×

পুরনো খবর

শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ আ.লীগ-বিএনপির নেতারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ০৪:৫৮ পিএম

শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ আ.লীগ-বিএনপির নেতারা
শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ আ.লীগ-বিএনপির নেতারা
সিলেটের সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলা কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ নিয়ে সংসদীয় আসন সিলেট-৫ গঠিত। আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায় এ অঞ্চলেও বইছে নির্বাচনী হাওয়া। গ্রামগঞ্জে ও চায়ের স্টলে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা। তবে আসনটিতে এবার জোটের নামে শরিকদের ছাড় দিতে নারাজ প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। উভয় দলের নেতাদের মতে, বারবার শরিকদের আসনটি ছেড়ে দিয়ে বঞ্চিত হয়েছেন দল দুটির স্থানীয় নেতারা। এবার সেই বঞ্চনার অবসান চান তারা। বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত জোটসহ অধিকাংশ দল নির্বাচন বর্জন করলে এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্ব দ্বতায় নির্বাচিত হন বিয়ানীবাজার উপজেলার বাসিন্দা জাপার কেন্দ্রীয় নেতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলহাজ সেলিম উদ্দিন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন লাভ করেছিলেন, জকিগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। পরে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী লীগ ও জাপার মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা হয়। এ কারণে মাসুক উদ্দিন আহমদ তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলে জাপার কেন্দ্রীয় নেতা সেলিম উদ্দিন এ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পরে তিনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপের দায়িত্ব পান। এদিকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যেও আগামী নির্বাচন নিয়ে চলছে নানামুখী আলোচনা। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। তবে আলেম-ওলামা অধ্যুষিত এ এলাকায় ইসলামী দলগুলোর তেমন একটা তোড়জোড় পরিলক্ষিত হচ্ছে না। নির্বাচন নিয়ে তাদের তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই বললেই চলে। শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামী কৌশলে তাদের কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের বিভিন্নভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক গণসংযোগ ও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, বাংলাদেশ কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ আব্দুল মুমিন চৌধুরী ও সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট মোশতাক আহমদ। তবে মাঠপর্যায়ে জনপ্রিয় এ আসনে দুবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান হাফিজ আহমদ মজুমদার মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি বলে তার সমর্থকরা জানিয়েছেন। অবশ্য ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক সাংসদ হাফিজ আহমদ মজুমদার বলেন, নির্বাচনে নবীনদের স্থান করে দিতে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। এ ক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ কিংবা কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবিরের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ আসনের অন্তর্ভুক্ত এ দুই উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। সেই জয়কে পুঁজি করে আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। দলীয় নেতাদের মতে, বারবার শরিকদের আসনটি ছেড়ে দিয়ে বঞ্চিত হয়েছে বিএনপি। এবার সেই বঞ্চনার অবসান চান তারা। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর জন্য ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হওয়া জামায়াতও ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপি থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক সাংসদ আব্দুল কাহির চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের দুবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিন চৌধুরী বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে তৎপর রয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ইতোমধ্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সিলেট-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পছন্দের তালিকায় সাবেক ছাত্রনেতা মামুনুর রশিদ মামুন ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরীর নাম রেখেছেন। তবে বিএনপি ও জামায়াত জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলে এ আসন থেকে জোটের মনোনয়ন চাইবেন সাবেক সংসদ সদস্য জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দল খেলাফত মজলিসের অধ্যাপক এনাম আহমদ। জাতীয় পার্টি এ আসনে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী না হলেও বিগত নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির সেলিমউদ্দিন। এবারো তিনি প্রার্থী হবেন বলে নিশ্চিত করে ভোরের কাগজকে জানান, জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা আবারো তাকে মনেপ্রাণে চাইছেন। তবে সেলিমউদ্দিনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী উপজেলা বিয়ানীবাজারে হওয়ায় এ আসনে তার প্রার্থিতার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতারা মানতে নারাজ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App