×

মুক্তচিন্তা

গণপরিবহনে অরাজকতার অবসান জরুরি

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০১৮, ০৮:১৩ পিএম

সড়ক নিরাপদ রাখা তথা নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান পুলিশের বড় দায়িত্ব। কিন্তু পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনারোধে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ইদানীং বেড়েছে সামাজিক অপরাধ-সহিংসতা। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আমাদের চাওয়া, আগামীতে পুলিশের ইতিবাচক ভূমিকা ও পেশাগত কৃতিত্বই উজ্জ্বল হোক।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। শৃঙ্খলা ফেরাতে চলছে ট্রাফিক সপ্তাহ। এর মধ্যেও দেখা যাচ্ছে রাজধানীতে গণপরিহনে অরাজকতা। লেনবিধি মেনে গাড়ি চলছে না কোথাও। ডান দিকে মোড় নেয়া নিষেধ থাকলেও সে দিকেই মোড় নিচ্ছে একের পর এক প্রাইভেট কার, মেটারসাইকেল, রিকশা। অনেক শিশু বা কিশোর চালক লেগুনা বা হিউম্যান হলার নিয়ে রাজধানীর সড়কে নেমেছে। রংচটা, অনুপযুক্ত কিছু বাসও আগের মতোই বেপরোয়া গতিতে চলছে। যানজটও আগের দৃশ্যে ফিরে আসছে। এমন নৈরাজ্যের মধ্য দিয়ে চলছে পুরো রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রভাব কিংবা ট্রাফিক সপ্তাহের কার্যকারিতা কোনো কিছুই যেন ওদের দমাতে পারছে না। রাজধানীর কুর্মিটোলায় গত ২৯ জুলাই দুপুরে বেপরোয়াভাবে বাস চালিয়ে দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ কাড়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবি জোরালো হতে থাকে। ওই দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের পাশাপাশি রাজধানীজুড়ে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নামে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। কয়েক দিন ধরে তারা মন্ত্রীসহ প্রভাবশালী অনেকের গাড়ির উল্টোযাত্রা রুখে দেয়। পুলিশের গাড়ির লাইসেন্সও পরীক্ষা করে তারা। সড়কে আলাদা লেনে রিকশা, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন চালাতে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করে সুন্দর উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীদের এসব কাজের জন্য অভিনন্দন জানায় বিভিন্ন মহল। তবে শিক্ষার্থীদের ওই অভিযান বন্ধ হওয়ার পর আবার বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে সড়কে। অন্যদিকে গত ৫ আগস্ট থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু হয়েছে। এবারের ট্রাফিক সপ্তাহে মূল স্লোগান হলো ‘ট্রাফিক শৃঙ্খলা একটি জাতীয় সভ্যতার প্রতীক, সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, ট্রাফিক পুলিশকে সহায়তা করুন’। এই স্লোগান সামনে রেখে ট্রাফিক পুলিশ বিশেষ অভিযানে নামে। ট্রাফিক সপ্তাহ চললেও লাইসেন্সহীন চালক ও ফিটনেসহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযানেই ব্যস্ত ট্রাফিক পুলিশ। সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার দিকে নজর নেই তেমন। এমতাবস্থায় ট্রাফিক সপ্তাহ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এ ধরনের ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার প্রতিই মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি করে। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক।

বাংলাদেশে জননিরাপত্তায় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা ও দায়িত্ব বিরাট। বিশাল জনসংখ্যার দেশে জননিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর চ্যালেঞ্জ সহজেই অনুমেয়। বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং জঙ্গিবাদী হামলা-হুমকির মধ্য দিয়ে গেছে। বিশেষ করে জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলায় পুলিশ বাহিনীর কৃতিত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করতেই হয়। সড়ক নিরাপদ রাখা তথা নাগরিকদের প্রাত্যহিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান পুলিশের বড় দায়িত্ব। কিন্তু পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও দুর্ঘটনারোধে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। ইদানীং বেড়েছে সামাজিক অপরাধ-সহিংসতা। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে আমাদের চাওয়া, আগামীতে পুলিশের ইতিবাচক ভূমিকা ও পেশাগত কৃতিত্বই উজ্জ্বল হোক। পুলিশ বাহিনী আগামী দিনে আরো জনবান্ধব হবে ও জননিরাপত্তায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করতে পারি। বিশেষ করে সড়ক-মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App