×

বিনোদন

নায়করাজকে নিয়ে দুই নায়িকার কথা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০১৮, ০২:৩৩ পিএম

নায়করাজকে নিয়ে দুই নায়িকার কথা
কবরী একটা সময় তো আমাদের জুটি নিয়ে নানা ধরনের কথা রটেছিল। আমরা সেটা উপভোগ করতাম। বিশেষ করে লক্ষী ভাবি আমাদের নিয়ে বেশ মজা করতেন। বলতেন, ‘দেখো, রাজ্জাক বাইরে তোমাদের নায়ক, কিন্তু ঘরে শুধু আমার। বাইরের বিষয় নিয়ে আমি মাথা ঘামাতে চাই না।’ ভাবির কথায় আমরা হাসতাম। রাজ্জাকের সঙ্গে আমার প্রথম ছবি করার কথা ছিল ‘যোগাযোগ’। শুটিং শুরুর সময় থেকেই আমাদের জুটি আলোচনায় চলে আসে। আর ছবি মুক্তি পাওয়ার পর তো কথাই নেই! আমার বেশির ভাগ ছবির নায়কই কিন্তু রাজ্জাক। ‘ময়নামতি’র শুটিংয়ের সময়কার কিছু স্মৃতি মনে পড়ে। তখন দেশ উত্তাল। শুটিং লোকেশন সাভারের নয়ারহাট। টিম পৌঁছার আগেই আমি আর রাজ্জাক রওনা দিলাম কাকডাকা ভোরে। গাড়ি চলছে শাঁই শাঁই গতিতে। এর মধ্যে আমি কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আমি লোকেশনে। মেকআপম্যান কাদরি ভাই তড়িঘড়ি মেকআপ দিলেন। শুটিংয়ের জন্য তৈরি হয়ে গেলাম। রাজ্জাককে আমি সব সময়ই বন্ধু ভাবতাম। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘রাজলক্ষী’র প্রথম ছবি ‘রংবাজ’-এ বিনা পারিশ্রমিকে অভিনয় করেছিলাম। ‘ক খ গ ঘ ঙ’ ছবির শুটিং হয় চুয়াডাঙ্গা। ওই এলাকায় প্রথম সিনেমার শুটিং। হাজার হাজার মানুষের ভিড়। এদিকে আমরাও গেছি শুটিংয়ের পাশাপাশি পিকনিক করতে। মজা করতে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভিড়ে সেটা আর হয়ে উঠছে না। শেষ পর্যন্ত ইউনিটকে বলে দিলাম, মানুষজন এলেই বলবা শুটিং প্যাকআপ। এই কথা শুনে সবাই যখন চলে যেত আমরা নেমে পড়তাম শুটিংয়ে। কত সুন্দর ছিল আমাদের দিনগুলো। কত বর্ণিল ছিল আমাদের জীবন। ববিতা ‘স্বরলিপি’তে প্রথম দুজন জুটিবদ্ধ হই। জুটি হিসেবে আমরা যখন একের পর এক সফল ছবি উপহার দিচ্ছি, তখন আমাদের নিয়ে প্রেমের গুজব রটে। এই রটনাকে আরেকটু বাজিয়ে দিতে রাজ্জাক ভাই নিজের প্রযোজনা ও পরিচালনায় শুরু করলেন ‘অনন্ত প্রেম’, আমাকে ৫০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছিলেন! সে সময় এত টাকা কোনো নায়িকাই পেতেন না। ছবির শেষ দৃশ্যটি এত অন্তরঙ্গ ছিল যে প্রথমে করতে চাইনি। রাজ্জাক ভাই নাছোড়বান্দা। বললেন, আমাকে করতেই হবে! পত্রিকায় লেখালেখি শুরু হয়ে গেল। এমনকি চুমুর দৃশ্যসহ ছাপা হলো। আমি তো ভয়ে অস্থির। নিজেকে সান্ত¡না দিলাম এই ভেবে, সেন্সর কর্তৃপক্ষ হয়তো দৃশ্যটি রাখবে না। কিন্তু অবাক কান্ড, ছবি আনকাট ছাড়পত্র পেল! রাজ্জাক ভাইকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলাম, দৃশ্যটি কীভাবে সেন্সর পেল? হাসতে হাসতে বললেন, ‘শোনো, গল্পের প্রয়োজনে, দুটি মনের প্রয়োজনে দুটি মানুষ যদি এক হয় সেখানে অশ্লীলতার কিছু নেই। সেন্সর বোর্ড এটা বোঝে। তবে তোমার যেহেতু ভালো লাগছে না, অস্বস্তিতে আছ আমি দৃশ্যটি কেটে দেব।’ সত্যি তিনি কথা রেখেছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App