×

মুক্তচিন্তা

সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছে না!

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০১৮, ০৮:০৮ পিএম

সড়কপথকে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক সতর্কতা ও নজরদারি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোও যেহেতু চিহ্নিত, সেহেতু সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে কর্মস্থলে ফিরতে ফেরি পারাপারে ভোগান্তির খবর আসছে। কর্মস্থলে ফেরা নির্বিঘ্ন রাখতে ফেরি চলাচলে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে বাড়তি ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ। এই সময়ে বিভিন্ন পথে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। আগামী কয়েকদিন ট্রেন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ফিরতি মানুষের ভিড় থাকবে। এই সময়টায় বিশেষ নজরদারি দরকার। স্বস্তির দিক হলো, ঈদে ঘরে ফেরার সময় সড়কপথ, রেলপথ ও নদীপথে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে ঈদের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঈদুল আজহার ছুটির শেষ দিন শনিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে নাটোরে বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে লেগুনার ১৪ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। এ ছাড়া ঢাকায় দুজন, কুমিল্লায় দুজন, রাজশাহীতে দুজনসহ বিভিন্ন স্থানে মোট নিহত হয়েছেন ২৫ জন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন। ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন ৩১ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় এ নিহতের সংখ্যাই বলে দিচ্ছে দেশের সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামেনি।

বছরে দুটি ঈদ মুসলমানদের জীবনে সবচেয়ে বড় উৎসব। কর্মসংস্থানের প্রয়োজনে যে যেখানেই থাকুক না কেন, দুটি ঈদে অন্তত তারা নিজ নিজ পরিবার ও স্বজনদের কাছে ফিরে যায়। বরাবরের মতো এবার ঈদযাত্রায় টিকিটের ভোগান্তি থাকলেও পথে যানজট কম ছিল। তবে মহাসড়কে গাড়ি চলাচলে ধীরগতি ছিল। বলা যায়, এবার ঈদে ঘরে ফেরার ধকল কম হয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়তি মানুষের চাপ অনেকটাই পরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপরও ঈদের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনার খবর আসছে। সড়ক দুর্ঘটনা চালকের অসতর্কতার কারণেই প্রধানত ঘটে থাকে। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। নিকট অতীতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের রাজধানীসহ দেশব্যাপী আন্দোলন ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। এই আইনের খসড়া অনুমোদন মূলত চালকদের অনিয়ম ও এর শাস্তির বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই করা হয়েছে। গণপরিবহন ব্যবস্থার চূড়ান্ত নৈরাজ্যের ফলে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছিল এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল ওই আন্দোলনে। কিন্তু এরপরও সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন বেশ শক্তিশালী। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ পালনের রেওয়াজ চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। এ রেওয়াজ মানুষের সংবেদনশীলতার অংশ হয়েও দাঁড়িয়েছে। ফলে যারা কর্মস্থল ছেড়ে স্বজনদের মাঝে গিয়েছিলেন, তারা যাতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন এ ব্যাপারে সরকার তথা প্রশাসনকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা মনে করি, দেশের বিস্তৃত সড়কপথকে নিরাপদ করতে হলে সার্বিক সতর্কতা ও নজরদারি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণগুলোও যেহেতু চিহ্নিত, সেহেতু সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে কর্মস্থলে ফিরতে ফেরি পারাপারে ভোগান্তির খবর আসছে। কর্মস্থলে ফেরা নির্বিঘ্ন রাখতে ফেরি চলাচলে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে বাড়তি ভ‚মিকা পালন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App