×

মুক্তচিন্তা

বাড়তি দাম, যাত্রী হয়রানি বন্ধ করুন

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০১৮, ০৮:০০ পিএম

ঈদ মৌসুমে পরিবহন কোম্পানিগুলো যাত্রীদের জন্য সেবার মান বাড়াবে, বাড়তি সেবা সংযোজন করবে, ভাড়ার ক্ষেত্রে নানা রকম ছাড় দেবে, তা না করে তারা এই সময়টাতে যাত্রীদের জিম্মি করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে। এই অন্যায়, অনৈতিক প্রবণতা থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। ঈদে যাত্রী পরিবহন সুষ্ঠু-সুশৃঙ্খল ও হয়রানি-ভোগান্তিমুক্ত করতে পরিবহন মালিকপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি প্রত্যাশা করছি আমরা।

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকার কাউন্টারগুলো থেকে দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের জন্য অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। আর ট্রেনের টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। ভোর থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশন এবং গাবতলীসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে টিকেট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন ও ভোগান্তির খবর গণমাধ্যমে আসছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টিকেট পেয়ে অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে কাউন্টারে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও কাক্সিক্ষত গন্তব্যের টিকেট না পাওয়া, টিকেটের বেশি দাম নেয়া- এমন চিত্রও দেখা যাচ্ছে। প্রতি বছর ঈদ- উৎসবে এমন ভোগান্তি হয়রানি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এর থেকে উত্তরণের পথ খোঁজা জরুরি।

প্রতিবারের মতো এবারো ১০ দিন আগে থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে কমলাপুর স্টেশনে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি। অনেকেই মাঝরাত থেকেই লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। অন্যদিকে বাসের আগাম টিকেট বিক্রির দিন নির্ধারিত ছিল গত রবিবার। কিন্তু দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকার কারণে বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশন টিকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। মঙ্গলবার থেকে বাসের অগ্রিম টিকেটের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টারগুলোতে যাত্রীরা ভিড় করছেন। আগামী ২২ আগস্ট সম্ভাব্য ঈদের দিন হিসাব করে আগের চার দিনের বাসের সব অগ্রিম টিকেট শেষ হয়ে গেছে বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্টরা। কোনো কোনো বাস কাউন্টারের সামনে এই চার দিনের টিকেট শেষ বলে নোটিশ বোর্ডও ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। টিকেট প্রত্যাশীদের অভিযোগ, টিকেট থাকলেও কাউন্টারের লোকজন তা আটকে রেখেছে। অনেকে টিকেটের দাম বাড়তি নেয়ার অভিযোগ করছেন। ১৯ ও ২০ আগস্ট বাড়ি ফেরা যাত্রীদের চাপ থাকবে বেশি। বেশিরভাগ ঘরমুখো যাত্রীকে যদি এই কয়েক দিনেই ঘরে ফিরতে হয়, তাহলে চাহিদা অনুযায়ী যানবাহনের সংকট হওয়া স্বাভাবিক। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পরিবহন কোম্পানিগুলোর যাত্রীসেবার ব্যাপারে আন্তরিকতা থাকলে হয়তো ঘরমুখো মানুষের চাহিদা পূরণ অসম্ভব নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো- এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টরা আগাম যেসব পরিকল্পনার কথা বলেন বাস্তবে তার তেমন ফল পাওয়া যায় না। আর পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এই সংকটকে কেন্দ্র করেই অসাধু বাণিজ্যে লিপ্ত হন। টিকেটের অতিরিক্ত দাম, কালোবাজারি, হয়রানি ইত্যাদি প্রতি বছরের অভিযোগ। এসবের বিরুদ্ধে নানা রকম ব্যবস্থা নেয়া হলেও পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, এটাই সত্যি। ব্যবস্থা গ্রহণ, বাস্তবায়ন- কোথাও নিশ্চয়ই ফাঁক থেকে যাচ্ছে। টিকেটের বাড়তি দাম নেয়াসহ টিকেট বিক্রি সংক্রান্ত সব অনিয়ম বন্ধ করতে কঠোর মনিটরিংয়ের বিকল্প নেই। ঈদ মৌসুমে পরিবহন কোম্পানিগুলো যাত্রীদের জন্য সেবার মান বাড়াবে, বাড়তি সেবা সংযোজন করবে, ভাড়ার ক্ষেত্রে নানা রকম ছাড় দেবে, তা না করে তারা এই সময়টাতে যাত্রীদের জিম্মি করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে। এই অন্যায়, অনৈতিক প্রবণতা থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। ঈদে যাত্রী পরিবহন সুষ্ঠু-সুশৃঙ্খল ও হয়রানি-ভোগান্তিমুক্ত করতে পরিবহন মালিকপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি প্রত্যাশা করছি আমরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App