×

জাতীয়

প্রতারক এজেন্সিগুলোর চক্রে পড়ে হজে যেতে পারলেন না ৬০৬ জন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০১৮, ০৬:২৫ পিএম

প্রতারক এজেন্সিগুলোর চক্রে পড়ে হজে যেতে পারলেন না ৬০৬ জন

ফাইল-ছবি

কোটা পুরন ছাড়াই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পবিত্র হজ ফ্লাইট শেষ হলো বুধবার। ৪১৯ হজযাত্রী নিয়ে শেষ ফ্লাইটটি জেদ্দার উদ্দেশে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায় বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে। তবে সৌদি এয়ারলাইন্সের শেষ হজ ফ্লাইট ঢাকা ছাড়বে শুক্রবার সকালে। এদিকে যাত্রী সংকটের কারণে বিমানের বুধবারের দু’টি হজ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তবে নিবন্ধনের পরও কয়েকটি হজ এজেন্সির অর্থ আত্মসাৎ, গাফলতি ও অবহেলার চক্রে পড়ে এ বছর হজে যেতে পারলেন না ৬০৬ জন হজেচ্ছু মানুষ। তাদের কয়েকজনের কান্নায় আশকোনার হজক্যাম্পের বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এদিকে ভুক্তভোগী একাধিক হজগমনেচ্ছুর সঙ্গে আলঅপকালে তারা জানান, প্রতারক ও দুর্বৃত্ত এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হজযাত্রীরা অব্যাহতভাবে লিখিত অভিযোগ করলেও ধর্মমন্ত্রণালয় কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। নাম মাত্র ’শো-কজ’ করে ডাকা হয় হজ এজেন্সিগুলোকে। তারপর মন্ত্রণালয়ের একটি সিন্ডিকেট তাদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা নিয়ে প্রতারক এজেন্সিগুলোর মালিকদের মাফ করে দিচ্ছে। ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

হজ অফিসে গেলে ভুক্তভোগীদের আহাজারি দেখলে যে কারো কান্না পাবে। একটি হজ এজেন্সির মালিক বলেন, হজ অফিস এখন দুর্বৃত্তচক্রের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। রিপ্লেসমেন্ট এর নামে প্রতিজন হাজির কাছ থেকে বাড়তি ৬০-৭০ হাজার টাকা করে নিয়েছে সিন্ডিকেটচক্র। তার একটি বড় অংশ গেছে হজ ক্যাম্প, ধর্মমন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মন্ত্রীর ঘনিষ্টদের পকেটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী এবার ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৯৮ বাংলাদেশিকে হজের সুযোগ দেওয়া হয়। নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮৩ জন ভিসা পেয়েছেন। হজ এজেন্সি মালিকের প্রতারণা, অবহেলা ও নানা জটিলতার কারণে নিবন্ধনকারী ৬০৬ হজযাত্রী এ বছর ভিসা পাননি। ফলে তারা হজে যেতে পারলেন না।

এদিকে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মতিউর রহমান বুধবার সকালে রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় যেসব হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে গাফলতি ও অবহেলার অভিযোগ উঠেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, এবারও হজযাত্রীর অভাবে হজ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। গত বছরের পুনরাবৃত্তি না করতে এবার এজেন্সিগুলোকে এ বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল, তারপরও কাজ হয়নি। এ বছরও হজযাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা, গাফলতির অভিযোগ রয়েছে। হজ এজেন্সিগুলোর কারণেই শেষ মুহূর্তে ৬০৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে যেতে পারেনি। যদিও তার মধ্যে অনেকেই অসুস্থ রয়েছে। কিন্তু হজ এজেন্সিগুলোর অবহেলা এর জন্য দায়ী। হজ শেষে জড়িত এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। বাকিরা ১৭ আগস্টের মধ্যে সৌদি পৌঁছাবেন। ধর্মমন্ত্রী বলেন, হজের কোটা পুরন করতে এজেন্সিগুলোর অনুরোধে এবার রিপ্লেসমেন্ট বাড়ানো হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৪২ জন রিপ্লেসমেন্ট আবেদনের বিপরীতে ১০ হাজার ৭৭৪ জনকে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান, হাব মহাসচিব শাহাদাত হেসেন তসলিম, হজ অফিসের পরিচালকসহ সরকারি কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, পবিত্র হজ আগামী ২০ আগস্ট। হজ ও কোরবানি শেষে ফিরতি ফ্লাইট আগামী ২৭ আগস্ট শুরু হয়ে চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, বিমানের হজ ফ্লাইট শেষ হলো। শেষদিন দু’টি ফ্লাইট জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে। যদিও চারটি ফ্লাইট ছাড়ার কথা ছিল, হজযাত্রী না পাওয়ায় দু’টি (বিজি-১০৯৩ এবং বিজি-৩০৯৩) বাতিল করা হয়েছে। যাত্রী সংকটে এ নিয়ে এবছর বিমানের ২০টি হজ ফ্লাইট বাতিল করা হলো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App