আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী একাধিক, বিএনপির ২
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০১৮, ০৫:০৭ পিএম
সাতক্ষীরা-৩ আসনে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী থাকলেও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন কয়েকজন। বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন দুজন। প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে না পারলেও বসে নেই জামায়াত। ভোটার ও কর্মীদের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তুলতে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন এসব প্রার্থী। সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের দুই ধারে এভাবে ভরে গেছে রং-বেরংয়ের পোস্টারে। তবে এসব পোস্টারের অধিকাংশ বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক আ ফ ম রুহুল হকের। অন্য প্রার্থীদের পোস্টার তেমন একটা চোখে না পড়লেও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন তারা। শুধু সড়ক-মহাসড়ক নয়, জনগণকে শুভেচ্ছা জানাতে রুহুল হকের নানা রংয়ের পোস্টার শোভা পাচ্ছে গ্রামগঞ্জেও।
সাতক্ষীরা-৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯০ হাজার। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার। আর নারী ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক নৌকা প্রতীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালেও তিনি ১ লাখ ৪২ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জামায়াতের এ এফ এম রিয়াছাত আলী। তিনি পেয়েছিলেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ভোট। ২০০১ সালে সংসদ সদস্য ছিলেন রিয়াছাত আলী। তিনি ৭৩ হাজার ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের ডা. মোখলেছুর রহমানকে (৫৬ হাজার) পরাজিত করেছিলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ৪ জন। এর মধ্যে ৩ জনই হেভিওয়েট প্রার্থী। প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেনÑ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ এবং নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ। এ ছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মোস্তাকিম। জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট স ম সালাউদ্দীন। বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের মনোনয়ন আশা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ড্যাব নেতা বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. শহিদুল আলম ও হাইকোর্টের আইনজীবী বরুণ মন্ডল। প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে না পারলেও মাঠে রয়েছেন জামায়াতের হাফেজ রবিউল বাশার। গণফোরামের প্রার্থী রয়েছেন যামিনী মন্ডল।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, বিগত ৯ বছরে সাতক্ষীরা-৩ আসনে যে উন্নয়ন হয়েছে তা স্বাধীনতার পরে ৩৮ বছরেও হয়নি। তিনি বলেন, তিনি মন্ত্রী থাকাকালে সাতক্ষীরায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ ছাড়া কালীগঞ্জে ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, কালীগঞ্জের নলতায় মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট ট্রেনিং সেন্টার (ম্যাটস) ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ বহুবিধ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আশাশুনিবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি মানিকখালী ব্রিজের কাজ চলছে। তিনি বলেন, আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জে তিনি যে উন্নয়ন করেছেন তার ভিত্তিতে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাজপথে নামার কারণে অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তা ছাড়া দু-দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি।
তবে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হওয়ার পর থেকে অত্যাচারিত কর্মীদের পাশে থেকে তাদের সংগঠিত করেছেন বলে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী আশাশুনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম। আর এলাকার মানুষের জন্য কিছু করতে চান বলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি ড. ইউসুফ আব্দুল্লাহ।
এদিকে জনসমর্থনে শক্ত অবস্থান রয়েছে বিএনপির একক প্রার্থী ডা. শহিদুল আলমের। দেশের বিশিষ্ট এই চিকিৎসক এলাকায় একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এ আসনে বিএনপির বিজয় সুনিশ্চিত বলে তিনি দাবি করেন।
এ আসনে প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে না পারলেও মাঠে রয়েছেন জামায়াতের হাফেজ রবিউল বাশার। গণসংযোগ করছেন গণফোরামের প্রার্থী যামিনী মন্ডল। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট স ম সালাউদ্দীন।