×

জাতীয়

জ্বালানি সংকটে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০১৮, ১২:১৯ পিএম

জ্বালানি সংকটে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ
৮ দিন চালু থাকার পর জ্বালানি সংকটে পড়ে পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে লো-ভোল্টেজ সমস্যা এড়াতে গত ২০ আগস্ট বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৩টি ইউনিটের মধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হয়েছিল। এর আগে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের সীমাহীন দায়িত্বহীনতায় জ্বালানি সংকটে পড়ে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি গত ২২ জুলাই রাত ১০টা ২০ মিনিটে বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে এক লাখ টন কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে টেন্ডার আহŸান করা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। বড়পুকুরিয়া খনিতে উৎপাদনে যে কোনো সমস্যা মোকাবেলায় আপদকালীন মজুদ হিসেবে এই কয়লা বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার জানান, বড়পুকুরিয়া খনির ফেজ উন্নয়নকালীনপ্রাপ্ত প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টন ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইয়ার্ডে মিলে প্রায় ৬ হাজার টন কয়লা মজুদ নিয়ে ২নং ইউনিটটি সাময়িকভাবে চালু করা হয়েছিল। কয়লা না থাকায় গত রাতে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বড়পুকুরিয়া খনির ওপর নির্ভর করে খনির পাশে কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ও ১২৫ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট রয়েছে। কেন্দ্রটি পূর্ণ উৎপাদনে থাকলে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার ২০০ টন কয়লার প্রয়োজন হয়। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) সাইফুল ইসলাম জানান, খনির ১৩১৪ নম্বর ফেইসে উৎপাদন যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ চলছে। যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ শেষ করতে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি লেগে যাবে। এরপর কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। উল্লেখ্য, কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে উপনীত হলে খনির ইয়ার্ড থেকে প্রায় ২৩০ কোটি টাকার ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা উধাও/পদ্ধতিগত লোকসান হওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়ে। এ ঘটনায় ১৯ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কয়লা খনি কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। খনির এই ৩ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে ২৪ জুলাই পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার উপপরিচালক শামসুল আলম। খনির সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামান এবং মামলায় অভিযুক্ত ১৯ কর্মকর্তাসহ ২১ কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুদক। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন-ডিজি) খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি, পেট্রোবাংলার পরিচালক (মাইন অপারেশন) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার উপপরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি করে মোট ৩টি কমিটি গঠন করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App