা, কলা, শাকসবজি, পেঁয়াজের ফুল, কৃষি পণ্য ও কৃষিযন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক জাত পণ্যসহ নানা পণ্যের। আর এখন রপ্তানি হচ্ছে মাত্র তিনটি পণ্য রাইসব্র্যাণ ওয়েল, সুতা ও পানির পাম্প। সম্প্রতি গত রবিবার সর্বশেষ আশার বাণী শোনান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ। তিনি হিলি স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে বলেন, সীমান্ত চেকপোস্টের ভারত অংশের রাস্তা এবং বাংলাদেশ অংশের রাস্তা স্থলবন্দর হিসেবে খুব চাপানো, তবে রাস্তা প্রশস্তকরণে পদক্ষেপ নেবেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App