×

জাতীয়

সিরাজগঞ্জে উঠেছে প্রচুর গরু-ছাগল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ০৩:১১ পিএম

সিরাজগঞ্জে উঠেছে প্রচুর গরু-ছাগল
ঈদুল আজহা উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের হাটগুলোতে প্রচুর গরু-ছাগল উঠেছে। গতবারের চেয়ে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক ও খামারিরাও খুশি। তবে ক্রেতারা বলছেন, দাম বেশি হওয়ায় তাদের বাজেটে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। খামারিরা বলছেন, খৈল-ভুষিসহ খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু লালন-পালনে ব্যয় বেশি হয়েছে। তাই দাম একটু বেশি। তবে খামারিদের আশঙ্কা, যদি ভারতীয় গরু অবৈধপথে দেশে প্রবেশ করে তবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ জন্য সরকারকে কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষক ও খামারিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, ঈদে লাভের আশায় কৃষকরা কঠোর পরিশ্রম করে গবাদিপশু পুষেছেন। এবার জেলায় সাড়ে তিন লক্ষাধিক গবাদিপশু কোরবানির উপযোগী করা হয়েছে। কৃষক ও খামারিরা ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে আরো বেশি গরু লালন-পালনে আগ্রহী হবেন। আর ভারতীয় গরু যাতে অবৈধপথে দেশে না আসতে পারে সে জন্য মন্ত্রণালয় থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সরেজমিন সলঙ্গা হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটে ছোট-বড় প্রচুর কোরবানির গরু উঠেছে। ঐতিহ্যবাহী সলঙ্গা হাটটি ব্রিটিশ আমল থেকে চালু। এ হাটে সাধারণত প্রতি সোমবার গরু-ছাগল-মহিষ ও ভেড়া বিক্রি হয়। জেলার স্বনামধন্য হাট হওয়ায় এ হাটে ক্রেতার সংখ্যা বরাবরই বেশি থাকে। প্রতি হাটে ৭-৮ হাজার গরু ওঠে। হাটে সর্বনি¤œ ৩৫ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার পর্যন্ত গরু কেনা-বেচা হচ্ছে। তবে গ্রাহকদের চাহিদা বেশি ৫০-৯০ হাজার টাকার গরুর। ছাগলের চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। হাটে পোশাক পরিহিত পুলিশসহ সাধা পোশাকে ও গোয়েন্দা পুলিশের মাধ্যমে কঠর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হাটে জালনোট শনাক্তকরণের মেশিনও বসানো হয়েছে। হাটটিতে ক্রেতারা কোনো দালালের মাধ্যমে নয়, সরাসরি কৃষক ও খামারিদের কাছ থেকে তাদের চাহিদা মোতাবেক কোরবানির পশু কিনছেন। তবে এখনো হাটে ভারতীয় গরু না ওঠায় বিক্রেতারা অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছেন। সলঙ্গা থানার মালতিনগর গ্রামের আমিনুল ইসলাম হুদা নামে এক ক্রেতা জানান, হাটে প্রচুর দেশীয় গরু উঠেছে। তবে গতবারের চেয়ে গরুপ্রতি ৯-১২ হাজার টাকা বেশি লাগছে। তিনি আরো বলেন, ভারতীয় গরু হাটে না থাকায় এ বছর একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। পাঁচলিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় গরু হাটে না থাকায় এ বছর আমাদের গরুপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। তবে হাটে দালালদের দৌরাত্ম্য না থাকায় প্রতি বছর আমরা এই হাট থেকেই গরু ক্রয় করে থাকি। তাড়াশ উপজেলার মাধবপুর গ্রামের ফজলার রহমান খান, সলঙ্গা থানার সাতকুর্শী গ্রামের জিল্লুর রহমানসহ কয়েকজন গরু বিক্রেতা জানান, দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি। ৩ মাস আগে যে দামে গরু বিক্রি হয়েছে এখন ১০ হাজার টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এবার আমাদের একটু লাভ বেশি হচ্ছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার চয়ড়া গ্রামের রানা মাসুদ, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া গ্রামের ইয়াসিন আলীসহ কয়েকজন ছাগল বিক্রেতা জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে বেপারিরা ছাগল ক্রয় করতে আসায় এ বছর ছাগলের দাম একটু বেশি। সলঙ্গা হাট ইজাদার ইকবাল হোসেন জানান, হাটের পক্ষ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ক্রেতাদের চাহিদার মধ্যে খামারে বা বাড়িতে পোষা গরুই প্রাধান্য পাচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। পশু আমদানির ওপর দাম নির্ভর করলেও এ বছর সব ধরনের পশুর দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশি হবে বলে মনে করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ ছাড়া এবারের কোরবানিতে দেশীয় গরুর কদর বেশি থাকবে বলে মনে করেন সবাই। তিনি আরো বলেন, এবারের ঈদে বিভিন্ন এলাকার খামার ও গৃহস্থদের বাড়ির গরু তাদের হাটে প্রাধান্য পাচ্ছে। অন্য বছরের মতো এবারে স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা খামারের সংখ্যাও কম নয়। তবে বিভিন্ন গ্রামের গৃহস্থদের বাড়িতে ৩-৪টি করে দেশি গরু পালন করেছেন অনেকে। আর ওই সব গরু এবারের কোরবানির ঈদে হবে ক্রেতাদের প্রধান টার্গেট। সলঙ্গা থানার ওসি জানান, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হাট ছিনতাইকারী , অজ্ঞান পার্টি ও দালালমুক্ত করার জন্য পোশাকধারী পুলিশসহ সাদা পোশাকে ও গোয়েন্দাদের মাধ্যমে থানা এলাকার প্রতিটি পশুর হাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জালনোট শনাক্তের জন্য মেশিন বসানো হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App