পীরগাছায় তিস্তার ভাঙনে বিলীন ৪ গ্রাম
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৮, ০৫:০১ পিএম
পীরগাছায় গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর ভাঙনে ৪টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া আটটি গ্রাম, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ এবং একটি ক্লিনিক হুমকির মুখে রয়েছে। সরেজমিন ওই ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পাড়ে অবস্থিত শিবদেব চর, আমিন পাড়া, গাবুড়াসহ ৪টি গ্রাম গত সাত দিনে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ সময় বাড়িঘর ও ফসলি জমিসহ বসতভিটা হারিয়ে প্রায় ২ হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। বর্তমানে নদীতে বিলীন হওয়া ওইসব পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এদিকে থেতরাই, জুয়ান, সদরা, পূর্ব ছাওলা ও চৌমুহনীসহ প্রায় আটটি গ্রাম হুমকির মুখে রয়েছে। সেই সঙ্গে গ্রামগুলোতে অবস্থিত একটি মাদ্রাসা, একটি ক্লিনিক, তিনটি হাটবাজার ও পাঁচটি মসজিদসহ প্রায় তিন হাজার পরিবারের মাঝে নদীভাঙনের আশঙ্কায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে নদী পাড়ের লোকজন রাত জেগে সম্পদ রক্ষার শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙনে কয়েকশ একর জমিতে লাগানো কলাবাগান বিলীন হয়ে গেছে। তিস্তা পাড়ের লোকজন আর্থিকভাবে চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিবছর ভাঙনের শিকার হচ্ছেন নদী পাড়ের লোকজন। তারা আরো জানান, ছাওলার ১০নং বোল্ডারের পাড় থেকে আরো ৩ কিলোমিটার বোল্ডার দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে নদী শাসন করলে এ গ্রামগুলো রক্ষা হতো। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিতভাবে ১নং ও ২নং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলেও নদী ভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষা পাচ্ছে না।
এলাকাবাসী জরুরি ভিত্তিতে বোল্ডারের মাথা হতে পূর্বশিবদেবচর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকা বোল্ডার ফেলে বাঁধ নির্মাণ করে নদী ভাঙনের হাত থেকে গ্রামগুলো রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান। তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার নুরু বক্স জানান, প্রতিবছর নদী ভাঙনের ফলে পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে ছোট হয়ে আসছে। এ অঞ্চলে গত ৫ বছরে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমিসহ প্রায় ৩ হাজার পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে প্রতি বছর তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার হয়। তারা ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার দাবি জানান।