×

খেলা

এশিয়া কাপে মুশফিকের সামনে মাইলফলকের হাতছানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০২:৫৭ পিএম

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে মুশফিকুর রহিম নিজেকে একটা কারণে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। কেননা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়েছে ক্রিকেটের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ভেন্যু হিসেবে খ্যাত লর্ডসে। সময়টা ২০০৫ সালের ২৬ মে। ওই দিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে টেস্ট খেলতে নামে টাইগাররা। ওই ম্যাচেই অভিষেক হয়েছে মুশফিকুর রহিমের। এর প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তার। এরপর দেখতে দেখতে কেটে গেছে প্রায় ১২ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে মুশফিকের ক্যারিয়ারে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে। এসেছে দুঃসময়ও। আর এসবের মধ্য দিয়ে আরো পরিণত হয়েছেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপ। আসন্ন এশিয়া কাপকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রত্যাশিতভাবেই দলে জায়গা পেয়েছেন মুশফিক। এশিয়া কাপে খেলতে যাওয়ার আগে একটি মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। ১৭২ রান করতে পারলেই তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর রহিম। এখন পর্যন্ত কেবল দুজন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান পূর্ণ করতে পেরেছেন। এরা হলেন- দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল ও দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২০১৬ সালের অক্টোবরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজারি ক্লাবে নাম লেখান তামিম ইকবাল এবং ২০১৭ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এই কীর্তি গড়েছেন সাকিব আল হাসান। এখন তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সাকিব-তামিমের পাশে নাম লেখানো থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। আসন্ন এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে ২টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। যদি গ্রুপ পর্ব পার হয়ে সুপার ফোরে উঠতে পারে তাহলে খেলবে আরো ৩টি ম্যাচ। সুপার ফোরের বাধা পার হতে পারলে খেলবে ফাইনাল। বলা উচিত, সুপার ফোর পর্যন্ত যাওয়ার বেশ ভালো সুযোগ রয়েছে মাশরাফি বাহিনীর সামনে। সে হিসেবে ফাইনালে না গেলেও খেলতে পারবে ৫টি ম্যাচ। আর এ পাঁচ ম্যাচে ১৭২ রান করাটা খুব একটা কঠিন হবে না মুশফিকুর রহিমের জন্য। তাই টাইগার সমর্থকদের প্রত্যাশা এশিয়া কাপেই ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর রহিম। টাইগারদের মিডলঅর্ডারে মুশফিক এখন এক ভরসার নাম। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই তার ওপর টিম ম্যানেজমেন্ট ও সমর্থকদের আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাট করার অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে তার। দ্রæত রান তোলার ক্ষেত্রেও ওস্তাদ মুশফিক। বাংলাদেশ সবশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তিন ম্যাচের ওই সিরিজে অবশ্য খুব একটা খারাপ খেলেননি মুশফিক। প্রথম ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ রান, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলেছেন ৬৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তবে শেষ ওয়ানডেতে মাত্র ১২ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এখন পর্যন্ত ১৮৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। টাইগার ক্রিকেটারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলেছেন কেবল মাশরাফি। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত ১৮৮টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ১৮৭টি ওয়ানডেতে ৪৮২৮ রান সংগ্রহের ক্ষেত্রে ৫টি সেঞ্চুরি ও ২৯টি হাফ-সেঞ্চুরি রয়েছে মুশফিকুর রহিমের। মুশফিক তার ক্যারিয়ার সেরা ১১৭ রানের ইনিংসি খেলেছেন ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে। ২০১২ সালে শিরোপা জয়ের খুব কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ওই বছর নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরেছিল টাইগাররা। সে আক্ষেপ পূরণের লক্ষ্য নিয়েই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের এশিয়া কাপে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর যে কয়জন ক্রিকেটার টাইগার সমর্থকদের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে মুশফিক একজন। এশিয়া কাপে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়াবেন মুশফিক- এমনই প্রত্যাশা সবার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App