×

জাতীয়

নানা সমস্যায় জর্জরিত বকশীগঞ্জ পৌরসভা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০৩:০৯ পিএম

নানা সমস্যায় জর্জরিত বকশীগঞ্জ পৌরসভা
সংস্কারের অভাবে পৌর শহরের সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা ও যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ বকশীগঞ্জ পৌরবাসী। পৌরসভার কোনো এলাকাতেই ড্রেন নির্মাণ হয়নি। নেই কোনো ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান। জামালপুর ও শেরপুর থেকে বকশীগঞ্জে প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত জনগুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে থাকে। ফলে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র মিয়াপাড়া পোস্ট অফিস থেকে কসাইপট্টি হয়ে মানিক চেয়ারম্যানের বাড়ি হয়ে খয়েরউদ্দিন সিনিয়র মাদ্রাসা সংলগ্ন সিএনজি স্টেশন, উপজেলা মসজিদ থেকে প্রাণিসম্পদ অফিস, উপজেলা মসজিদ মোড় থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়ের বাড়ি, বাজার বড় মসজিদ হতে সওদাগরপাড়া ও মালিবাগ মোড় হয়ে বাসটার্মিনাল পর্যন্ত সড়কগুলোতে যানবাহন ও পথচারী চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে বাসস্ট্যান্ড থেকে মালিবাগ পর্যন্ত সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই সড়কের পাশেই রয়েছে সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি কিয়ামত উল্লাহ কলেজ। এ ছাড়া বকশীগঞ্জ হাসপাতালে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। ব্যস্ততম এই সড়কে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজিবপুরের মানুষ এই সড়ক দিয়েই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। তাই সড়ক ও জনপথ বিভাগের বাসটার্মিনাল থেকে মালিবাগ সড়কটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় পৌর শহরের সব সড়কেই পানি জমে থাকে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে সড়কগুলো। বর্ষা মৌসুমে জনসাধারণের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, পোস্ট অফিস থেকে কসাইপট্টি হয়ে জামালপুর সিএনজি স্টেশন পর্যন্ত সড়ক ও বড় মসজিদ হতে সওদাগরপাড়া পর্যন্ত এলজিইডির সড়কটি দেবে গিয়ে প্রায় ৮০ ভাগ অচল হয়ে পড়েছে। সড়ক ২টি সংস্কার করে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করা হলে জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমে যাবে বলে। এ ছাড়াও সড়ক ২টি বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হলে শহরের যানজট হ্রাস পাবে বলে এলাকাবাসী মতামত। উপজেলা মসজিদ মোড় হতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়ের বাড়ি পর্যন্ত এলজিইডির সড়কের পাশে বিপুলসংখ্যক আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। ঘনবসতি এলাকা হিসেবে পরিচিত সড়কটি সংস্কার ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলে যাতায়াতে বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। উপজেলা মসজিদ থেকে প্রাণিসম্পদ অফিস পর্যন্ত সড়কের দুপাশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি এলেই হাঁটু পানি জমে থাকে। ফলে এলজিইডির অফিস পাড়ার সড়ক হিসেবে পরিচিত সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে উলফাতুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিমা খাতুন বলেন, ভাঙা রাস্তায় পানি জমে থাকায় আমাদের স্কুলে আসতে অনেক কষ্ট হয়। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের সামনে পানি জমে নর্দমার সৃষ্টি হয়। তাই দ্রæত এ সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাই। এ ব্যাপারে বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, রাস্তা নয়, যেন নর্দমার খাল। সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় জরাজীর্ণ সড়কটি। ফলে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে এই সড়কে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা আবদুল লতিফ বলেন, প্রতিটি সড়কই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে নাগরিক সুবিধা পাচ্ছে না পৌরবাসী। এন এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুমুল হক সিদ্দিকী বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশাপাশি স্কুল মাঠে হাঁটু পানি জমে থাকে। এতে করে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার পাশাপাশি চলাফেরা পর্যন্ত করতে পারে না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসান সিদ্দিক জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড থেকে মালিবাগ সড়কটি কাজের টেন্ডার হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে। অন্য সড়কগুলোর সংস্কারের ব্যাপারে অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সংস্কার কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App