×

মুক্তচিন্তা

পেডাগোজি, ডিজিটাল নেটিভ এবং জাতীয় শোক দিবসের অভিজ্ঞতা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০১৮, ০৮:১০ পিএম

ভবিষ্যৎ শিক্ষকদের পেডাগোজিক্যাল কালচার হচ্ছে তার ব্যক্তিত্বের একটি জটিল সামাজিক বৈশিষ্ট্য, যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের পেডাগোজিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। একই সঙ্গে এটি আধ্যাত্মিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন স্তরের সূচক; পাশাপাশি এটি বিশেষজ্ঞ-শিক্ষকের জ্ঞান, দক্ষতা, উচ্চ পেশাদারিত্ব, পেশাগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলি সংযুক্ত করে যা পেডাগোজিক্যাল দায়িত্বাবলি সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন।

বর্তমান যুগ হচ্ছে ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল যুগে যারা জন্মগ্রহণ করেছে তাদের ‘ডিজিটাল নেটিভ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। অপরদিকে শিক্ষাদানের তত্ত্ব এবং অনুশীলন এবং কীভাবে এগুলো শিক্ষার্থীদের শিখনকে প্রভাবিত করে তাই হচ্ছে পেডাগোজি। শিখনের তত্ত্বসমূহ বিবেচনায় নিয়ে পেডাগোজি শিক্ষকদের ক্রিয়াকাণ্ড, বিচার-বিবেচনা এবং শিখন কৌশল, শিক্ষার্থীদের বোঝাপড়া এবং তাদের চাহিদা এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের পটভ‚মি এবং আগ্রহ প্রভৃতি অবগত করে থাকে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিথস্ক্রিয়া এবং শিক্ষকরা যে সামাজিক ও বৃদ্ধিবৃত্তিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী এ সবও পেডাগোজির অন্তর্ভুক্ত। বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোনো বিষয়ে মিথস্ক্রিয়ামূলক পাঠচক্র, বিতর্ক বা সেমিনারের আয়োজন করা পেডাগোজিক্যাল কালচারের অংশ। উচ্চশিক্ষার গুণগতমান সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এখন যে উচ্চশিক্ষার জন্য উন্নত গুণগত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চাইছে সেটি আসলে পেডাগোজিক্যাল কালচার।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার এই পেডাগোজিক্যাল অনুষঙ্গের প্রয়োজনে এবারে জাতীয় শোক দিবস ২০১৮ উপলক্ষে দেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগে সেমিনারের অয়োজন করা হয়। এ ধরনের সেমিনারগুলোতে সচরাচর একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু আলোচিত সেমিনারে একটি গবেষণা প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। পরে তার ওপর উপস্থিতির মধ্য থেকে কয়েকজন আলোচনায় অংশ নেন। উল্লেখ্য, গতবারের মতো এবারেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা কাজে বরাদ্দ দেয়ার লক্ষ্যে গবেষণা প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছিল। যতগুলো গবেষণা প্রস্তাব জমা পড়েছে সেগুলোর মধ্যে শুধু এই একটি গবেষণা প্রস্তাবই ৪৩তম জাতীয় শোক দিবসে আলোচনার বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এ সম্পর্কে আরো আলোচনার আগে এবারের জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা সঙ্গত হবে। আমরা কয়জন কলাবাগানের লাজ ফার্মার সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। সে সময়ে মানসপটে ভেসে উঠেছিল ১৯৭৬ সালের ১৫ আগস্টের স্মৃতি। মাত্র এক বছর পূর্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশে^র ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই কলঙ্কজনক ঘটনার পরের বছর (১৯৭৬) আমি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। জুলাই মাসে ভর্তি হওয়ার পরের মাসই জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের শোকাবহ আগস্ট। বলা বাহুল্য, তখনো জাতীয় ছাত্রলীগের অস্তিত্ব বহাল ছিল। ১৯৭৬ সালের ১৪ আগস্ট গভীর রাতে জাতীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা আমরা যে কক্ষের ফ্লোরে ঘুমাতাম জগন্নাথ হলের সাউথ হাউসের ২৬৪ নম্বর কক্ষে কড়া নেড়ে আমাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলেন। তারা পরের দিন ১৫ আগস্ট ভোরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য যাওয়ার কর্মসূচির কথা জানিয়েছিলেন। সে কথা অনুযায়ী খুব ভোরে হল থেকে আমরা রওনা দেই। এখন যেমন ফুল কিনতে পাওয়া যায় তখন এ রকম কোনো আয়োজন ঢাকা শহরে ছিল না। মনে আছে, আগের দিন বিকেলে গুলিস্তান থেকে আমি একটি কাপড়ের ব্যাগ কিনেছিলাম। কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় সেই ব্যাগটি নিয়ে বের হয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল হলের বাগান থেকে কিছু ফুল নেয়া। সে অনুযায়ী বেশকিছু ফুল তুলে ব্যাগ ভর্তি করলাম। তখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে এবং জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে ঢাকা-আরিচা বাস চলাচল করত। আমরা মাত্র ৪/৫ জন মেডিকেলের পাশ থেকে সেরকম একটি বাসে উঠলাম। বাসটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে থামার পর আমরা সেখানে নেমে পড়লাম। আমার কাঁধে ছিল ফুলের ব্যাগ। বাস থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে কোথা থেকে পুলিশের একটি জিপ কড়া ব্রেক চেপে সেখানে থেমেছিল। জিপ থেকে লাফিয়ে কয়েকজন সশস্ত্র পুলিশ আমাদের উদ্দেশে ধাওয়া করেছিল। সবাই দৌড়ে চলে যেতে পারলেও কাঁধের ব্যাগে পুলিশের হ্যাঁচকা টানে আমি মাটিতে পড়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গে আমার পিঠে, হাঁটুতে এবং হাতে পুলিশের লাঠির আঘাত পড়তে থাকে। ফুটপাতে ধুলোবালির মধ্যে শোয়া অবস্থায় রেখে পুলিশ আমার ফুলসহ ব্যাগটি নিয়ে চলে গিয়েছিল। আমি ওভাবেই শোয়া অবস্থায় ছিলাম। কিছুক্ষণ পর ফুটপাতের পানের দোকানদার এবং পাশের হোটেলের কয়েক বয় আমাকে টেনে তুলে রাস্তার ওপাশে নিয়ে গুলিস্তানের অভিমুখে চলমান একটি বাস থামিয়ে তাতে আমাকে উঠিয়ে দিয়েছিল। এসে দেখি যারা দৌড়ে এসেছিল, বেশ কিছুক্ষণ আগেই তারা হলে এসে পৌঁছেছে। জগন্নাথ হলে তখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীরা আত্মগোপন করে থাকতেন।

