×

পুরনো খবর

আওয়ামী লীগ বিএনপি জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০১৮, ০১:৩৩ পিএম

আওয়ামী লীগ বিএনপি জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারে
আওয়ামী লীগ বিএনপি জাপার মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে প্রচার-প্রচারণায় নেমে পড়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। নির্বাচনকে ঘিরে ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এ আসনে বড় দুই দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় দলে বিভক্তিও দেখা দিয়েছে। বর্তমান সংসদ সদস্য একাব্বর হোসেন পরপর তিনবার নির্বিঘেœ এমপি নির্বাচিত হলেও এবার পড়েছেন চ্যালেঞ্জের মুখে। নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার দূরত্ব বেড়েছে। আর এ সুযোগে বঞ্চিত নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ব্যবসায়ী নেতা খান আহমেদ শুভ। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদও রয়েছেন চ্যালেঞ্জের মুখে। চায়ের দোকান, সেলুন, খাবার হোটেল ও রাজনৈতিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় জল্পনা-কল্পনা চলছে আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন। এ আসনটি দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ মো. একাব্বর হোসেন। এবারে তার সামনে সম্ভাব্য প্রার্থী মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুকের ছেলে জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও টাঙ্গাইল জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খান আহমেদ শুভ। নির্বাচনী মাঠ গোছাতে ইতোমধ্যেই তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয়। সভা, সমাবেশ ও ওয়াজ মাহফিলে হাজির হচ্ছেন তারা। বিএনপিও এ আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অপরদিকে বিএনপি থেকে নির্বাচনী মাঠে যারা প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান সাইদ সোহরাব। তিনি কেন্দ্রীয় রাজনীতির পাশাপাশি মির্জাপুরে সভা-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন। এ আসনে ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের ফজলুর রহমান খান, ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন বিএনপির শাহ মোস্তানজিদুল হক খিজির মিয়া, ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে মো. ওয়াজেদ আলী খান পন্নী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হন খন্দকার বদর উদ্দিন, ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হন বিএনপি থেকে মো. আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী । ২০০১ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে আলহাজ মো. একাব্বর হোসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালে তিনিই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হন। মো. একাব্বর হোসেন এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হয়ে বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় স্কুল, ব্রিজ, রাস্তাঘাটসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমি ২০০৯ থেকে যে উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছি এর আগে কেউ মির্জাপুরের জন্য এতটা করতে পারেননি। দলীয় নেতাকর্মীরা আমার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছেন। তাই আগামীতে আমি মনোনয়ন পাব এবং বিপুল ভোটে মির্জাপুরের মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করি। অপরদিকে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দিন-রাত সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন খান আহমেদ শুভ। ইতোমধ্যে খান আহমেদ শুভ তার বাবার পথে হাঁটছেন বলে সাধারণ জনগণের মাঝে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, গণসংযোগে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এ আসনে নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অপরদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করে চলেছেন। এতে দলীয় নেতাকর্মীরা সক্রিয় এবং মূল্যায়িত হচ্ছেন বলে তারা উল্লেখ করেন। তবে মির্জাপুর আসনটি বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। মির্জাপুরের ২ গ্রামের শক্তিশালী ২ সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যাপক গণসংয়োগ করে চলেছেন। গোড়াইল গ্রাম থেকে বিএনপির প্রার্থী সাবেক দুবারের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী ও পোস্টকামুরী গ্রাম থেকে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সাঈদুর রহমান সাঈদ সোহরাব। আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী বলেন, দল থেকে চারবার মনোনয়ন পেয়ে আমি দুবার নির্বাচিত হয়েছি। আর দুবার আমাকে কারচুপির মাধ্যমে পরাজিত করা হয়েছে। মির্জাপুরে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চান। বিএনপির কেন্দ্রীয় সব কর্মসূচি প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে আমার নেতৃত্বে মির্জাপুরে পালন করা হয়। উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে নেত্রীর নির্দেশে সরকারের বিরুদ্ধে যে কোনো আন্দোলনে মির্জাপুরে বিএনপি প্রস্তুত। উপজেলা সভাপতি হিসেবে মির্জাপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছি। কাজেই আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনেও খালেদা জিয়া তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে তিনি আশাবাদী। কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মো. সাঈদুর রহমান সাঈদ সোহরাব দলের মনোনয়ন প্রত্যাশায় এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে তিনি দলীয় হাইকমান্ডেও মনোনয়ন প্রত্যাশায় জোর লবিং শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে দল প্রথমে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে মনোনয়ন পরিবর্তন করা হলে দলের বৃহত্তর স্বার্থে আমি মেনে নেই এবং পক্ষে কাজ করি। তাই আমার বিশ্বাস, দলের হাইকমান্ড আমার কাজের মূল্যায়ন করে আগামী নির্বাচনে এ আসন থেকে আমাকেই মনোনয়ন দেবেন। বিএনপির আরেক প্রভাবশালী নেতা ফিরোজ হায়দার খানও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। অপরদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেতে উঠেপড়ে লেগেছেন জাতীয় পার্টির দুজন কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জহির ও মো. নুরুল ইসলাম নুরু।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App