×

জাতীয়

বেচাকেনা শুরু দাম হাঁকছে বেশি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০১৮, ১২:০৮ পিএম

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ১ দিন। জমে উঠেছে রাজধানীর সবকটি পশুর হাট। কানায় কানায় পরিপূর্ণ এসব হাটে ক্রেতাদের ভিড় ক্রমাগত বাড়ছে। ইজারার নিয়ম অনুযায়ী গতকাল রবিবার থেকে কেনাবেচা শুরুর কথা থাকলেও এবার এক সপ্তাহ আগে থেকেই পশুর আনাগোনা শুরু হয়। বিক্রিও শুরু হয়েছে। গতকাল সবকটি হাট বেশ জমে উঠেছে। সারা দিনে প্রচুর গরু বিক্রি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন বাড়ির সামনে বা কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্পটে শামিয়ানা টাঙিয়ে কেনা গরু রাখতে দেখা গেছে অনেক এলাকায়। এখনো দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পশু বোঝাই ট্রাক আসতে দেখা গেছে। গরু আসার এ স্রোত চলবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত। বিভিন্ন হাটের ইজারাসূত্রে জানা গেছে, গতকাল পশু বেচাকেনা বেড়েছে। আজ সোমবার পুরোদমে জমে উঠবে। এবার দেশি গরুতে ভরপুর হাটগুলো। ভারতীয় গরুর সংখ্যা খুবই কম। ক্রেতাদেরও আগ্রহ দেশীয় গরুর প্রতি। তবে বিক্রেতারা গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। ‘দাম কিছুটা বাড়তি’ স্বীকার করলেন বিক্রেতারাও। জামালপুর থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ৮টি গরু নিয়ে কমলাপুর হাটে এসেছেন বসির মিয়া। গতকাল পর্যন্ত ৩টি গরু বিক্রি করেছেন তিনি। এর মধ্যে একটি ৬৫ হাজার ও অন্য দুটি গরু ৭০ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছেন। এ দামে বেজায় খুশি তিনি। বাকিগুলোও ৬০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে বিক্রি করতে পারবেন, এমনটিই আশা। এতে লাভ না লোকসান হয়েছে জিজ্ঞেস করলে এই বিক্রেতা জানান, গরুর পেছনে যা খরচ হয়েছে, সব বাদ দিয়েও তার মোটামুটি লাভ থাকবে। পছন্দের গরু কিনতে মুগদা থেকে শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি হাটে এসেছেন মীনার হোসেন। বাজার ঘুরে দরদাম করছেন তিনি। তার কাছে জানতে চাইলে অন্যান্য বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বাড়তি বলে জানান তিনি। হাট ইজারার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামিদুল্লাহ জানান, এ বছর শাহাজানপুর হাটে দেশি গরু সবেচেয়ে বেশি উঠেছে। হাটও আগে থেকেই জমে উঠেছে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। আগামী দুদিন আরো বেশি গরু বিক্রি হবে। তিনি আরো জানান, মানুষের দৃষ্টি দেশি গরুর প্রতি বেশি। বিদেশি গরু খুব একটা আসেনি। তাই ক্রেতারা বলছেন, এবার গরুর দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি। আর বিক্রেতারাও গরু বিক্রি করে অনেকটা খুশি। কারণ তাদের মধ্যে খুব একটা হতাশা দেখা যাচ্ছে না। ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড থেকে ১০টি গরু এনেছেন রাজা মিয়া। তিনি জানালেন, বুধবার রাতে ট্রাকে করে গরুগুলো নিয়ে এসেছি। সবগুলো মাঝারি সাইজের দেশি গরু। গতকাল পর্যন্ত ৪টি বিক্রি করেছি। যে দামে বিক্রি হয়েছে, তাতে আমি খুশি। বাকিগুলোর দরদাম চলছে। ক্রেতারা কোনোটার ৫০ হাজার, কোনোটার ৬০ হাজার টাকা দাম করছেন। তবে দরদাম শুনে যা মনে হচ্ছে, এবার দাম কমার সম্ভাবনা একবারেই নেই। আর এ দামে বিক্রি হলে অনেক শান্তি পাব। মনটাও ভালো থাকবে। সাদেক হোসেন খোকা মাঠের হাটটিতেও বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান। যিনি হাট ইজারার সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট। ভোরের কাগজকে তিনি জানান, এ পর্যন্ত যেসব গরু বিক্রি হয়েছে তাতে বিক্রেতারা খুশি হলেও ক্রেতারাও একেবারে হতাশ নন। তবে এবার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা, ইজারাদার সবার জন্যই ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে। শনিবার রাত ১১টায় মেরাদিয়া হাট থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে বড় দেশি গরু কিনেছেন খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা সজীব। গরুর দাম কেমন মনে হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এ বছর দাম কিছুটা বাড়তিই মনে হচ্ছে। এত আগে গরু কেনার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, শুরু থেকেই দাম বেশি হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। শেষ মুহূর্তে যখন পশু কেনাবেচা জমজমাট হয়ে উঠবে, তখন দাম আরো বেড়ে যেতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই এবার গরু কিনে নিয়ে এলাম। সরেজমিন দেখা গেছে বড়, মাঝারি ও ছোট সব সাইজের গরু বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। তবে মাঝারি সাইজের গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে। মাঝেমাঝে বড় ও ছোট গরুও কম বিক্রি হচ্ছে না। তবে সব আকারের গরুর দামই বাড়তি মনে করছেন ক্রেতারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App