যা হোক, এবারে ৪৩তম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনার প্রসঙ্গে আসা যাক। গবেষণা প্রস্তাবটির শিরোনাম Liberation war of 1971 and Bangladesh in 21st Century : An Enquiry into the State of Nation and Generation এতে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নের গতি প্রভৃতি সম্পর্কে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্মের ধারণা বা মনোভাব অনুসন্ধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবটি উপস্থাপনের শুরুতেই নিউইয়র্কের সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্স কাউন্সিল কর্তৃক প্রকাশিত, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাম প্রেজেরস্কি এবং উইসকনসিন বিশ^বিদ্যালয়ের ফ্রাঙ্ক সলোমন কর্তৃক লিখিত ‘অন দ্য আর্ট অব রাইটিং প্রোপোজালস’ এর অংশ বিশেষ স্লাইডে দেখানো হয়। যেখানে একটি প্রশ্ন দিয়ে গবেষণা প্রস্তাব শুরুকে ‘এক্সিলেন্ট’ এবং সেন্ট্রাল পয়েন্ট বা হাইপোথিসিস বা ব্যাখ্যামূলক কোনো বিবরণ দিয়ে গবেষণা প্রস্তাব শুরুকে ‘গুড’ (উত্তম) বলা হয়েছে। সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রস্তাবটি একটি প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা হয়েছে, How the post-1971 generation view the liberation war of 1971 in 21st century Bangladesh?

উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে দুয়েকজন বাদে সেমিনারের প্রধান আলোচক একজন অধ্যাপকসহ প্রায় সবাই এবারে গবেষণা প্রকল্প প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। সেমিনারের আলোচক ‘অধ্যাপকের’ গবেষণা প্রস্তাবটি দেখেছেন এবং পড়েছেন এমন একজন সহকর্মী বলছেন, ‘আলোচক অধ্যাপক’ তার নিজের প্রণীত প্রস্তাবটি কোনো প্রশ্ন বা সেন্ট্রাল পয়েন্ট বা হাইপোথিসিস বা একটি ব্যাখ্যা কোনো কিছু দিয়েই শুরু করেননি। যেটি আলোচনার সময় তিনি বলেননি। অথচ এই তথ্যটি গোপন না করে তা সেমিনারে শেয়ার করলে কোনো ক্ষতি-বৃদ্ধি হতো না। বরঞ্চ তা আলোচনাকে আরো খোলামেলা প্রাণবন্ত করে তুলতে পারত। কিন্তু তা হয়নি। খোলামেলাভাবে নিজের একাডেমিক গবেষণার কাজ সম্পর্কিত বিষয় শেয়ার না করার এই মানসিকতা প্লাজিয়ারিজমকে উৎসাহিত করে। আমাদের দেশে প্রচলিত সংস্কৃতির একটি অংশ যে ঠাট বজায় রাখতে নিজের অনেক দুর্বলতা বা অন্য অনেক কিছুই গোপন করে বা কখনো কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না। এই মানসিকতা প্লাজিয়ারিজমের উৎস। শিক্ষার্থীদের উন্নত মানের গবেষণায় পারদর্শী করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই মন-মানসিকতাই বাংলাদেশর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

