আজও ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় মাহাবুবের মা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০১৮, ১১:২২ এএম
আজও ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় মাহাবুবের মা হাসিনা বেগম। ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। সে সময় তাকে যারা নিজের জীবন বাজি রেখে গ্রেনেড প্রতিহত করে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন বাঁচিয়েছিলেন তাদেরই একজন কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের হারুন-অর-রশিদের সন্তান মাহাবুবুর রহমান মাসুদ।
সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়ার পর মাহাবুব নিযুক্ত হন শেখ হাসিনার ৪০ ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর একজন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাহাবুব তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন একনিষ্ঠভাবে। কিন্তু মাহাবুবের সেই বীরত্বগাথা আজ চাপা পড়ে যাচ্ছে। মাহাবুবের মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘ফটো তুলে কি হবে? এই মাস (আগস্ট) আসলিই সামবাদিকরা আইসে আরো জ্বালা
বাড়া দেয়। কেউ কি আমরা ছেলেকে আইনে দিতি পারবি। যা যাওয়ার তো আমারই গ্যাছে, আপনারা কি ফিইরি দিতি পারবেন।’ আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। এই সরকারের ১০ বছর চলে যাচ্ছে, কিন্তু আমার ছেলে হত্যার বিচার হলো না।
মাহাবুবের বাবা হারুন-অর-রশিদ বলেন, মেয়েটার চাকরি হয়েছে। মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে জামাইকে একটা গতি করে রেখে যেতে পারলে আমি মরেও শান্তি পেতাম। তিনি মাহাবুবের কবরস্থানের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের দাবি করেন।
মাহাবুবের স্ত্রী শামীমা আক্তার আছমা এবং তার দুই ছেলে আশিক ও রবিন ঢাকায় থাকেন। প্রথম প্রথম মাহাবুবের মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও এখন আর যোগাযোগ রাখেন না। আশিক বুয়েট থেকে পাস করেছেন, রবিন মেডিকেলে পড়াশোনা করেন।
মাহাবুবের পরিবারের হালচিত্র সম্পর্কে আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ সদর উদ্দিন খান বলেন, নেত্রী শেখ হাসিনা প্রথম থেকে মাহাবুবের বাবা মা, স্ত্রীসহ পরিবারকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তার ছোট ভাইকে উপজেলা পরিষদে এবং বোনকে জেলা প্রশাসক দপ্তরে চাকরি দেয়া হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও আমরা দলের পক্ষ থেকে তার পরিবারকে সাহায্য করে যাচ্ছি। এ ধারা চলমান থাকবে। তার নামে একটি রাস্তা করার প্রক্রিয়া চলছে। ২১ আগস্ট উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে ফুলবাড়ীতে মিলাদ মাহফিল ও কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. সেলিনা বানু বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিজের জীবন দিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করে যে অবদান রেখেছেন আমরা তা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি। আমি এখানে যোগদান করার পর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে পবামর্শ করে তার কবর বাঁধানোর কাজ শেষ করি। তিনি বলেন, মাহাবুবের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।