×

জাতীয়

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সরকারের ৫ উদ্যোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৮, ০১:২২ পিএম

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, দ্রুত সময়ে তাদের দাবি বাস্তবায়ন, অভিভাবক, শিক্ষক ও সমাজের দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা চায় সরকার। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে ব্যর্থ করতে উসকানিদাতাদেরও চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আর এই আন্দোলনকে পুঁজি করে যারা রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে তাদের রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরাপদ সড়কসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সপ্তমদিন গতকাল শনিবার রাজধানীসহ দেশের বেশ কিছু জেলায় সড়কে নামে শিক্ষার্থীরা। ঢাকার প্রায় প্রতিটি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট কার, পিকাপ, ট্রাক ও বাইকচালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করতে দেখা গেছে তাদের। এদিকে সড়কে নিরাপত্তার অজুহাতে রাজধানীসহ দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রেখেছেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, নিরাপত্তার অভাবে চালকরা স্টিয়ারিংয়ে বসার সাহস পাচ্ছেন না। ফলে বন্ধ রয়েছে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ও ঢাকামুখী সব ধরনের যানবাহন। এই অবস্থায় সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গণপরিবহন সংকটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে সময় মতো পৌঁছাতে পারছে না কেউই। যানবাহনের অভাবে সিএনজি, রিকশা ভাড়াও বেড়ে গেছে দুই থেকে তিনগুন। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এ পর্যন্ত পাঁচ ধরনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সব বিষয় অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। তাদের ভ‚মিকা অবলোকন করছি। আন্দোলনের ভিতরে যারা অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের ছবি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সংগ্রহ করছে। তাদের গতিবিধি রাজনৈতিকভাবেও আমরা দেখছি। তিনি বলেন, আন্দোলনে রাজনৈতিক অপশক্তির মদদ যে আছে, সেটা আমরাও কাছ থেকে লক্ষ্য করছি। আমরা ধৈর্য ধরেছি। আমাদের বিশ্বাস কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে যাবে। দুএক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। শান্তির স্বার্থে সন্তানদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অভিভাবকদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতের স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাই। ঘরে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সবাই যদি সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করি, তাদের যদি ভালোভাবে বোঝাতে পারি, তাহলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ভবিষ্যতের কথা অনুধাবণ করে ঘরে ফিরে যাবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, এই আন্দোলনটি কোমলমতি শিশুদের। তাদের দাবিগুলো সরকারের পক্ষ থেকে মেনে নেয়া হয়েছে। এখন তাদের রাস্তায় থাকার কোনো কারণ নেই। তারপরও তাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় রেখে বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনের একটা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাসে ফেরানোর। তাদের ওপর কেউ যেনো কোনো প্রকার বলপ্রয়োগ না করে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি আমাদের রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে। তাদের সেই চেষ্টা আমরা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে মোকাবেলা করব। এদিকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফেরাতে আজ থেকে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। ট্রাফিক সপ্তাহে গার্ল গাইডস ও বয়েজ স্কাউটের সহায়তা নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক সপ্তাহে সহায়তা করতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে। তারা পুলিশের নৈতিক ভিতকে জাগিয়ে তুলেছে। একটি পক্ষ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নাশকতা চালাতে তৎপর উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটি পক্ষ চাইছে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যেন সরকার বেকায়দায় পড়ে। কিন্তু আমাদের পুলিশ বাহিনী তা সফল হতে দেবে না। কিছু লোক আন্দোলনকারীদের রাস্তায় খাবার সরবরাহ করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে, অন্যদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App