গবেষণা কৌশলে দক্ষতার ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার জন্য খোলামেলাভাবে নিজের দুর্বলতাগুলোকে দূর করার জন্য পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ামূলক কর্মকাণ্ড বাড়ানো প্রয়োজন। আর এভাবেই ‘পেডাগোজিক্যাল কালচারের’ প্রসঙ্গ এসে যায়। পেডাগোজিক্যাল কালচার হচ্ছে ব্যক্তিত্বের একটি সৎ বৈশিষ্ট্য এবং এর জন্য প্রয়োজন হয় পেশাদারি এবং পেডাগোজিক্যাল মূল্যবোধের নির্দিষ্ট মাত্রার ওস্তাদি। বৈজ্ঞানিকরা প্রমাণ করেছেন যে ভবিষ্যৎ শিক্ষকদের পেডাগোজিক্যাল কালচার হচ্ছে তার ব্যক্তিত্বের একটি জটিল সামাজিক বৈশিষ্ট্য, যা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের পেডাগোজিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। একই সঙ্গে, এটি আধ্যাত্মিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন স্তরের সূচক; পাশাপাশি এটি বিশেষজ্ঞ-শিক্ষকের জ্ঞান, দক্ষতা, উচ্চ পেশাদারিত্ব, পেশাগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলি সংযুক্ত করে যা পেডাগোজিক্যাল দায়িত্বাবলি সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজন।

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সময়গুলো বাদে সামরিক বেসামরিক শাসনের অবশিষ্ট সময়গুলো অর্থনৈতিক স্থবিরতার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অতিবাহিত করেছে। ২০১৭ সালেই প্রথমবারের মতো দেশটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। মোটা দাগে বলা যেতে পারে, ১৯৭১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যেসব তথ্য বা উপকরণ ব্যবহার করে বা যে পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষাদানের কাজটি সম্পন্ন করা হতো, তা এখন সম্পূর্ণ অচল। এই মাত্র সেদিন আমাদের এক জ্যেষ্ঠ সহকর্মী তার মাস্টার্স পড়াকালে একটি বইয়ের নাম বলে সেটি সংগ্রহের জন্য বলছিলেন। তার মাস্টার্সের কাল হচ্ছে ১৯৭৮ সাল। আর তিনি যে বিষয়ের বইয়ের কথা বলছিলেন সেটি হচ্ছে ‘সামাজিক পরিবর্তন’। অতএব, বলা বাহুল্য তিনি যে বইটির নাম বলছিলেন, জানার জন্য তা পড়া গেলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষাদানের উপকরণ হিসেবে তা একেবারেই অচল এবং সেকেলে। আর এ জন্যই সব বিষয়ের বা সব কোর্সের সাম্প্রতিকতম তথ্য সম্পর্কে শিক্ষকদের মধ্যে বা শিক্ষক ও শিক্ষকদের মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন অনস্বীকার্য। এটিই পেডাগোজিক্যাল কালচারের প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বিংশ শতাব্দীর উপযোগী করে এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের র জন্য জাতিকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার জন্য সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ব খুব দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিনই তা অধিকহারে প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমান উন্নত করার জন্য উন্নত শিক্ষা সংস্কৃতি গড়ে তোলা। সে হিসেবে, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচিত সেমিনারের এই আয়োজনটিও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

উপরে উল্লিখিত, সেমিনারের গবেষণা প্রস্তাবটির প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে কী মনোভাব পোষণ করে, সে সম্পর্কে অনুসন্ধান করা। ‘জেনারেশন হু কেয়ারস জেনারেশন’ শিরোনামে নঈম নিজাম যে প্রজন্মের কথা বলেছেন তারা মূলত একাত্তর-পরবর্তীই নয় শুধু তারা ১৯৭৫ পরবর্তী প্রজন্ম। তাদের মধ্যে এখন যারা স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারা আবার ‘ডিজিটাল নেটিভ’। এই ডিজিটাল নেটিভদের তিনি বলেছেন, ‘হু কেয়ারস জেনারেশন’। তার মতে, ‘এই প্রজন্মকে নিয়ে কেউ রাজনীতি না করাই ভালো। কারণ এই জেনারেশন স্লোগান দিয়েছে, ‘যদি তুমি ভয় পাও, তবে তুমি শেষ। যদি তুমি রুখে দাঁড়াও, তবে তুমি বাংলাদেশ।’ বলতে দ্বিধা নেই এই প্রজন্মকে নিয়ে কেউ রাজনীতি করতে পারছে বলে মনে হয় না। বরঞ্চ এই প্রজন্মই হচ্ছে রাজনীতির মূল চালিকা শক্তি। এই জেনারেশন বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বর্তমান বাংলাদেশ সম্পর্কে যে চিন্তা-ভাবনা করে তা নিঃসন্দেহে দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী : রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ এবং পরিচালক, সাউথ এশিয়ান স্টাডি সার্কেল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App