×

পুরনো খবর

আ.লীগে একক, বিএনপিতে আধা ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০১৮, ০৫:১৩ পিএম

আ.লীগে একক, বিএনপিতে আধা ডজন মনোনয়ন প্রত্যাশী
নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার এ তিন উপজেলা নিয়ে নওগাঁ-১ আসন গঠিত। এ আসনে একসময় বিএনপির শক্ত অবস্থান থাকলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে এলাকায় বিএনপির নড়াচড়াও কমে গেছে। একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও নবম সংসদ নির্বাচনে তা হাতছাড়া হয়ে যায়। এ সুযোগে আওয়ামী লীগ শক্তি সঞ্চয় করে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়িয়ে এলাকায় নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে। গত নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ আসনটি আওয়ামী লীগের কব্জায়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনবারের নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য ডা. মো. ছালেক চৌধুরীকে পরাজিত করে বিপুুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সাধন চন্দ্র মজুমদার জয়লাভ করেন। বরেন্দ্র ভ‚মি এলাকা হিসেবে পরিচিত জেলার এ তিনটি উপজেলা। বছরে একটি মাত্র ফসল বৃষ্টিনির্ভর আমন। তবে খাদ্য সংকটের চেয়ে পানির সংকট ছিল প্রকট। এখন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে গভীর নলক‚পের মাধ্যমে জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন হচ্ছে। শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় এখন উপজেলাগুলোতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এসব উপজেলায় এখন নির্বাচনী আবহ বিরাজ করছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের ছবিসংবলিত পোস্টার-ব্যানার মোড়ে মোড়ে সাঁটিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের গণসংযোগের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের এক, জাতীয় পার্টির এক এবং বিএনপি থেকে হাফ ডজন প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বিএনপির একজন করে প্রার্থী মাঠে থাকবেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নওগাঁ-১ আসনের সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার এবারো নির্বাচন করবেন। বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেনÑ নিয়ামতপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. ছালেক চৌধুরী, জেলা শাখার সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, নিয়ামতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ খালেদ চৌধুরী পাহিন, নিয়ামতপুর থানা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল ইসলাম, সাপাহার উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুন নূর ও পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা লায়ন মাসুদ রানা এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পোরশা উপজেলার বাসিন্দা শাহ্ আহম্মদ মোজামে¥ল চৌধুরী। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন আলহাজ আকবর আলী কালু, ইসলামী আন্দোলনের পোরশা উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সভাপতি ওমর আলী এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী। এ আসনে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি ওই তিন উপজেলায় নিজের একটি ভাবমূর্তি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। যে কারণে সেখানে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় কোনো প্রার্থী নেই। সাধন চন্দ্র দাস বেশির ভাগ সময় উপজেলাগুলোতে মাঠ পর্যায়ে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করেন ও তাদের সময় দেন। আর তার কাছ থেকে কারো খালি হাতে ফিরতে হয় না বলে জানান এলাকাবাসী। সাংসদ সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। সে লক্ষ্যে এরই মধ্যে পোরশা উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। বাকি দুটো উপজেলায়ও শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। এ ছাড়া শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হয়েছে। যেটা উপজেলাবাসী জানেন। তিনি বলেন, নির্বাচনী মাঠের অবস্থান বেশ ভালো। আগামীতে মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন বলেও আশাবাদী। আর সে লক্ষ্যে এলাকায় উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এদিকে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নড়েচড়ে বসেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী নিজের অবস্থান জানান দিতে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলটিতে নতুন নতুন মুখের আগমন ঘটেছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীয় তরুণদের মধ্যে লায়ন মাসুদ রানা এবং শাহ্ আহম্মদ মোজাম্মেল চৌধুরীকে বিভিন্ন জনসভা ও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়। তারা বিএনপির নেতাকর্মীসহ তৃণমূল ও সাধারণ ভোটাদের নিয়মিত খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। ডাক্তার সালেক চৌধুরীর কারণে এ আসনে বিএনপির মধ্যে ভাঙন ও ধস নামে বলে দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ। তবে মনোনয়নের জন্য যে যার মতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ডা. ছালেক চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপিতে ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে। আগামীতে মনোনয়ন নিয়ে আমি আশাবাদী। আমি আমার মাঠ তৈরির জন্য জনসংযোগ করে চলেছি। আর স্বচ্ছ নির্বাচন হলে অবশ্যই বিজয়ী হব। পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা লায়ন মাসুদ রানা বলেন, তৃণমূল আমার দখলে। নওগাঁ-১ আসনের বর্তমান শক্তিশালী সাংসদের বিপক্ষে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে হলে জনগণের ভালোবাসার প্রার্থী দরকার। আর সে হিসেবে আমি নিজেকে যোগ্য একজন প্রার্থী মনে করছি। তরুণ ও যুবসমাজ আমাকে দেখতে চান। আশা করছি মনোনয়ন পেলে বেরিয়ে আসব। তবে দল যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে কাজ করতে হবে। এ আসনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছেন পোরশা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ আকবর আলী কালু। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে গণসংযোগ চালিয়ে আসছেন। তিনি বলেন, ভোটারদের অনেকটাই কাছে যেতে পেরেছি। আমি আশাবাদী এ আসন থেকে মনোনয়ন পেলে নির্বাচিত হব। তবে এ আসন এলাকায় মাঠ জরিপে জানা গেছে আওয়ামী লীগের জয়লাভ নিশ্চিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App